এই যুগে এসে কেন ইসলামের মধ্যে ঢুকবোনা ?
এই যুগে এসে কেন ইসলামের মধ্যে ঢুকবোনা ?
ইসলামের অপরাগতার বিরুদ্ধে বা বিপক্ষে লিখতে গিয়ে বা আমার অবস্থান দেখে অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করে থাকেন যে, ইসলামের কোন কোন জিনিশগুলি আমার কাছে খারাপ মনে হয়েছে ?
ইসলামের চেয়ে ভালো কোন ব্যবস্থা কি আর কোনটা আছে ?
এই আধুনিক যুগে এসে শিক্ষিত লোকেদের মুখ থেকে এসব প্রশ্ন শুনলে সত্যিই অবাক হতেই হয় ।
যাহোক, প্রসঙ্গে যাওয়ার আগেই একটা কথা বলে নেওয়া জরুরী যে,প্রত্যেকটি বিষয়েরই বা প্রতিটি বস্তুরই সমান দুটি দিক থাকে ।নেগেটিভ এভং পজেটিভ ।
একজন চোরে যখন চুরি করে বা কোন ডাকাতে যখন কোন খুন করে তখন তার সেই চুরি ডাকাতির পিছনেও কিন্তু একটা পজেটিভ বিষয় পাওয়া যায় ।আর সেটা থাকে সে নিজেকে এবং তার পরিবারের সুরক্ষার জন্য বা তাদেরকে খাইয়ে বাচাতেই তারা এরকম জঘন্য কাজ করে থাকে ।অর্থাৎ এখানে কাজটা খারাপ হলেও কিন্তু তার মাঝেও একটা পজেটিভ বিষয় আছে ,কিন্তু আমরা সেটা বিচারের সময় আমলে নিইনা ,কেননা তাহলে অপরাধ বলে আর কিছুই থাকবেনা এবং অপরাধী বলেও কাউকে সনাক্ত করে সমাজ থেকে বিশৃঙ্খলা দূর করা যাবেনা ।তখন সবাই ই হয়তো খারাপের দিকে ঝুকে যাবে।
ঠিক তেমনিভাবে ইসলামের সবকিছুই যে খারাপ হবে বা সবকিছুই ভালো হবে সেরকম কোন কথা নেই । একজন ব্যক্তি হাজারো ভালো মানের দশটা কাজের সিদ্ধান্ত নিলেও
কিন্তু সেখানে সেই ভালো কাজের পাশাপাশি খারাপ কিছু ঘটবেই ।হয়তো বা ভালোর চেয়ে খারাপের পরিমান কম হলে আমরা সেটাকে খারাপভাবে দেখবনা ।
অথবা দশটা ভালো কাজের মধ্যে একটা খারাপ কাজ করে থাকলে আমরা সেটাকে আমলে নিইনা ,কেননা মানুষ মাত্রই ভুল হবে ।
কেউই আমরা ভুলের উর্ধ্বে নই ।
কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে বিষয়গুলি সেরকম নয় , বরং সম্পূর্ন ভিন্ন ।
কেননা এখানে কোন একজন ব্যক্তির করা কাজগুলিকে নিজের নামে না চালিয়ে বরং স্রস্টার কাজ বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আমাদের সেভাবেই মানতে বলা হয় ।
আর এখানেই যত বিপত্তি শুরু হয়।
যদি ইসলাম নামক দলের প্রবক্তা মুহাম্মদে তার দলের জন্য তৈরি করা মেনিফেস্টোগুলিকে বা নিয়মনীতিগুলিকে নিজের বানানো বলে প্রচার করতো এবং সেভাবেই বিশ্বাস করতে বলতো তাহলে আর কোন বিপত্তি আসতোনা ।কিন্তু তিনি সেটা না করে বরং স্রস্টার নামে চালিয়ে দিয়েই বিপত্তির জন্ম দিয়েছে ।
কেননা যদি মুহাম্মদের তৈরি করা কাজগুলিকে নিজের নামের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতো তাহলে আমরা আজ তার ভুলগুলিকে বাদ দিয়ে আমাদের মত করে শুধুমাত্র ভালো কাজগুলিকে নিয়ে নিয়ে তাকে সম্মান জানিয়ে তার দলের প্রতি আসক্ত হতাম ।
কিন্তু ইসলামে তো সেই সুযোগ নেই ।
মুহাম্মদে অতিরিক্ত চালাকি করে সমস্ত দায় থেকে নিজেকে বাচাতে গিয়ে এমন একটা গ্যাড়াকলের জন্ম দিয়ে গেছে যে, এখন সেই গ্যাড়াকলে তার দলের অনুসারিরাই আটকে যাচ্ছে ।
