Header Ads

Header ADS

ইসলামের বিরুদ্ধে কেন লিখে?

ইসলামের বিরুদ্ধে কেন লিখে?


Image result for প্রশ্ন বোধক চিহ্ন


একজন হিন্দু যখন বুঝতে পারে, তার ধর্মটি কিছু রূপকথাভিত্তিক আচার অনুষ্ঠান, আর সেগুলি পালন করা না করায় কিছুই যায় আসে না, তখন তাকে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। কেউ উত্তেজিত হয় না, চিন্তিত হয় না, ভীত বা আতংকিত হয় না। সে নিজেও কোনরকম ভয়ভীতিতে আক্রান্ত হয় না।

একজন খ্রিস্টান যখন তার ধর্মীয় বিশ্বাস হারায়, তাকে নিয়েও তার পরিবার বা সমাজ খুব একটা চিন্তিত হয় না। তাকেও তার চিন্তাভাবনা প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনরকম বাছবিচার না করলেও চলে। বৌদ্ধ বা ইহুদিদের সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়।

কিন্তু একজন মুসলমান যখন নামাজ-রোজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন সেটা তার পরিবার বা সমাজের জন্য একটা বড় মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাকে বিভিন্নভাবে জবাবদিহি করতে হয়। আর ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস উঠে গেছে, আল্লাহর উপর ভরসা নাই, নবী মুহাম্মদকে আল্লাহর নবী বা রসুল হিসেবে মানে না, কোরানকে ঐশী গ্রন্থ মনে করে না - কোন মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া কাউকে এসব বলতে শুনলে তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবরা পর্যন্ত চিন্তায় পড়ে যায়। এসব বিশ্বাস না করলেও, তা যেন প্রকাশ না করা হয় এবং লোকদেখানোর জন্য হলেও কিছু কিছু অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ব্যাক্তিগত বিশ্বাসকে গোপন রাখার একটা চাপ আসতেই থাকে।

আমার মধ্যে বিচারবিবেচনা বোধ তৈরী হওয়ার পর থেকেই ধর্ম পালনের ব্যাপারে প্রচন্ড অনীহা তৈরী হয়, ১০/১১ বছর বয়স থেকেই। কিন্তু কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে ১৭/১৮ বছর বয়স পর্যন্ত এবিষয়ে চুপচাপ থেকে জুম্মার নামাজে হাজিরা দিয়ে কিংবা কয়েকটা করে রোজা রাখার ভান করে লুকিয়ে খাওয়াদাওয়া করে পার করেছি। এরপর বহুবছর কাউকে কোন কারন না দেখিয়ে প্রায় সব ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান এড়িয়ে ৪৫/৪৬ বছর পর্যন্ত নির্বিঘ্নে জীবন যাপনের পর যখন সবাই আশা করতে শুরু করলো, এখন তো বয়স হয়েছে, কিছু কিছু করে ধর্মকর্ম শুরু করা দরকার, তখন আমার ইসলাম ধর্মে অবিশ্বাস সংক্রান্ত প্রকাশ্য ঘোষণা ছিল বহুলাংশে এক ধরনের পারিবারিক বিপর্যয়ের মতো। আমার নিজের কাছে এই অবিশ্বাস যতটা স্বাভাবিক ছিল, আমার আশেপাশের মানুষদের মধ্যে সেটা ছিল তার চেয়ে অনেক বেশী অস্বাভাবিক।

আমার আব্বা এখনো আশা ছাড়েননি এবং প্রায় প্রতি শুক্রবার সকালে জুম্মার নামাজ পড়তে যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন। ধর্মীয় তর্ক বলতে শুধু তার সাথেই কিছুটা এখনো চলে এবং "যখন বুঝবে, তখন আর সময় থাকবে না" - জাতীয় বানীর মুখে, "পরকাল থেকে কারো কোন খবরাখবর পেলে চিন্তা করে দেখবো" বলে কথা শেষ করি।

