আমাদের দেশ গুলিতে ধর্ষন কেন হয় ? এর থেকে বেরনোর উপায় কি ?
আমাদের দেশ গুলিতে ধর্ষন কেন হয় ? এর থেকে বেরনোর উপায় কি ?
প্রতিটি প্রানীরই মূলত ( প্রধানত) মৌলিক চাহিদা দুটিঃ
১/ খাদ্য, এবং
২/ শারিরীক মিলন বা যৌনকর্ম করা।
হোক সেটা নারী কিংবা পুরুষ।
এটা প্রতিটি প্রানীরই একটা প্রাকৃতিক বা প্রকৃতিগত চাহিদা।এই দুটির কোনটাকেই জোর করে কেউ দমিয়ে রাখতে পারেনা। হোক তিনি আস্তিক কিংবা নাস্তিক, সেবাইত কিংবা পুরুত,ধনী কিংবা গরীব,কানা কিংবা খোড়া।সবারই ঠিক একইভাবে এই চাহিদাটা ভিতর থেকেই জেগে উঠে।
কেউই এটাকে চাপা দিয়ে রাখতে পারেনা।নিজের অজান্তেই ভেতর থেকেই ফুটে ওঠে।
কেউ হয়তো অত্যধিক কামনার ফলে মুখে বা অন্য কোন মাধ্যমে প্রকাশ ঘটিয়ে থাকলেও, অধিকাংশই এটাকে নিজের অজান্তেই জোর করে চাপিয়ে বা দমিয়ে রাখে,প্রকাশ করেনা। কিন্তু ভেতর থেকে উঠে আসা বা ভেতর থেকে জেগে উঠাকে আমরা কেউই নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। এমন কেউই বলতে পারবেনা যে সে তার যৌনকামনাকে ভেতর থেকে জন্ম নেওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
খাদ্যের চাহিদাটা পূরন করার সাথে সাথে যৌন চাহিদাটা পুরন করতে পারলেই বা সহজলভ্যভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেই কেবল একটি গোষ্ঠী বা জাতিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে বা বসে আনা সম্ভব।
আর যে দেশ বা যে দেশের জনপদ বা যে দেশের সরকার জীবের এই পালস দুটি বুঝতে পেরেছে তারাই আজ সভ্য জাতির কাতারে নাম লেখাতে পেরেছে।তারাই আজ সুখী এবং ধনী দেশের তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে।
সেদিক থেকে আমি মনে করি প্রানের এবং প্রানীর এই পালস দুটি কেবল পশ্চিমা দেশগুলিই বুঝতে পেরেছে।
যেমনটা দেখা যায়ঃ নেদারল্যান্ডস,ডেনমার্ক, সুইডেন, জাপান,কানাডা,সুইজারল্যান্ড,কিউবা,অস্ট্রেলিয়া সহ আরো কিছু কিছু দেশ আছে, তবে সব নয়।
অনেকটাই রয়েগেছে এখনো প্রায় আমাদের মতই।
যেমনঃআমেরিকা সহ আরো কিছু দেশে এরকমটা দেখা যায়। এর কারন মূলত তারা আসলে একটা মিশ্র প্রক্রিয়ায় আছে। পুরোপুরি তারা ওসব দেশের মত হতে পারেনি,আবার একেবারে আমাদের মতও রয়ে যায়নি।
এই দুইয়ের মাঝামাঝি একটা যায়গায় তারা আছে।
পশ্চিমা দেশগুলির নাম শুনতেই আমাদের দেশ সহ পুরো এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অধিক ধর্মান্ধ দেশ গুলিতেই ওসব পশ্চিমা দেশগুলির নাম শুনতেই একটা বিকৃত ভাব প্রকাশ করে তাদের কথায় কিংবা চেহারায়।
কেননা ওসব দেশে নাকি ফ্রি সেক্স চলে।তাই ওসব দেশ নোংরা।
আর ফ্রি সেক্স মানে যারতার সাথে সেক্স করা। যেখানে সেখানে সেক্স করা কুকুর বিড়ালের মত।
এটাই ফ্রি সেক্স বলতে আমাদের দেশের মানুষেরা বুঝে থাকে।এমনকি তারা এই যারতার সাথে সেক্স করা বলতে বুঝে থাকে যে মা ছেলে,বাবা মেয়েতেও তারা সেক্স করে থাকে।( কতটা মস্তিস্ক বিভ্রাট এবং জ্ঞানের লেভেল কোথায় নামলে এরকমটা ভাবতে পারে জানিনা)
এই ফ্রি সেক্স বা যার-তার সাথে সেক্স বলতে এবং যেখানে সেখানে সেক্স বলতে কি বুঝায় জানেন?