আর সেটা হচ্ছে প্রতিটি ধর্ম নামক রাজনৈতিক দলেই তাদের ধর্মের সুড়ঙ্গকে আরো গভীরে নিয়ে যেতেই একটা কল্পিত চরিত্রকে ঝুলিয়ে রেখেছে যে, সে এসে সেই সুড়ঙ্গকে আরো গভীরে নিয়ে যাবে।
যেমন, বাইবেলে বলা হয়েছে শেষ সময়ে একজন নবী বা মানব প্রতিনিধি আসবেন ।
হিন্দু ধর্মেও ঠিক সেভাবেই কল্কি নামক একজনের আসার জন্য সুড়ঙ্গ খুড়ে রেখেছে ,যেটাকে কেন্দ্র করেই জাকির নায়েক মুহাম্মদকে হিন্দুদের বেদের মধ্যে মিল করার চেষ্টা করেছিলেন ।
মুহাম্মদের জীবদ্দশাতেও তিনিও ঠিক বাইবেলে থাকা ঐ ক্লুটাকে কাজে লাগিয়েই নিজেকে সেই শেষ নবী বলে ঘোষনা দিয়ে নিজেকে নবী বানিয়েছিলেন এবং অতিরিক্ত চতুরতার ফলে সে নিজেকে সেই শেষ নবী বলে দাবী করেছিলেন ।এবং তার পরে আবার নতুন করে আরেকজনে যাতে নিজেকে সেই শেষ নবী হিসাবে দাবী করতে না পারে সেই কারনেই তিনি বলে গেছিলেন যে ,তিনিই সেই শেষ নবী ।তার পরে আর কোন নবী আসবেনা ,এবং তার দেওয়া বিধানের কোন পরিবর্তনও কোন কালেই হবেনা ।
কেননা ওসব বিধান তার নিজের দেওয়া নয়, ওসব বিধান দেওয়া হয়েছে তাকে তার স্রস্টার কাছ থেকে ।
আর তার এই স্রস্টার নামে চালানোতেই যত বিপত্তি এসে দেখা দিয়েছে।
কেননা কোন মানুষের পক্ষে স্বাভাবিকভাবে কোন ভুল করা যেতেই পারে , কিন্তু কোন স্রস্টার তো ভুল হতে পারেনা ।বা মানবজাতির জন্য নেওয়া কোন স্রস্টার সিদ্ধান্তে তো আর কোন ভুল থাকতে পারেনা ।অথচ আমরা ইসলামের মেনিফেস্টোর মধ্যে অনেক অসঙ্গতি দেখতে পাই ,যেটা থেকে স্রস্টার দিকে অবিশ্বাসের ইঙ্গিত প্রকাশ করে ।
আর স্রস্টার কোন একটি বিষয়েই কোন অবিশ্বাসের ইঙ্গিত প্রকাশ করা বা তার কোন কাজের মাঝে খারাপ কিছু খুজে পাওয়া মানেই সেই ধর্মের প্রতি , ধর্মের স্রস্টার প্রতি ঈমান হারিয়ে ফেলা ।
তো ইসলামে তো আর এরকম কোন সুযোগ নেই যে, একটাকে ( যেটাকে ভালো লাগবে) রেখে অন্যটাকে ( যেটাকে ভালো না লাগবে) ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ আছে ।
বরং ভালো মন্দ যা আছে তার সবটাই হুবুহু সমানভাবে মেনে নিতে হবে ।কোন কথা বলা যাবেনা ।
কিন্তু আমি একজন বিবেকবান সচেতন মানুষ হিসাবে কোনক্রমেই সেটা মেনে নিতে পারিনা।
অনেককেই দেখি যারা ইসলামের মধ্যে কোন খারাপ দিক খুজে পায়না ,শুধুই ভালো দিক ছাড়া ।
তাই ইদানীং তারা দেখি সেই ভালো কাজগুলির লিষ্ট তৈরি করে প্রচারে নেমেছে ।
সেই কারনেই আমার এই লেখাটা লিখতে বাধ্য হলাম।
তারা ইসলামের মধ্যে যেসকল ভালো দিক খুজে পায়ঃ
এই সময়ে এসে ওসব মধ্যযুগীয় ব্যবস্থাকে টেনে রাখার কোন মানেই হয়না ।
কারন>>
১. যাকাতের চেয়ে ভালো মানের ব্যবস্থা ভ্যাট ট্যাক্স,আয়কর রয়েছে ।
২.মা বাবা ভাই বোন কোন দলীয় সম্পত্তি নয় ।এগুলি প্রত্যেকের কাছেই ইভেন প্রত্যেক প্রানীর কাছেই অতি মুল্যবান।
সুতরাং এসব বিষয়ে অন্যের থেকে কারো জ্ঞান নিতে হবেনা ,কেননা ইসলামের জন্মের আগে থেকেই এসব চর্চা মানুষের মাঝে ছিল।
আর প্রতিবেশীর হক আদায়?
