Header Ads

Header ADS

কেন আমি নাস্তিক হলাম??

Image result for প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছবি

অনেকেই কৌতুহল নিয়ে জানতে চান কেন আমি নাস্তিক হলাম?
আগে আমি কোন ধর্মে ছিলাম , কেন সেটা ছেড়ে দিলাম ?
তারমাঝে কি ভালো কিছু পাইনি ?
সেগুলি কি সবই মিথ্যা বা অযৌক্তিক ?
এরকম নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।
আজ তাই তাদের সেই কেন শব্দটার উত্তর দিতেই এই লেখা ।
এই কেন শব্দটা দুই অক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ হলেও উত্তরটা ব্যাপকতা ধারন করবে।আমি অত বিস্তারিত বলতে যাচ্ছিনা, শুধু মূল কয়েকটা কারনের বা আমার চিন্তার উপরে ফোকাস করবঃ
ছোটবেলা থেকেই আমি একটু নিরিবিলি, একাকী, শান্তশিষ্ট, কোলাহল মুক্ত থাকতাম, কারন ওটাই আমার কাছে ভালো লাগতো।
লেখাপড়ার প্রতি আমার ছোটবেলায় খুব আগ্রহ ছিল। সেটা আরবী এবং বাংলা দুটোর ক্ষেত্রেই।খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে ওযু করে ছিপারা(মক্তবের আরবি শিক্ষার বই(আমপারা) নিয়ে যেতাম মক্তবে।
সেখানে থেকে ফিরে নাকে মুখে কটা খেয়েই চলে যেতাম স্কুলে।
যখন থেকে নামাজ পড়া ধরেছিলাম তখন থেকেই,  নামাজের প্রতি ছিল একটা অন্যরকম টান।
এই অভ্যাসটা মোটামুটি প্রাইমারী লেভেল পর্যন্ত বেশ ভালোই ছিল।হাইস্কুলে গিয়ে পুরনো বন্ধুদের হারিয়ে নামাজের আগ্রহ টা ও হারিয়ে ফেলি।তখন শুধু স্কুল আর স্কুল নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটে।ক্লাস সেভেন বা এইটে উঠলে কুরান পড়তে শিখি। তখন কুরানের প্রতি বেশ আকর্ষণ তৈরি হলো।এই আগ্রহ টা এতই বেশি হলো যেঁ, স্কুল থেকে ফিরেই না খেয়ে কুরান নিয়ে বসে যেতাম পড়তে।মোটামুটি সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ১৩ পারা পড়ে শেষ করলাম। তারপরে আর পড়া হয়নি।কি কারনে যেন বন্ধ করেছিলাম।