ইসলাম ধর্ম নিয়ে এত কথা লিখতে হয় ইসলামের এধরনের অযৌক্তিক চাপের মুখোমুখি হওয়ার প্রতিবাদ আর প্রতিরোধের জন্যই। যারা ধর্ম ত্যাগ করেন, তারা ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করেন সবাইকে দলে দলে ধর্ম ত্যাগ করে তাদের পাশে আনার জন্য না, বরং তাদের নিজেদের অবস্থানের যৌক্তিকতা ব্যখ্যা করার জন্য। যেসব ধর্মীয় প্রশ্নের যৌক্তিক ব্যখ্যা না পেয়ে তারা ধর্মীয় বিশ্বাস হারালেন, সেগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য। যেসব গোঁজামিল দিয়ে ভুলিয়ে রাখা হয়েছিল, তা বুঝতে পারায়, কিংবা সযত্নে লুকিয়ে রাখা বিষয়গুলো জানার পর, ধর্মপ্রচারকদের অসততা প্রকাশিত হওয়ার পর এর প্রতিবাদ হিসেবেই এক্স-মুসলিমরা ইসলাম ধর্মের সমালোচনায় মুখর হন, ধর্মবিদ্বেষী হন।

শিক্ষিত মডারেট মুসলিমদের অসত্য বিবরণও আমার মত এক্স মুসলিমদেরকে লজ্জিত, আহত, বিক্ষুব্ধ এবং উত্তেজিত করে, যখন তারা ভাব দেখায়, জঙ্গী - সন্ত্রাসী - আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা সহী মুসলিম না। ওয়াজ মাহফিলের ধর্মীয় উস্কানীদাতা, বিধর্মীদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো বক্তাদেরকে তারা "কাঠমোল্লা" নাম দিয়ে প্রকৃত ইসলাম আরো ভাল কিছু একটা বলে প্রচার করে ইসলামের মানসম্মত বাঁচানোর জন্য সবার দৃষ্টি সরানোতে ব্যাস্ত। এই মডারেট শিক্ষিত মুসলমানদের বেশীরভাগই ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। এরা কোরানের দশটা বানীর বাংলা জানেনা। এরা স্বীকার করতে চায়না, সমস্ত জঙ্গী হামলার পিছনে আছে কোরানের অনুপ্রেরণা। 
কারন ছোটবেলা থেকেই এরা বা আমরা যে ইসলাম এবং ইসলামের মুহাম্মাদ সম্পর্কে বইপুস্তক থেকে এবং লোক মারফতে জেনে আসছি, তার সবটাই হচ্ছে মানুষের মুখরোচক বানানো গল্প মাত্র,যেগুলো মুহাম্মদকে নিয়ে মানুষে তাদের আবেগ, অনুভূতি এবং কল্পনা থেকে সৃষ্টি করেছে, যেগুলোর বিন্দুমাত্র লেশ খুজে পাওয়া যায়না কোন অথেনটিক সোর্সে, এবং মুহাম্মদকে ঘিরে যেসকল গ্রন্থ রচিত হয়েছে হাদীস সিরাতের মত গ্রন্থ সেগুলোর কোথাও এসব গল্পতো খুজেই পাওয়া যায়-ই-না, বরং সেসকল কুরান, হাদীস, সিরাত গ্রন্থে সেসকল গল্পের বিপরীতে সাক্ষ্য দেয় মুহাম্মদ সম্পর্কে। 
তাহলে কোনটা সত্য? 
তারপরও তারা সেই গল্পানুসারেই তাদের স্রস্টা এবং তাদের নবীকেই কল্পনায় এক মহামানব হিসাবে স্থান দিয়ে রাখে।অথচ যেখানে তাদের সেই ছোটবেলায় প্রাইমারির বইয়ে পড়া গল্পকে সত্যভেবে মনের রাজ্যে বসানো কল্পনার শ্রেষ্ঠ মহামানবের বাস্তবতার বিপক্ষেই সাক্ষ্য দেয় বিভিন্ন হাদীস এবং সিরাত গ্রন্থ,কিন্তু যতই সাক্ষ্য দিক সেই কুরান, হাদিস এবং সিরাত গ্রন্থ সেগুলোর সবটাই তাদের কাছে ধুলিস্মাত হয়ে যায় তাদের সামনে বসে বারবারই সেই কল্পনা রাজ্যের মহামানবকে নিয়ে হুজুর মোল্লাদের কুরান হাদীস এবং সীরাতের মধ্যে থাকা সেই মুহাম্মাদের এবং তার আল্লার খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা না করে বরং সেসবকে ছাইচাপা দিয়ে এড়িয়ে গিয়ে বরং অতিরঞ্জিত কথাবার্তা,গল্পকাহিনীগুলো প্রচারের মাধ্যমে এবং শিশু এবং কোমল বয়সের নরম মস্তিষ্কে যে কল্পনার এক মহামানবের ছাপ প্রতিষ্টা হয়েছে তার সামনে।। 

