Header Ads

Header ADS

নবী মুহাম্মদে কি লেখাপড়া জানতেননা ? অশিক্ষিত মুর্খ্য ছিলেন?

বী মুহাম্মদে কি লেখাপড়া জানতেননা ? অশিক্ষিত মুর্খ্য ছিলেন?

Image result for pic of prophet muhammad

সুদীর্ঘকাল হতেই আমরা শুনে এসেছি, নবী মুহম্মদ নিরক্ষর ছিলেন। আজকে আমরা ইতিহাসের বস্তুনিষ্ট আলোচনার ভিত্তিতে জানবো যে, বক্তব্যটি আসলেই সত্য কিনা।
.
আমরা জানি, নবীপত্নী খাদিজা ছিলেন মক্কার অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী। তিনি তার বিরাট ব্যবসা পরিচালনার জন্য একজন পরিচালক খুজছিলেন। যে কিনা ব্যবসার সমস্ত দায়িত্ব সুনিপুণভাবে পরিচালনা করবে। এইজন্য তিনি সমগ্র আরব অঞ্চলে প্রায় দশজনের মত দাসী প্রেরণ করেন। যাদের উপর দায়িত্ব ছিল, এমন একজন লোকের সন্ধান করা যিনি কিনা শিক্ষিত বিশ্বস্ত ও হিসাব নিকাশে পারদর্শী। খাদিজার দাসী মারফত জানতে পারলেন, মক্কায় একজন লোক আছেন। যার নাম মুহম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ। তিনি মক্কার কাবা গৃহের সাবেক রক্ষক সুপরিচিত আবদুল মোত্তালিবের দৌহিত্র এবং প্রয়াত স্বনামধন্য ব্যবসায়ী আবদুল্লাহর পুত্র। পারিবারিক পটভূমি ও লোকমুখে বিশ্বস্ততার বিবরণ শুনে তিনি মুহম্মদকে নিজের ব্যবসার ম্যানেজারের দায়িত্ব অর্পন করেন।
.
দায়িত্বগ্রহণের পর নবী মুহম্মদ সিরিয়া ও বসরা সহ বিভিন্ন শহরে যান। সেখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করেন। ব্যবাসায়িক আলাপ আলোচনা করেন। যার মধ্যে আবশ্যিকভাবেই হিসাব নিকাশ ও লাভ লসের প্রসঙ্গ থাকে। এমন বিরাট ব্যবসার পুরো হিসাব নিকাশ লেনদেন ও লাভ লসের ব্যাপারটা সামাল দেওয়া খুব সহজ ব্যাপার ছিল না। তিনি ম্যানেজার হিসেবে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছিলেন। দায়িত্বগ্রহণের সেই বছর খাদিজার সবচেয়ে বেশি ব্যবসায়িক আয় হয়েছিল। ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মাত্রই জানেন, ব্যবসার লাভ লসের বেশিরভাগ ক্রেডিটই ম্যানেজারের। এখানেই প্রশ্ন এসে যায়, একটি বিশাল আকারের ব্যবসার ম্যানেজারের সফল দায়িত্ব পালন করাটা একজন নিরক্ষর মানুষের পক্ষে কিভাবে সম্ভব? যেখানে তিনি বসরা ও সিরিয়ার শিক্ষিত বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে লেনদেন করেছেন। অথচ লোকমুখে প্রচলিত আছে যে, নবী মুহম্মদ নিরক্ষর ছিলেন। বাস্তবে তা নয়। একটি বিরাট ব্যবসার হিসাব নিকাশ ও সার্বিক দিক পরিচালনার জন্য একজন মানুষকে নিরক্ষর হলে হয় না। তাকে আবশ্যিকভাবেই অক্ষরজ্ঞান থাকতে হয়। স্বাভাবিকভাবেই তিনি হিসাব নিকাশের ব্যাপারে অনেক দক্ষ থাকবেন। তার আক্ষরিক জ্ঞান থাকবে অবশ্যই।
.
তারপরেও অনেকে বলেন, নবী মুহম্মদ নিরক্ষর ছিলেন, তাদের ভ্রান্তি দূর করার নিম্নোক্ত   হাদীসগুলোই যথেষ্ট বলে আমার মনে হয়ঃ

১। বুশরা হতে বর্ণিত, ছয় বছরের আয়িশা (রা:) এর বিয়ের কাবিন হযরত মুহম্মদ (সা:) নিজের হাতেই লিখেছিলেন। (সহিহ বুখারি, ভলিয়ম-৭, বুক-৬২, নম্বর-৮৮)।

২। ইয়াজেদ ইবনে আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত, এক লোকের হাতে লাল কাপড়ে আল্লাহর রাসূলের পক্ষ হতে কিছু বক্তব্য লিখা ছিল বানু জুহাইর ইবনে উকাইশের জন্য। তাতে লিখা ছিল,‘তোমরা যদি অন্য কোন উপাস্য বাদ দিয়ে আল্লাহকে একমাত্র উপাস্য এবং মুহম্মদ কে আল্লাহর রাসূল বলে মেনে নাও। যাকাত দাও এবং নামাজ কায়েম কর। তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কাছ থেকে নিরাপত্তা পাবে।’ এরপর লোকটিকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এই বার্তাটি কে লিখে দিয়েছে ?‘ লোকটি উত্তর দিলো,‘আল্লাহর রাসূল হযরত মুহম্মদ (সা:)।’ (সহিহ আবু দাউদ শরীফ, বুক- ১৯, নম্বর- ২৯৯৩)।

৩। আল বারাহ হতে বর্ণিত, নবী ওমরাহ পালন করতে গেলে মক্কাবাসীরা প্রথমে বাধা দেয়। তখন তাদের সাথে মুসলমানদের একটি চুক্তিসাক্ষর হয়। আলী ইবনে তালিব যখন তাতে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহম্মদ (সা:) লিখলেন তখন মক্কার দূত প্রতিবাদ করলো। সে বললো, তাকে যদি আমরা রাসূলই মানতাম তবে এত যুদ্ধ কেন হলো ? এর চেয়ে ‘আবদুল্লাহর পুত্র মুহম্মদ’ লিখেন। তখন আলী (রা:) লিখতে অস্বীকার করলে নবী মুহম্মদ (সা:) নিজের হাতে ‘আল্লাহর রাসূল হযরত মুহম্মদ (সা:)’ লিখাটা কাটলেন। এবং তার স্থলে যোগ করলেন ‘আবদুল্লাহর পুত্র মুহম্মদ’। (সহিহ বুখারি, ভলিউম- ৫, বুক- ৫৯, নম্বর- ৫৫৩।
.
এখন আপনিই বলুন, একজন অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন মানুষকে ‘নিরক্ষর’ বলাটা কি স্পষ্টতই মিথ্যাচার নয় ?

No comments

Powered by Blogger.