কলেজে উঠার পরে নামাজ, কুরান কোনটাই আর মাথায় আসতোনা।শুধু ক্লাসের বই,ক্লাসের বইয়ের বাইরে কিছু গল্প, উপন্যাস পড়তে ভালো লাগতো।
যাহোক কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। কাজের কথায় আসি।
প্রাইমারীতে থাকতে নামাজ পড়তাম ঠিকই তবেঁ নামাজের কিছুই বুঝতামনা। শুধু মানুষের দেখা দেখেই পড়তাম।তবেঁ বুঝিনা বলতে কেন পড়ি এটা বুঝতাম না।আর বাকিসব জানা ছিল।কোথায় কি করতে হবে, কোথায় কোন দোয়া পড়তে হবে এসব জানতাম। কিন্তু হাইস্কুল এবং কলেজে গিয়ে নামাজ কন্টিনিউ না পড়লেও মাঝেমধ্যে পড়তাম। আর যখনি নামাজে দাঁড়াতাম তখনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয় গুলি মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকতো।
একদিন আমার মক্তবের হুজুর কে বললে তিনি বললেন এটা থেকে বাচতে বেশি বেশি শয়তান তাড়াবার দোয়া পড়তে।কিন্তু যতই শয়তান তাড়াবার দোয়া পড়িনা কেন কোন মতেই শয়তান যায়না।মাথার মধ্যে এসব ঘুরপাক খেতেই থাকে।
কেন নামাজ পড়ি, কি পড়ি, এসবের মানে কি?
শয়তান কি, কিভাবে এলো, কেন এলো?
মুসা নবির লাঠির বাড়িতে সাগর শুকিয়ে রাস্তা হওয়া, ঈসার বাবা ছাড়া জন্ম নেওয়া কিভাবে সম্ভব ?
 মুহাম্মদ ও তার সাহাবীদের সব সময় আল্লা বিপদ থেকে রক্ষা করা, যুদ্ধের ময়দানে আল্লায় ফেরেস্তা দিয়ে সাহায্য করা, কিন্তু বর্তমানে সারাবিশ্বে মুসলিম মরে শেষ হয়ে যাচ্ছে অথচ আল্লার বাচানোর খবর নাই, বিপদে আল্লা সহায়, বিপদে পড়লে আল্লা ই উদ্ধার করে, এসব কথায় বিশ্বাস করে অনেক বিপদে পড়ে আল্লাকে ডেকেছি, কিন্তু লাভ হয়নি। এমনকি কাউকেই দেখিনি বিপদে আল্লা পাশে এসেছে।
মুহাম্মদের নিজের মা বাবা কে  যে বেহেস্তে নিতে পারবেনা যে, সে কি করে বাকি সবাইকে বেহেস্তে নিবে?

আল্লা কে? কেন, কিভাবে সৃষ্টি হলো? তার বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই কেন?
ধর্মের কারনে কেন মুহাম্মদ সমস্ত ইহুদীদের ধ্বংস করেছিল?
কোন ইহিদীদের কেন বাচিয়ে রাখলোনা, গনিমতের মাল,কেন আল্লা মানুসের মাঝে এত ধর্মের ব্যবস্থা করে দিল?
যেখানে যিশু কিংবা বৌদ্ধ ধর্মের কারনে নিজের জীবন উতসর্গ করলেও কাউকে হত্যা করেনি যীশু ,বৌদ্ধ তার রাজ প্রাসাদ , পরিবার পরিজন ছেড়ে আরাধনা ,ধ্যান ধারনা করতে চলে গেল সেই রাজ্য ছেড়ে , অথচ মুহাম্মদে একজন সর্বকালের সর্বোচ্চ মানের নবী হয়ে কেন তাকে এভাবে ২৭টি যুদ্ধ করতে  হয়েছিল?
এতে তার মহাত্ম কোথায় ছিল?
আল্লায় যদি সবাইকে পরীক্ষা করতেই দুনিয়াতে পাঠাবে তাহলে কেন সে তার ধর্মের প্রচারের জন্য জোর করেই মানূষের মাঝে তার ধর্মের প্যাকেট ধরিয়ে দিতে গেছিল?
কেন  কেবলমাত্র তার ধর্ম ইসলাম না মানলেই তাকে হত্যা করতে হবে ?
আমি কেন আজও ইহুদিদেরকে ঘৃনা করবো কুরান পড়ে ?
আমি কেন এখনো নামাজে দাঁড়িয়ে আবু লাহাবকে গালমন্দ করবো ?আমার সাথে তার শত্রুতা কিসের?