আপনাদের নিশ্চয় ইসলামের নবী মুহম্মদ সম্পর্কে ঐ গল্পটি শোনা আছে যে, এক ইহুদি বুড়ি নবীর যাতয়াতের পথে কাঁটা দিতো, প্রতিদিন নবী সেই কাঁটা সরিয়ে সরিয়ে চলাচল করতো। একদিন নবী দেখলো পথে আর কাঁটা নেই। তখন সে আশে পাশের লোকদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারলো যে, যে বুড়ি পথে কাঁটা দিতো সে অসুস্থ; তারপর নবী তার বাড়ি গেলো, তার খোঁজ-খবর নিলো, এমন কি সেবা-যত্ন করে তাকে সুস্থ করে তুললো। এর পর বুড়ি নিজের ভুল বুঝতে পেরে নবীর মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলো।

কিংবা বনে শিকারে যাওয়া এক শিকারের আক্রমনের শিকার হওয়া হরিনের কান্না শুনে নবী এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন হরিনিটি কাদছে কেন ?
তখন হরিনটি তার দুগ্ধজাত ছোট ছোট বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানোর কথা বললো যে তাকে যদি কিছুক্ষনের জন্য ছেড়ে দেওয়া হতো সে তার বাচ্চাদেরকে দুধ খাইয়ে আবার চলে আসতো ।
এ কথা শুনে নবী মুহাম্মদ  হরিনটি ছেড়ে দেয় এবং সে তার বাচ্চাদের দুধ খাওয়াতে গেলে শিকারী এসে দেখে তার হরিনটি আর গাছে বাধা নেই । মুহাম্মদকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে আমি হরিনটিকে ছেড়ে দিয়েছি তার বাচ্চাগুলিকে একটু দুধ খাইয়ে আবার ফিরে আসবে ।একথা শুনে শিকারি বিশ্বাসই করতে চায়না ।এমতাবস্থায় মুহাম্মদের উপরে শিকারি চটে গেলে দূরে তাকাতেই দেখে হরিনটি তাদের কাছে ই ফিরে আসছে ।এটা দেখে সেই বিধর্মী শিকারি নবীর পায়ে পড়ে যায় এবং তাকে মুসলমান বানাইয়া দেওয়ার  জন্য তার পা জড়িয়ে ধরে।
অথচ এসব গল্পে বিশ্বাসীরা কখনোই একটিবারও ভাবেনা যে , সৌদি আরবের ঐ মরুভুমিতে যেখানে নেই ঘাষ পাতা ,সেখানে হরিন আসবে কোত্থেকে ?
কারন এই গল্পগুলো যখন পড়ানো হয়েছে, মগজে পুরে দেওয়া হয়েছে তখন আমাদের কারোই এসব প্রশ্ন করার মত বয়স এবং জ্ঞান কোনটাই তৈরি হয়নি।

যাহোক, এই গল্প দ্বারা বোঝানো হয় যে মুহম্মদ ছিলো মহান, আর তার মহানুভাবতায় মুগ্ধ হয়েই আরবের লোকজন স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছিলো; কিন্তু বাস্তবতা  আসলে তাই?
বরং বাস্তবতা  সম্পূর্ণ উল্টো; কারণ, মুহম্মদ সম্পর্কে এই গল্প পুরোটাই মিথ্যা। মুহম্মদের জীবনের সকল কাহিনী ই কোরান হাদিসের মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত। আমি মুসলমানদের কাছে চ্যালেঞ্জ


