Header Ads

Header ADS

জাকির নায়েকের পাচটি মিথ্যাচার ও তার জবাব

জাকির নায়েকের পাচটি মিথ্যাচার ও তার জবাব


Image result for জাকির নায়েকের ভুল



                    জবাবঃ
                               ➖〰️➖

দাবীঃ১. বিজ্ঞান কিছুদিন আগে জেনেছে চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই।
[ সূরা ফুরক্বানের ৬১ নং আয়াতে কুরআনে এই কথা বলা হয়েছে প্রায় ১৪০০ বছর আগে ]

 জবাবঃ 
আসলেই কি তাই ? কুরানে কি অদৌ এরকম কিছু বলা আছে ? চলুন আগে দেখি কুরানে কি বলা আছেঃ
                                               Al-Furqan 25:61
تَبَارَكَ ٱلَّذِى جَعَلَ فِى ٱلسَّمَآءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَٰجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا
বরকতময় সে সত্তা যিনি আসমানে সৃষ্টি করেছেন বিশালকায় গ্রহসমূহ। আর তাতে প্রদীপ ও আলো বিকিরণকারী চাঁদ সৃষ্টি করেছেন।
দেখুন উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে প্রদীপ এবং আলো বিকিরনকারী চাঁদ সৃষ্টি করা হয়েছে ।অথচ উক্ত আয়াতের মাঝে যেসকল শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তার মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে সিরাজ বা যার অর্থ হচ্ছে প্রদীপ বা সূর্য , এবং চাদকে বলা হয়েছে ক্বামার এবং চাদকে উজ্জ্বল হিসাবে বলা হয়েছে যেটার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে মুনীর ।
এর বাইরে   বিকিরনকারী বুঝাতে যেসকল শব্দের ব্যবহার প্রয়োজন তার কোনটাই নেই ।১ম ছবিটিতে খেয়াল করলেই প্রতিটি শব্দের অর্থের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন।
অথচ পুরো বাক্যটিতে অনুবাদ করা হয়েছে বিকিরনকারী চাঁদ ।অথচ বিকিরনকারী বুঝাতে আরবিতে যে শব্দটি ( আল্মুহারীর) প্রয়োজন সেটির ব্যবহার কিন্তু উল্লেখ নেই কোথাও ।
যার অর্থ হচ্ছে অনুবাদকেরা আল্লার চেয়ে বেশি বুঝে নিজেদের মত করে অনুবাদ করেছে ।
অথচ উক্ত আয়াতটির অর্থ হবে এরকম যে,কল্যানময় সেই সত্তা যিনি  আকাসের মধ্যে স্থাপন  করেছেন প্রদীপ ( সুর্য)  এবং  উজ্জ্বল চাঁদ।



















উল্লেখ্য যে, মিঃজোকার নালায়েক সাহেব  এখানে মুনীর শব্দটিকে বাদ দিয়ে মুনির শব্দটির মূল ধাতুকে টেনে নিয়ে আসছেন ,যার দ্বারা তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে মুনির মানে হচ্ছে চাদের নিজস্ব কোন আলো নেই ।চাঁদ সুর্য্যের থেকে ধার করা আলো নিয়ে আলো দেয় বিকিরনের মাধ্যমে । অতচ আয়াতের মাঝে ব্যবহার করা হয়েছে উজ্জ্বল চাঁদ শব্দটি ।
যদিও মুনীরের মূল ধাতু হছে নুর ,যার অর্থ আলো ।
তো নুর মানে যদি ধার  করা আলো হয় তাহলে আল্লা এবং ফেরস্তারা কি ধার করা আলো নিয়ে তৈরি হয়েছে?কেননা ফেরেস্তারা তো আলোর তৈরি এবং তাদের ক্ষেত্রে নুর ব্যবহার করা হয়েছে ।এ


তো উজ্জ্বল কাকে বলে ?
যার ইংরেজি শব্দ হচ্ছে Bright .
আর Bright or Brighten  শব্দ কাকে বলে যার আলো আছে তাকেই Brighten  বলা হয় ।
 পিকচার থেকে দেখে নিন ।