- ফ্রি সেক্স বলতে কেবল দুজন দুজনের স্বেচ্ছায় মিলিত হলেই তারা সেক্স করতে পারবে।
একজনের ইচ্ছায় নয়। মানে একজনের কেবল একজনকে ভালো লাগলেই তার সাথে সেক্স করবে বা করতে পারবে তেমনটা নয়।
আর ওদের সম্পর্কে যে আরেকটা ধারনা আছে যেখানে সেখানে সেক্স করতে পারে।
- এমনটা ধারনা কেন আমাদের ভেতরে সেটারও একটা কারন আছে।আর সেই কারনটা মূলত পোশাকের কারনে।আমরা ইয়া বড় বড় পোশাক পরি, আর ওরা কিসব ছোট ছোট পোশাক পরে।
তো যারা রাস্তাঘাটে এরকম ছোট ছোট পোশাক পরে চলতে পারে তারা তো যেখানে খুসি সেখানেই ল্যাংটা হতেই পারে, এইটা তো অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এমনটা যদি ভেবে থাকেন যে কেবলমাত্র ইয়া লম্বা লম্বা আপাদমস্তক পোশাক পরা মানেই সভ্য হওয়া,আর ছোটো ছোটো পোশাক পরা মানেই হচ্ছে নগ্নতা,উলঙ্গপনা।
তাহলে জনাব জানতে চাই মানুষের যৌনাঙ্গ বলতে শরীরের বিশেষ কোন কোন অঙ্গকে বুঝায় সেটা একটু অবগত করবেন।
কেননা আমাদের ধর্মীয় মৌলবাদের নানান ধর্মের নানা রকম আপাদমস্তক পোশাক পরার পরেও দেখা যায় মুখ বেরিয়ে থাকে, হাত বেরিয়ে থাকে,পা বেরিয়ে থাকে।তাহলে এগুলোও তো একপ্রকার উলঙ্গপনার মধ্যে চলে যায়।
এটা কেন হবে?
একদম পা থেকে মাথা অব্ধি ঢেকে রাখতে হবে।শরীরের একটা পশমও কারো নজরে পড়া যাবেনা,এমনকি কারো চেহারাও দেখা যাবেনা কেবলমাত্র চোখের মনি বা শুধুমাত্র চোখ দুটি ছাড়া।
যাহোক,এবার মূল আলোচনায় আবার একটু মনসংযোগ দেওয়া যাক।
ওরা যেখানে সেখানে রাস্তা ঘাটেও সবার সম্মুখে সেক্স করতে পারে।
- জনাব এমন ধারনার বশবর্তী হওয়া একদমই ভূল।কেননা যেখানে সাধারণত রাস্তায় একটা কলার খোষা কিংবা চকলেটের প্যাকেট ফেলা নিষেধ থাকে সেখানে এরকম কাজ রাস্তাঘাটে করবে সেটা কিভাবে ভেবে নিলেন?
ওরা যে শর্টগুলি পরে সেটা মূলত কেন পরে?
ওরা কি আমাদের থেকেও দরিদ্র?
না, তা ঠিক নয়।তাহলে?
মূলত বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের মধ্যে বিভিন্নরকমের, বিভিন্ন সাইজের পোশাকের বাহার দেখা যায়। এটা কেন?
এই প্রকারভেদের কারন কি জানেন?
কোথাও দেখা যায় আপাদমস্তক ইয়া মোটা মোটা পোশাক পরে থাকে, কোথাও কেবল যৌনাঙ্গের উপরে দুই টুকরো কাপড়,কোথাও বা বিশাল বিশাল আলখাল্লা, কোথাও বা হালকা এবং মাঝারি।
এর কারন কি?