আমার সাথে ইহুদিদের শত্রুতা কিসের ?আমি কেন তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারবোনা?
একজনের দোষে কেন আমাকে আজীবন ধরেই তাদের সাথে শত্রু মনোভাব নিয়ে চলতে হবে ?
 জান্নাত জাহান্নাম কি? কোথায় এগুলি?
হুরপরী, কেন নারীদের জান্নাতে স্বামীর সাথে এককভাবে থাকতে দেওয়া হবেনা,যেখানে আমাদের পৃথিবীতে একজন ছেলে একাধিক মেয়ের সাথে মেলামেশা কিংবা একাধিক বিয়ে করেলেই আমরা তাদেরকে লুচ্চা বলে ঘৃনা করি , সেখানে আল্লায় একজন পুরুষকে ৭২টা করে হুর দিবে আর নারীদেরকে দিবে কেবল সেই হুরদের সর্দারনীর দায়িত্ব।
কেন আল্লায় নারীদের প্রতি এত বিদ্বেষী মনোভাবের?
নারীর প্রতি তার এত ক্ষোভ কিসের ?
কেন সে তার কিতাবে পুরুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে নারীকে অবহেলা করেছে ?
একজন স্রস্টার কাছে তার সকল সৃষ্টিই সমান হবে , কিন্তু সে সেটা না করে নারীকে কেন পুরুষের করায়াত্বে বেধে দিয়েছে ?কেন তার কিতাবে নারীকে নিয়ে এত বাজে এবং ঘৃনা মুলক কথাবার্তা কিংবা আয়াতে ভরপুর ?

 এসব প্রশ্ন আরো অনেক আছে।
তারমধ্য বেশি প্রভাবিত করেছে যে প্রশ্নটি সেটা হলোঃ
আল্লা সাধারণত ভালো, সুন্দর, সৃষ্টি, আর শান্তির পক্ষে, আর শয়তান যদি খারাপ, ধ্বংসের পক্ষে হয় তাহলে সারা বিশ্বব্যাপী শয়তানে ধ্বংস করে চলেছে, বিপদে আল্লাকে মানুষে স্মরন করে তার নাম জপ করে অথচ তার কোন হায় হুতাশ নেই।
আবার আল্লা যদি ভালো, নৈতিকতা, শান্তি, আর সুন্দরের পক্ষে হবে তাহলে মুহাম্মদের মত একটি দুশ্চরিত্রের,নারী লোভী, মিথ্যাবাদী, ক্ষমতালোভী, যুদ্ধপাগল, পরের সম্পদ লুণ্ঠনকারীর মত লোককে কেন বেছে নিবে ইসলামের কর্ণধার হিসাবে?
আর মুহাম্মদ এসব কেনই বা করতে পারবে?
তাছাড়া যত অলীকতার গল্প শুনি তা শুধু সেই ১৪০০ বছরের আগের কাহিনী কেন?
আমাদের সামনে কিছু ঘটে না কেন? বিশেষ করে মিডিয়া ও বিজ্ঞান প্রসারিত হওয়ার পরে?
নবী মুহাম্মদ যদি সত্যই আল্লার প্রেরিত ব্যক্তি হবেন, তাহলে আবু লাহাবকে ধ্বংস কামনা করলে কেন সে ধ্বংস হলোনা?