তাছাড়া চাদের যে আলো আছে সেটা নিন্মোক্ত হাদীস থেকেও বুঝা যায়ঃ
চাঁদের নিজস্ব আলো আছে – Sahih Bukhari 4:54:422
https://bit.ly/39Kp8Db
তাহলে উপরে ত্যানাবাজি করে কি লাভ হলো?
অর্থাৎ প্রথমেই দেখেন তারা কতবড় ধাপ্পাবাজি করেছে এখানে ।মিথ্যারও একটা লিমিট থাকে।

দাবীঃ২.বিগ ব্যাং’ থিওরি আবিষ্কার হয় মাত্র চল্লিশ বছর আগে। সূরা আম্বিয়া ৩০ নং আয়াতে কুরআনে এই কথা বলা হয়েছে প্রায় ১৪০০ বছর আগে।

জবাবঃ  Al-Anbiya 21:30
أَوَلَمْ يَرَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ أَنَّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَٰهُمَاۖ وَجَعَلْنَا مِنَ ٱلْمَآءِ كُلَّ شَىْءٍ حَىٍّۖ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ
যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখে না যে, আসমানসমূহ ও যমীন ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল*, অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম, আর আমি সকল প্রাণবান জিনিসকে পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। তবুও কি তারা ঈমান আনবে না?

দেখুন এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা পয়েন্ট ।
মুমিনদের সাথে যতটা বেশি সমালোচনা এবং তর্কাতর্কি চলে যে আয়াত এবং দাবী গুলি নিয়ে সেটার মধ্যে এই সুরা আম্বিয়ার ৩০ নাম্বার আয়াতটা সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত ।
কেননা বিজ্ঞানীদের আবিস্কারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন একটী আবিস্কার হচ্ছে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে ।
আর মুমিনেরা দাবী করেছেন যে বিজ্ঞানীরা দুদিন আগে যেটা আবিস্কার করেছে সেটা নাকি ১৪০০ বছর আগেই বলা হয়েছে ।আবার তারাই দেখা যায় যে, বিজ্ঞানীদের সাথে এসব আবিস্কারের সাথে একমত হতে পারেনা ।
বিজ্ঞানীদের এই মহাবিশ্বের আবিস্কারের সাথে কুরানের সাদৃশ্য সর্বপ্রথম দেখিয়েছিলেন নাপিত সম ডাক্তার মিঃজোকার নালায়েক।
আর সেই থেকেই মূলত ইসলাম নিয়ে মানুষের আলোচনা সমালোচনা , ক্রস চেকিং পর্যবেক্ষন শুরু হয় ,যেটা তার আগে থেকে ছিলনা বললেই চলে। কেননা সে যে পরিমানে কুরানের মাঝে বৈজ্ঞানিক আয়াত খুজে পেয়েছে সেই তুলনায় মাদ্রাসায় কুরান চষা লোকেদের মাঝে বিজ্ঞানের ছিটেফোটাও পাওয়া যায়না ।যাহোক, আলোচনা আর না বাড়িয়ে জোকার সাহেবের এই মিথ্যাচারের বিষয়টি তুলে ধরা যাকঃ
দেখুন উক্ত আয়াতটিতে বলা হয়েছে* আসমানসমুহ এবং যমীন ওতপ্রোতভাবে মিশেছিল ,আর আমি উভয়কে পৃথক করলাম ।বাক্যটি খুব ভালোকরেই খেয়াল করে দেখুন এখানে বলা হয়েছে আসমানসমুহ এবং যমীন একসাথে ওতপ্রোতভাবে মিশেছিল ।
আর এটাকে মুমিন তথা তাদের গুরু নাপিত জোকারা নালায়েক বিগব্যাঙ্গের সাথে তুলনা করে ।
কিভাবে ?
কারন বিজ্ঞানীরা বলছে যে, একসময় এই মহাবিশ্ব একসাথে ওতপ্রোতভাবে একটা বিন্দুতে ছিল যেটা বিস্ফোরনের মাধ্যমে আলাদা হয়ে বিভিন্ন গ্রহ নক্ষত্র উপগ্রহ ছায়াপথ,গ্যালাক্সী,ব্লাকহোল, চাঁদ সুর্য ইত্যাদি ইত্যাদি সৃষ্টি হয়।
তো আমরা যদি কুরানের আয়াতটিকে বিজ্ঞানের বিগ ব্যাঙ্গের সাথে মিল আছে বলে ধরেও নেই ,তাহলে পরের স্টেপে কি দাঁড়ায় সেটা একটু দেখা যাকঃ
যেমন মহাবিশ্ব তথা এই পৃথিবী ,আকাসমুহ বা গ্রহ নক্ষত্র ,চাঁদ সূর্য ব্লাকহোল ইত্যাদি ইত্যাদি সৃষ্টির ব্যাপারে কুরান এবং বিজ্ঞানে কি বলেছে চলুন একটু দেখা নেওয়া যাকঃ