দিচ্ছি, এই গল্পের সত্যতার পেছনে একটি রেফারেন্স দেখাতে।যদি কেউ পারে তারা যেন এসব গল্পের রেফারেন্স দেখায় আমাকে।

উপরের ঐ গল্পটি প্রচার করার পেছনে আরেকটি উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে বোঝানো যে নবীর হৃদয়ে মানুষের জন্য অনেক ভালোবাসা ছিলো এবং এই গল্পের প্রচারের ফলে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ কোনো অমুসলিম এমনকি কোনো মুসলিমের পক্ষেও ধা্রণা করা সম্ভব ছিলো না যে, মুহম্মদ ছিলো একজন গ্রেট সন্ত্রাসী এবং নবুয়ত প্রাপ্তির পর তার পুরো জীবন ই ছিলো অমুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ও সন্ত্রাসে ভরা।

ইসলাম সম্পর্কে মুসলমানরা যা জানে এবং প্রচার করে তার ৯০% ই মিথ্যা। এই মিথ্যা শুনতে শুনতে ও জানতে জানতে তা মুসলমানদের অস্থি-মজ্জা-রক্ত-মাংস ও মন-মানসে এমনভাবে ঢুকে গেছে যে, কোরান-হাদিস থেকে রেফারেন্স দিয়ে কোনো কিছু লিখলেও তারা তা বিশ্বাস করে না, এমনকি যা লেখা হয়েছে তা সত্য কিনা, কোরান হাদিস খুলে সেটা দেখারও প্রয়োজন বোধ করে না। তাদের একটাই বিশ্বাস, নবী কোনো কিছু খারাপ করতে পারে না এবং নবীর নামে কেউ কোনো খারাপ কথা বললে তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলতে হবে; কারণ, তাহলে নবী খুশি হবে এবং নবীর সব কথা বিশ্বাস করলে নবী তাকে পরকালে হুর সমৃদ্ধ বেহেশত পাইয়ে দেবে, যেখানে সে অনন্তকাল ধরে সেক্স করতে পারবে। সুতরাং নবী তার জীবনে যা ই করুক, তার নামে কোনো খারাপ কথা বলাও যাবে না, শোনাও যাবে না, আর বিশ্বাস করাও যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ৯৯% মুসলমানের এই মনোভাব যে নবীর নামে খারাপ কোনো কথা বিশ্বাস করে হুর-গেলমান হারানোর রিস্ক নিয়ে লাভ কী ?

আমাকে এতসব বলতে হয়, একটা বিষয় খুলে বলার জন্যই - আমি সহী মুমিন মুসলমান তো নইই, আমি মুসলিমই নই। সময় এসে গেছে, যখন ইসলামের আসল চেহারা বের হয়ে আসছে। খুব শিঘ্রই, মডারেট মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিতে গেলেও লজ্জিত হতে হবে। আর সহী মুমিন মুসলমানদেরকে আরো বড় বেইজ্জতি এমনকি শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

আর আমি এও জানি, আমার মত ইসলামে অবিশ্বাসী মুসলিমের সংখ্যাও কম না একেবারেই। অনেকে ব্যাক্তিগতভাবে আমাকে জানান, পরিবার-সমাজ-নিরাপত্তা ইত্যাদি কারনে তারা প্রকাশ্যে আসেন না, এমনকি এজাতীয় লেখায় মন্তব্য লেখা বা লাইক দেয়াতেও তারা ভয় পান। এটাই স্বাভাবিক। কারন, এই ভয়ভীতির জোরেই ইসলাম ধর্মটি এখনো টিকে আছে। আল্লাহর ভয়ে আর কেউ ভীত নয়। ইসলামী খুনখারাপিকেই তাদের ভয়।

বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই কাইয়ুম ভাইকে 

No comments

Powered by Blogger.