এর প্রধান কারন হচ্ছে জলবায়ু বা আবহাওয়া এবং ভৌগোলিক অবস্থা।
যেখানে শীত প্রধান দেশ সেখানে কেউ ওসব ব্রা প্যান্টি নামক দুই টুকরা কাপড় পরে চলেনা,বরং আপাদমস্তক মোটা মোটা পোশাক পরেই চলে।
তাহলে যেখানে ছোটো ছোটো পোশাক পরে চলতে দেখি সেখানে কি?
ওরা কারা?
ওখানে মূলত গ্রীষ্মে আমাদের দেশের চেয়ে অধিক তাপমাত্রার কারনেই ওরা ওরকম শর্ট পরে চলে।আবার শীত এলে সেসব শর্ট গুলি দেখা যায়না।
হয়তো বলতে পারেন বা প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, তাহলে মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সৌদি এবং দুবাইয়ের চেয়ে অধিক তাপমাত্রা তো আর ওসব দেশে নয় , তাহলে সৌদি, দুবাইয়ে কিভাবে আপাদমস্তক পোশাক পরে চলা ফেরা করে?
- তাহলে জনাব আপনাকে বলছি আগে সৌদির ভৌগোলিক অবস্থানটাও একটু দেখুন এবং তাদের এরকম পোশাকের কারনটাও একটু খোজার চেস্টা করুন। তবেই বুঝতে পারবেন।
আর সেটা হচ্ছেঃ সৌদি কিংবা দুবাই অঞ্চল মূলত উত্তপ্ত মরু অঞ্চল।
যেখানে রাস্তাঘাটে বেরোলেই উত্তপ্ত বালু বাতাসে এসে শরীরে লাগে।ফলে সেটা থেকে বাচতেই মূলত তারা ঐ ধরনের ঢিলেঢালা এবং মাথায় পাগড়ী পরে থাকে।
আর নারীদেরকে রক্ষার জন্য ব্যবস্থা করেছিল বোরখার।এটাই ঐ জুব্বা এবং বোরখা ব্যবহারের মূল কন্সেপ্ট এবং যৌক্তিকতা।
যারা দুবাই কিংবা সৌদিতে থেকেছে দীর্ঘদিন তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলেও পেয়ে যাবেন।
ওখানকার বাতাসে কি পরিমান বালু উড়ে এবং সেই বালুগুলি এতটাই উত্তপ্ত থাকে যে শরীরে লাগলে ফোসকাও পড়ে যায়।
এছাড়া আমাদের এশিয়া কেন্দ্রিক দেশ গুলিতে আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ হওয়ায় জোব্বা এবং ব্রা প্যান্টি কিংবা শর্ট এই দুইয়ের মাঝামাঝি দেখা যায়।
যাহোক,যেহেতু
আমাদের দেশে এসব ছোটো ছোটো পোশাক চলেনা, ফ্রি সেক্স চলেনা তাই আমরা সভ্য।আর ওরা অসভ্য।
এটা যদি হয় সভ্য অসভ্যের মানদণ্ড তাহলে জনাব জানতে চাই সভ্যতা কাকে বলে?
সভ্য কাকে বলে?
একজন সভ্য ব্যক্তির গুনাবলী কি কি থাকা প্রয়োজন?
যৌনতাই কি কেবল সভ্য অসভ্যের মানদন্ড হিসাবে কাজ করে?
তাই যদি হয় তাহলে আমরা ই বা কিভাবে সভ্য হলাম?
আমরাই বা তাদের থেকে আলাদা কোথায়?
আমরা কি যৌনতাকে এড়িয়ে যেতে পেরেছি?
তাহলে?
আচ্ছা একবার ভাবুন তো কে বেশি সভ্য?
যে ছেলেটা তার সঙ্গীকে নিয়ে আমাদের লোক চক্ষুর আড়ালে গিয়ে দুজনের মনোবাসনাকে পূর্ন করে নিজেকে শান্ত করে নিয়েছে সে?