Al-A'raf 7:54
إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِ يُغْشِى ٱلَّيْلَ ٱلنَّهَارَ يَطْلُبُهُۥ حَثِيثًا وَٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ وَٱلنُّجُومَ مُسَخَّرَٰتٍۭ بِأَمْرِهِۦٓۗ أَلَا لَهُ ٱلْخَلْقُ وَٱلْأَمْرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ
নিশ্চয় তোমাদের রব আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশে উঠেছেন। তিনি রাতকে দ্বারা দিনকে ঢেকে দেন। প্রত্যেকটি একে অপরকে দ্রুত অনুসরণ করে। আর (সৃষ্টি করেছেন) সূর্য, চাঁদ ও তারকারাজী, যা তাঁর নির্দেশে নিয়োজিত। জেনে রাখ, সৃষ্টি ও নির্দেশ তাঁরই। আল্লাহ মহান, যিনি সকল সৃষ্টির রব।
Fussilat 41:9
قُلْ أَئِنَّكُمْ لَتَكْفُرُونَ بِٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْأَرْضَ فِى يَوْمَيْنِ وَتَجْعَلُونَ لَهُۥٓ أَندَادًاۚ ذَٰلِكَ رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ
বল, ‘তোমরা কি তাঁকে অস্বীকার করবে যিনি দু’দিনে যমীন সৃষ্টি করেছেন? আর তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ বানাতে চাচ্ছ? তিনিই সৃষ্টিকুলের রব’।
Fussilat 41:10
وَجَعَلَ فِيهَا رَوَٰسِىَ مِن فَوْقِهَا وَبَٰرَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَآ أَقْوَٰتَهَا فِىٓ أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَآءً لِّلسَّآئِلِينَ
আর তার উপরিভাগে তিনি দৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছেন এবং তাতে বরকত দিয়েছেন, আর তাতে চারদিনে প্রার্থীদের জন্য সমভাবে খাদ্য নিরূপণ করে দিয়েছেন।
Fussilat 41:11
ثُمَّ ٱسْتَوَىٰٓ إِلَى ٱلسَّمَآءِ وَهِىَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ ٱئْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَآ أَتَيْنَا طَآئِعِينَ
তারপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করেন। তা ছিল ধোঁয়া। তারপর তিনি আসমান ও যমীনকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় আস’। তারা উভয়ে বলল, ‘আমরা অনুগত হয়ে আসলাম’।
Fussilat 41:12
فَقَضَىٰهُنَّ سَبْعَ سَمَٰوَاتٍ فِى يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِى كُلِّ سَمَآءٍ أَمْرَهَاۚ وَزَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَٰبِيحَ وَحِفْظًاۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْعَلِيمِ
তারপর তিনি দু’দিনে আসমানসমূহকে সাত আসমানে পরিণত করলেন। আর প্রত্যেক আসমানে তার কার্যাবলী ওহীর মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন। আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালার দ্বারা সুসজ্জিত করেছি আর সুরক্ষিত করেছি। এ হল মহা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নির্ধারণ।
দেখুন বলা হয়েছে আসমানসমুহ এবং যমীন ছয় দিনে স্ররষ্টি করা হয়েছে ।
এবং সুরা হামীমের অথবা ফুসসিলাতের  ৯-১২ নং আয়াতে বলা হয়েছে কোন কোন দিনে তিনি কোন সাইডে কি কি সৃষ্টি করেছেন।