তাছাড়া নবী নাকি খুব দয়ালু, এবং মানবতাবাদী, ন্যায়পরায়ণ ছিল, তাহলে আবু লাহবকে কেন ধ্বংসের মত বদদোয়া দিবে?
আর যদি মুহাম্মদ না দিয়ে, আল্লা আবু লাহাবের ধ্বংস কামনা করে থাকে তাহলে এই সুরা নাজিলের ১০ বছর পরে কেন আবু লাহাবের মৃত্যু হলো?
সমস্ত সৃষ্টি যদি মানব কল্যানে হতে থাকে তাহলে জাতিভেদে খাদ্য নিয়ে এত হিংসা বা বৈষম্য কেন?
আর নবি যদি এতগুলি বিবাহ করে থাকে শুধুমাত্র তাদের আশ্রয় দেওয়ার উদ্দেশ্যেই তাহলে তো বিবাহ ছাড়াও আশ্রয় দিতে পারতো, কিন্তু তা না করে কেন ১৩-১৪ টা বিয়ে করেছিল, যার মধ্যে ৬ বছরের একটি বাচ্চা মেয়েও ছিল?
আর যদি বিবাহের মাধ্যমে বিধবাদের আশ্রয় দিয়ে থাকবে, তাহলে কেন মুহাম্মদের মৃত্যুর পরে তার স্ত্রীর বিবাহের ব্যপারে নিশেধ ছিল?
কেন মুহাম্মদ বলেছিল কুকুর যেঁ বাড়ীতে থাকে সে বাড়িতে ফেরেস্তা থাকেনা, যদি কুকুরের কারনে বাড়ীতে ফেরেস্তা না থাকে তাহলে আল্লা কুকুর সৃষ্টি করলো কেন?
তাছাড়া ঈসা নবীর বাবা ছাড়া জন্ম নেওয়া,
নূহ নবির সময়ে ৪০ দিন পর্যন্ত বৃষ্টি ও তুফান থেকে বাচাতে নুহ নবীর ৭ দিনে ৪০ হাত নৌকা বানানো, যেখানে ছিলনা কোন বড় গাছ কাটার ব্যবস্থা, চিরাইয়ের ব্যবস্থা, লোহা, পেরেক, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি। তাছাড়া তখন কি এমন পাপে মানুষ নিমজ্জিত ছিল যেঁ সবাইকে ধ্বংস করে দিতে হবে? তারপর থেকে কি আর পৃথিবীতে তার চেয়ে পাপের কাজ হয়নি?
ইসলামের আগে কন্যা সন্তানকে জীবিত দাফন, যদি কন্যা সন্তানকে জীবিত দাফনই করা হতো তাহলে তো পৃথিবীতে মানব্জাতি থাকার কথা নয়। কারন পুরুসেরা বিয়ে করত কিভাবে, সংসার করতো কিভাবে, বংশ রক্ষা করতো কিভাবে?

এছাড়াও রয়েছে মুহাম্মদে নাকি তার হাতের আঙ্গুলের ইশারায় চাদকে দুই টুকরা করেছিল ,যার একও টুকরা মক্কার এক পাহাড়ের উপরে পড়েছিল ।
চাদটা কি কোন পুর্নিমার রুটি মনে হয় যে সেটা দুই ভাগ হয়ে কোন পাহাড়ের উপরে পড়লেও কিছুই হবেনা ?চাদের আয়তন সম্পর্কে কোন ধারনা আছে ?
তাছাড়া ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি ইহুদি খ্রিষ্টানেরা কুরান রিসার্চ করে সব কিছু আবিষ্কার করেছে।তাই প্রশ্ন আসে,নবী মুহাম্মদ, তার সাহাবী, খলিফাদের চেয়ে কুরান বুঝা লোক তো পৃথিবীতে অন্য কেউ হওয়ার কথা নয়, তাহলে তারা কেন কোন কিছু আবিষ্কার করতে পারলোনা? আর মুসলমানদের কাছে কুরান থাকা স্বত্তেয় কেন তারা বিজ্ঞানে পিছিয়ে?
কেন মুসলমান্দেরর সেই ইহুদি খ্রিস্টানদের আবিষ্কৃত জিনিশ ব্যবহার করতে হবে?
তাই বড় হয়ে অর্থসহ কুরান পড়া শুরু করলাম,কিন্তু সেখানে বিজ্ঞানময় তো দুরের কথা, যতসব রুপকথার বাসা সেখানে।
এরকম হাজারো প্রশ্ন আছে লিখে শেষ করা যাবেনা।
অনেক ভেবেছি এসব নিয়ে, অনেক হিসাব কিতাব করেছি, কিন্তু কোনভাবেই নয় ছয় চৌদ্দর বেশি হয়না। মানে পুরাই গোঁজামিলপূর্ণ। এটা কখনোই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ধর্ম হতে পারেনা।
এটাই হিসাবে এসেছে।
ধন্যবাদ সবাইকে।

No comments

Powered by Blogger.