নাকি আমাদের সমাজ, ধর্মীয় নিয়ম কানুন, এবং রাস্ট্রীয় নিয়ম কানুনের ভয়ে বা চাপে তার যৌনকামনাকে প্রকাশ করতে না পেরে চেপে চেপে রেখে সুযোগ পেয়েই আমার আপনার মেয়েটিকে জোর করে ধর্ষন করা ছেলেটি?
আমরা উঠতে বসতে যে পশ্চিমা ফ্রি সেক্সের দেশ গুলিকে গালি দিচ্ছি থু থু দিচ্ছি, দিন শেষে কিন্তু তারা ই সভ্যের তালিকায় ভেসে আসছে।
কেননা আগেই বলছি একটা জীবের বা প্রানীর প্রধানত মৌলিক চাহিদা দুটি।
রাস্ট্রীয়ভাবে খাদ্যের জোগান দিয়ে যৌনতার বিষয়টি রাস্ট্রের হাতে জিম্মি কিংবা নিয়ন্ত্রণে রেখে দিলে সেই দেশ বা রাস্ট্র কখনোই সেখানকার মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেনা বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেনা।কেননা মানুষের ভেতর থেকে ফুটে উঠা চাহিদাকে জোর করে, আইন করে, ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যায়না।
এভাবে ভয় দেখিয়ে আইন করে দমিয়ে রাখলে সেটার ইফেক্ট বা ফল কখনোই ভালো হয়না।
আর তাই তো আমাদের দেশসহ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলিতে সেক্সের কথা শুনতেই কেমন একটা লজ্জা,শরম পাই আমরা।
প্রকাশ করতে ভয় পাই,অথচ ভেতর থেকে জন্ম নেওয়া বন্ধ করতে পারিনা কোন আইন,কিংবা ধর্মীয় কিংবা সামাজিক ভয়েও।
আর তাইতো আমাদের এসব দেশে অপরাধের মাত্রা এত বেশি। অপরাধীর সংখ্যা এত বেশি।যেখানে ডেনমার্ক নেদারল্যান্ডস অপরাধীর অভাবে জেলখানাগুলি বন্ধ করে দিতে হচ্ছে,সেখানে আমাদের দেশে নতুন নতুন জেলখানা তৈরি হচ্ছে।
এক্ষেত্রে আইনের কড়া শাষনব্যবস্থা কিছুটা দমিয়ে রাখতে পারলেও, সামাজিক এবং বিশেষ করে ধর্মীয় ভয়ভীতি কখনোই সেরকম কোন ফল দেখাতে পারেনি।
আর সেটার একটা বড় বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে আমাদের দেশের ধর্মীয় এজেন্টদের এজেন্সিগুলিতেই প্রতিদিনই ধর্ষন এবং বলাতকারের ঘটনাগুলি।
ধর্মীয় অযৌক্তিক বিষয়ের উপরে বিশ্বাসের বিরুদ্ধে লেখার কারনে প্রায়ই শুনতে হয় আমেরিকা জার্মানের ভিসা পাবার আসায় নাকি নাস্তিকেরা ইসলামের বিরুদ্ধে লিখে থাকে।কেননা নাস্তিকদের মধ্যে একজন নাকি ইসলামের বিরুদ্ধে লিখেই জার্মানে গেছে।আর তার সেই খোচা খেতে হচ্ছে মাটির টানে মাটি কামড়ে পড়ে থেকেও এখানে বসে।
আবার অনেকেই রীতিমতো এটাও শুনিয়ে থাকে যে,নাস্তিক হয় নাকি শুধুমাত্র আনলিমিটেড মেয়েদের সাথে সেক্স করার জন্য, যেটা ইসলামে সুযোগ নেই।
অথচ তারা জানেইনা যে,ওরকম কোন ইচ্ছে থাকলে তো ইসলাম ই বেস্ট সুযোগ দিয়ে রাখছিল।সেটা কেন পায়ে ঠেলে দিতে যাবো?
হয়তো এই লেখাটার কারনে অনেকেই অনেক কথা শোনাবে আমার মেয়েকে নিয়ে কিংবা আমার মা বোনকে নিয়ে।
তাতে কি?
নিন্দুকেরা তো পিছে নিন্দা করবেই।
করুকনা,
No comments