এখানে ব্যবহৃত দিনকে নিয়েও মুমিনদের ত্যানাবাজির কোন কমতি রাখেনা ।তারা এখানে ছয় দিন বলতে সাধারন একটি দিনকে বুঝায় না বা তারা এখানে ছয় দিন বলতে তারা দাবী করে থাকে যে এখানে আল্লার একটি দিন সমান আমাদের একদিনের সমান নয় ।
আল্লার একদিন মানে হাজার দিনের , হাজার বছরের সমান বা আল্লার এখানে ব্যবহৃত একদিনের সমান এক হাজার দিনের সমানও তারা দাবী করে থাকে ।ইদানীং আবার অনেকে দেখি দিন থেকে তারা পর্যায়ে নিয়ে চলে গেছে বিজ্ঞানের সাথে তাল মেলানোর জন্য ।
অথচ এখানে ব্যবহৃত ইয়াওমাইন দ্বারা ছয় দিনের মধ্যেই বুঝানো হয়েছে , কেননা এখানে ব্যবহৃত ইয়াওমাইন শব্দের আগে দুটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে ফি সিত্তাহি অর্থাৎ ছয় দিনের  মধ্যেই ।



যদিও এখানেও আল্লায় তার কথার বৈপিরত্যের প্রমান দিচ্ছেন ।কেননা তিনি সুরা ইয়াসীনের ৮২ নাম্বার আয়াতে বলেছেন তিনি কোন বিষয়ে কিছু করার ইচ্ছা করেন সেখানে কেবল হও বললেই হয়ে যায় ।
তো তিনি যদি কোন বিষয়ে করার ইচ্ছা করে হও বললেই হয়ে যায় সেখানে আবার তার এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করতে ছয় দিনের প্রয়োজন হলো কেন ?
যাহোক, এখানে উপরোক্ত আয়াতে ছয় দিনের মধ্যে শব্দটাকে যেসকল মুমিনেরা ছয়টি পর্যায় কিংবা একদিন মানে সাধারন কোন দিন নয় বলে দাবী করেন তাদের দাবী ধুলিষ্মাত হয়ে যায় নিচের হাদীসটির মাধ্যমে।
কেননা এই হাদীসটিতে পরিস্কারভাবেই বলে দেওয়া হয়েছে মহাবিশ্বের সেই ছয়দিনের কোন দিনে কি কি সৃষ্টি করা হয়েছেঃ
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৫২। কিয়ামাত, জান্নাত ও জান্নামের বর্ণনা (كتاب صفة القيامة والجنة والنار)
হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৭
৬৯৪৭-(২৭/২৭৮৯) সুরায়জ ইবনু ইউনুস ও হারূন ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহ তা’আলা শনিবার দিন মাটি সৃষ্টি করেন এবং এতে পর্বত সৃষ্টি করেন রবিবার দিন। সোমবার দিন তিনি বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার দিন তিনি বিপদাপদ সৃষ্টি করেন। তিনি নূর সৃষ্টি করেন বুধবার দিন। তিনি বৃহস্পতিবার দিন পৃথিবীতে পশু-পাখি ছড়িয়ে দেন এবং জুমুআর দিন আসরের পর জুমুআর দিনের শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ আসর থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ মাখলুক আদাম (আঃ) কে সৃষ্টি করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৭৯৭,ইসলামিক সেন্টার ৬৮৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

অর্থাত উপরোক্ত হাদিসের মাধ্যমে মুমিনদের দিন নিয়ে দেনাপাওনার দিন শেষ হয়ে গেল।আল্লায় যে ছয় দিনের মধ্যেই এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন সেটার বিষয় পরিস্কার।
তো এবার আসা যাক, মূল পর্বেঃ
দেখুন এখানে যেহেতু কুরানকে বিজ্ঞানের সাথে তুলনা করা হয়েছে তাহলে আমরা এবার দেখবো বিজ্ঞানে মহাবিশ্বের সৃষ্টির বয়সের ব্যাপারে কি বলে ?
কতবছর আগে সৃষ্টি হয়েছিল এই মহাবিশ্ব এবং এই চন্দ্র সুর্য এবং আমাদের পৃথবী এবং এগুলর বয়স কত?
কত বছর আগে এগুলি সৃষ্টি হয়েছে এবং সেগুলির বয়স কি একই সমান কিনা ?
কিংবা সমস্ত গ্রহ নক্ষত্র তারকা পুঞ্জ,ব্লাকহোল,কি একই সময়ে সৃষ্টি হয়েছে কিনা?
কেননা কুরান হাদীসের মাধ্যমে আমরা দেখতে পেলাম যে আল্লায় সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনের মধ্যে ,অর্থাৎ একটা স্রষ্টি থেকে আরেকটা সৃষ্টির মধ্যে মাত্র দুই একদিন বা তিন চারদিনের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় ।অথচ বিজ্ঞান বলছেঃ
মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে ।
https://bit.ly/2V0cfkh,  https://bit.ly/2SBLKjt )
Image result for মহাবিশ্বের ছবিImage result for মহাবিশ্বের ছবি

এদিকে পৃথিবীর বয়স হচ্ছে ৪.৫ বিলিয়ন বছর।
 ( https://bit.ly/2V0XVYU )
Image result for পৃথিবীর ছবি

সূর্য্যের বয়স হচ্ছে ৪.৬০ বিলিয়ন বছর।                   
   https://bit.ly/37yVE9P
Image result for সুর্য্যের ছবি

সৌরজগতের বয়স হচ্ছে ৪.৫৭ বিলিয়ন বছর।
https://g.co/kgs/Zw4uxG
Image result for সোউরজগতের ছবি

ঠিক এভাবেই মার্কারী,প্লুটো,নেপচুন,মারস,ভেনাস,টিটান,মিল্কীওয়ে,গ্যালাক্সী,ইউরোপা,এরিসসহ অসখ্য কোটিকোটি গ্রহ নক্ষত্র রয়েছে যেগুলির বয়স একটা থেকে আরেকটার কোটি কোটি বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পার্থক্য ।
অথচ কুরানে বলা হয়েছে সেগুলি আল্লায় সব একদিনে বা দুদিনে সৃষ্টি করেছেন ।
যেখানে মাত্র একদিন বা দুইদিনের পার্থক্য মাত্র ।

শুধুমাত্র এখানেই শেষ নয়,আরো বড় ফ্যাক্ট দাড়িয়ে আছে সামনেই। আর সেটা হচ্ছে কুরানে বলা হচ্ছে প্রথমে আকাস এবং যমীন একটা আরেকটির সাথে মিশে ছিল। পরে তাদেরকে ফাকা বা আলাদা করে দেওয়া হলো।
তো এই আলাদা করার পরে দেখবো আল্লায় আগে কোনটা কোনটা বানিয়েছেন?
এখানে উপরে দেখুন আল্লায় কুরানে বলছে আগে পৃথিবী বানিয়েছেন ২ দিনে মানে জমীন,তারপর তাতে পর্বতমালা সাজিয়েছেন এবং ৪ দিনে খাদ্য খাবার দিয়েছেন। এরপরে তিনি আসমান সমুহের দিকে দৃষ্টি দিলেন এবং উহা দুই দিনে সম্পন্ন করে সেখানে তারকা রাজি সৃষ্টি করেন।
অথচ এই আয়াতগুলিকে যেই বিজ্ঞানের সাথে মেলানোর চেষ্টা করা হয়েছে সেই বিজ্ঞান কি বলছে?
আগে পৃথিবী সৃষ্টি হয়নি,বরং আগে মহাবিশ্ব সৃষ্টির হওয়ার পরে পৃথিবী সৃষ্টি হয়।যেখানে মহাবিশ্বের বয়স হচ্ছে ১৩.৮ বিলিয়ন বছর এবং পৃথিবীর বয়স হচ্ছে ৪.৫ বিলিয়ন বছর।

তাহলে এবার আপনারা ই ভেবে দেখুন তো কুরানের সাথে বিজ্ঞানের মিল কোথায় পেলেন?
চিন্তা করে দেখুন তো ঐ জোকার নালায়েক এবং তার ভক্তবৃন্দরা কতবড় বাটপারি এবং জোচ্চরি করে বেড়ায় মানুষকে বোকা বানাতে?

দাবীঃ৩.   ভ্রন তত্ব নিয়ে বিজ্ঞান আজ জেনেছে পুরুষই ( শিশু ছেলে হবে কিনা মেয়ে হবে) তা নির্ধারণ করে। ভাবা জায়... কুরআন এই কথা জানিয়েছে ১৪০০ বছর আগে।
[ সূরা নজমের ৪৫, ৪৬ নং আয়াত, সূরা কিয়ামাহ’র ৩৭- ৩৯ নং আয়াত ]

জবাবঃ  An-Najm 53:45
وَأَنَّهُۥ خَلَقَ ٱلزَّوْجَيْنِ ٱلذَّكَرَ وَٱلْأُنثَىٰ
আর তিনিই যুগল সৃষ্টি করেন- পুরুষ ও নারী।
An-Najm 53:46
مِن نُّطْفَةٍ إِذَا تُمْنَىٰ
শুক্রবিন্দু থেকে যখন তা নিক্ষিপ্ত হয়
Al-Qiyamah 75:37
أَلَمْ يَكُ نُطْفَةً مِّن مَّنِىٍّ يُمْنَىٰ
সে কি বীর্যের শুক্রবিন্দু ছিল না যা স্খলিত হয়।
Al-Qiyamah 75:38
ثُمَّ كَانَ عَلَقَةً فَخَلَقَ فَسَوَّىٰ
অতঃপর সে ‘আলাকায় পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ তাকে সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন এবং সুবিন্যস্ত করেছেন।
Al-Qiyamah 75:39
فَجَعَلَ مِنْهُ ٱلزَّوْجَيْنِ ٱلذَّكَرَ وَٱلْأُنثَىٰٓ
অতঃপর তিনি তা থেকে সৃষ্টি করেন জোড়ায় জোড়ায় পুরুষ ও নারী।

এখানে আলাকা দ্বারা জমাট রক্তকে বুঝানো হয়েছে।তো এটা দেখেও অনেকেই এখানে সুভানাল্লা সুভানাল্লা পড়ে ফেলতে পারেন, কেননা হয়তো ভাবতে পারেন যে এতবড় গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় তখন ১৪০০ বছর আগে মুহাম্মাদের মত অশিক্ষিত একটা লোকে জানলো কিভাবে?
আচ্ছা একটু ভাবুনতো এটা জানার জন্য কি রকেট সাইন্টিস্ট হতে হবে?
আমাদের প্রসূতি মায়েদের মধ্যে কিংবা কোন গর্ভবতী কোন গবাদিপশুর কি অপরিপক্ক বাচ্চা প্রসব করেনা গর্ভধারনের ৩/৪ মাস পরেই?
সেটা দেখলে কি আমরা বুঝিনা যে এটা একটা রক্তপিন্ডের দলার সৃষ্টি হয়েছে যেটা বীর্জের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল?
-হ্যা, অবশ্যই বুঝা যায়। তাহলে এখানে এই সস্তা একটা বিষয়ের মাঝে এখানে নবী কিংবা স্রস্টার মহত্ব কোথায়? এটা তো আমরা সাধারণ মানুষেই জানি।আমাদের চোখের সামনেই ঘটে থাকে। বরং এখানে যদি এরকম কিছু থাকতো যেটা অতি সুক্ষ্ম বিষয় যেটা আজ বিজ্ঞানীরা তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত মেশিনের মাধ্যমে জেনেছে, তাহলে একটা মানানসই কথা ছিল।

দাবীঃ৪.   একটি শিশু যখন গর্ভে থাকে তখন সে আগে কানে শোনার যোগ্যতা পায় তারপর পায় চোখে দেখার। ভাবা যায়? ১৪০০ বছর আগের এক পৃথিবীতে ভ্রুনের বেড়ে ওঠার স্তর গুলো নিয়ে কুরআন বিস্তর আলোচনা করে। যা আজ প্রমাণিত !
[ সূরা সাজদাহ আয়াত নং ৯ , ৭৬ এবং সূরা ইনসান আয়াত নং ২ ]

জবাবঃ   Al-Insan 76:2
إِنَّا خَلَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ مِن نُّطْفَةٍ أَمْشَاجٍ نَّبْتَلِيهِ فَجَعَلْنَٰهُ سَمِيعًۢا بَصِيرًا
আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, আমি তাকে পরীক্ষা করব, ফলে আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।
As-Sajdah 32:9
ثُمَّ سَوَّىٰهُ وَنَفَخَ فِيهِ مِن رُّوحِهِۦۖ وَجَعَلَ لَكُمُ ٱلسَّمْعَ وَٱلْأَبْصَٰرَ وَٱلْأَفْـِٔدَةَۚ قَلِيلًا مَّا تَشْكُرُونَ
তারপর তিনি তাকে সুঠাম করেছেন এবং তাতে নিজের রূহ থেকে ফুঁকে দিয়েছেন। আর তিনি তোমাদের জন্য কান, চোখ ও অন্তরসমূহ সৃষ্টি করেছেন। তোমরা খুব সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর

শিরোনামটা একটু দেখেন আর কুরানে কি বলা আছে সেটাও একটু দেখেন ।
কুরানে বলছে সে বা আল্লায় শুক্রবিন্দ থেকে শ্রবনের জন্য  কান,দেখার জন্য চোখ অ অন্তরসমুহ সৃষ্টি করেছেন । যেটা একটা ইউনিভার্সাল বিষয় যা মুহাম্মদের কুরানের জন্মেরও কোটি কোটি বছর ধরে ঘটে আসছে ,মানুষে দেখে আসছে ,জেনে আসছে ।তো সেই বিষয়ে দুই চার লাইন ছন্দ লিখে কি এমন জ্ঞানের প্রকাশ ঘটেছে এতে?

আর বিজ্ঞান বলছে একটা শিশু চোখের দৃষ্টি সম্পন্ন হওয়ার চেয়ে কানের শ্রবনশক্তি আগে অর্জন করে , অথচ কুরানের ভাষায় বুঝা যাচ্ছে এগুলি সব একসাথেই পায় একটা শিশু ।
উল্লেখ্য যে, সুরা সাজদায় মোট আয়াতসংখ্যা হচ্ছে ৩০টি, তাহলে এই ইসলামের বিজ্ঞানীরা ৭৬ নাম্বার আয়াত কোথায় পেল?


দাবীঃ১৫.  পৃথিবী দেখতে কেমন? এক সময় মানুষ মনে করত পৃথিবী লম্বাটে, কেউ ভাবত পৃথিবী চ্যাপ্টা, সমান্তরাল... কোরআন ১৪০০ বছর আগে জানিয়ে। গেছে পৃথিবী দেখতে অনেকটা উট পাখির ডিমের মত গোলাকার।

জবাবঃ
আয়াত নাম্বার উল্লেখ না করে পাইকারিভাবে সুরার মধ্যে আছে বলে দাবী করে বসে আছেন।
দেখি এই কথাটা কোন  সুরার কোন আয়াতে আছে?
এই কথাটা বলা হয়েছে সুরা নাজিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতে।
চলুন দেখি কি বলা আছে ?
An-Nazi'at 79:30
وَٱلْأَرْضَ بَعْدَ ذَٰلِكَ دَحَىٰهَآ
এরপর তিনি যমীনকে বিস্তীর্ণ করেছেন।

এই আয়াতে দেখুন আরবি আয়াতের একদম শেষে দাহাহা একটা শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে ।
আর দাহাহা শব্দের অর্থ হচ্ছে বিস্তীর্ন ।

অনুবাদকেরাও সেটাই করেছে , কিন্তু আমাদের কুরানিক ডাক্তার জনাবে জোকার নালায়েক সাহেব এখানে ব্যবহৃত দাহাহা শব্দটিকে ছেড়ে দিয়ে দাহাহা'র মূল ধাতু বা মূল শব্দটিকে টেনে নিয়ে এসে ব্যাখ্যা করেছে যে দাহা মানে যেহেতু ঊট পাখির ডিম , সেহেতু পৃথিবী হচ্ছে উট পাখির ডিমের মত ।আর ঊট পাখির ডিম একটু লম্বাটে টাইপের হয়ে থাকে।।
Image result for উট পাখির ডিমImage result for পৃথিবী দেখতে কিসের মতন
বিষয়টা এরকম হলোনা যে,এক মহিলা গেছে বাথরুমে গোসলে ।কিছুক্ষন পরেই কলিং বেলের আওয়াজ শুনে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিতেই দেখে তার শ্বশুর এসেছে তাড়াতাড়ি সে তার পরনের টাওয়েল খুলে মাথায় দিয়ে শ্বশুরকে সালাম করা শুরু করে দিছে ?
অর্থাৎ , যেখানে আয়াতে আল্লায় ব্যবহার করছে দাহাহা ,সেখানে আমাদের জোকার সাহেব দাহাহা কে ছেড়ে দিয়ে তার ধাতুকে টেনে এনে  বিজ্ঞানের সাথে মিলিয়ে দিয়েছে ।
কুরানে বলা হয়েছে বিস্তৃর্ন ।
কেমনবিস্তৃর্ন ?
ঠিক বিছানা বা ্কার্পেটের মত বিস্তৃর্ন ।

‘তিনি (আল্লাহ) তোমাদের জন্য ভূমিকে করেছেন বিছানা স্বরূপ।’- সূরা নূহ ১৯
[“And Allah has made the earth for you as a carpet (spread out)] ”
”তিনিই তোমাদের জন্য জমিনকে করেছেন বিছানা স্বরূপ। আর তাতে তোমাদের জন্য করেছেন চলার পথ।”- সূরা ত্বাহা ৫৩
[ “He Who has made for you the earth like a carpet spread out; has enabled you to go about therein by roads (and channels)….” ]
‘অতঃপর, তিনি তার জমিনকে বিস্তৃর্ণ করেছেন।’
– আন-নাজিরাত ৩০
তাহলে এবার একটু ভাবুনতো জাকির নায়েক কিংবা প্যারাসিট্যামল আরিফ সাহেব কতবড় ধাপ্পাবাজ চিন্তাকরেন ।এরা এভাবেই কুরানের মধ্যে অহরহ বিজ্ঞান খুজে পায় যার মূল্য হয়না চারপয়সারও ।আর এই এদের মত কুরানকে বিজ্ঞানময় বানানো অতি আবেগী মুসলমানদের কারনেই আজ ইসলাম সবচেয়ে বেশি হাসির খোরাকে পরিনত হয়েছে ।
তো পরিশেষে আর কি বলার থাকে , এমনিতেই লেখাটা অনেক বড় করে তুলেছি ।
বেশী কিছু বলতে চাইনা ।বলতে চাই যে, লেখা আমার,ভাবনা আপনার ।
নিজেই ভেবে দেখুন আপনি কার কাছে মাথা নত করছেন?
আর কার কাছে মাথা নত করবেন?
মাথার অনেক দাম ।না জেনে বুঝে অহেতুক এখানে সেখানে সেটাকে নুইয়ে দিয়েননা।
সবার মঙ্গল কামনায়...
Shakh al Imran.



No comments

Powered by Blogger.