সেটা তো কেবলই মুসলিম টু মুসলিমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ।
আমার প্রতিবেশী যদি হয় কোন অমুসলিম তাহলে তাকে আমার ঘৃনা করতে হবে ।আমার দলে ইসলামে না আসা পর্যন্ত তাকে আমার ফোর্স করতে হবে ,প্রয়োজনে তাকে হত্যাও করতে হবে ।আর সে বেচে থাকতে চাইলে সবসময়ই তাকে আমার কাছে মাথা নত করে জিজিয়া কর দিয়ে লাইফ সাপোর্ট নিতে হবে ।
সুতরাং এই যুগে এসে এসবের মধ্যে জড়ানোর কোন মানেই হয়না ।
৩. মানুষ সামাজিক জীব।সমাজ বদ্ধ হয়েই তারা বাস করতে অভ্যস্ত।সবাই ই শান্তিতে বাচতে চায়।
প্রতিটি সমাজ এবং রাস্ট্রেই এখন ওসব মধ্যযুগীয় আইনের চেয়ে ভালো মানের আইন এবং শাস্তির ব্যবস্থা আছে ।
যে বেটা চোর সেও চাইবেনা সমাজে চুরি বেড়ে যাক, কেননা তাতে তার চুরি করা মালের হেফাজত হবেনা।
যাহোক, কেউ চুরি করলে তার হাত্ কেটে দিতে হবে এসব বর্বর আইনের কোন মানে হয়না এখন ।
কেননা কেউ চুরি করে কোণ অন্যায় করলে তার হাত কেটে দিলে সে পরবর্তি জীবন কিভাবে কাটাবে?
সুতরাং এসবের কোন দরকার নেই ,তারচেয়ে বরং এখন জেলের ব্যবস্থা আছে ।যেখানে অন্যায়কারীদের সাজা দিয়ে শূধ্রানোর সুযোগ আছে ।
৪.বিয়ের ব্যবস্থা ইসলামের জন্মের আগে থেকেই সমাজে প্রতিষ্টিত ছিল , এখনো আছে ।সুতরাং এটাতে ধর্মের মোড়ক লাগানোটা আগাগোড়া বোকামি।
কেউ স্বেচ্চায় মিলিত হলে সেখানে কারো কোন শারিরীক ক্ষতি হয়না , বরং যেটাতে ক্ষতি হয় সেই ব্যাপারে মানে ধর্ষনের ব্যাপারে ইসলামে কোন ভুমিকা নেই ।যেটা আছে সেটা অমানবিক ।
৫.আপনি দাবী করছেন ইসলামে কোন মানুষ হত্যা সমর্থন করেনা , অথচ আপনার ধর্মীয় মেনিফেস্টোতেই ডিরেক্টলি হাজারবার বলা হয়েছে মানুষ হত্যার কথা ।এবং সেটা কেবলমাত্র ইসলামে অবিশ্বাস করলেই ।
৬. ঘুষ অন্যায় সেটা আপনার ইসলামের থেকে শেখার কোন দরকার নেই ।
যেসব দেশে ইসলাম তথা কোন ধর্ম ই নেই তারা আপনাদের চেয়ে এসব বিষয়ে ভালো পারদর্শী ।
এই যুগে এসে এটা শিখতে কাউকে ধর্মের প্যাকেটে ঢোকার দরকার নেই ।
৭.মানুষ = মান + হুশ , অর্থাৎ সবাই ই সামাজিক ভাবে বাস করতে চায় ।
কিন্তু ইসলামে সেটার নামে পুরুষকে আগলা রেখে নারীকে বস্তা বন্দি এবং গৃহ বন্দী করে যে ভূমিকা পালন করেছে সেটা কোনক্রমেই গ্রহনযোগ্য নয়।
৮.ইসলামে বলছে অন্যের সম্পত্তি দখল করলে সেটা আগুন ভক্ষনের সমান ।
খুব ভালো কথা , কিন্তু আমরা ইসলামের ইতিহাস থেকে দেখতে পাই সেই ইসলামের এজন্টরাই অন্যের সম্পত্তি দখল করে ভোগ করেছে ।
৯.আগেও বলেছি মানুষ সামাজিক জীব।
কেউই সমাজে বা প্রকাশ্যে লেংটা হয়ে বেড়াতে চাইবেনা ।
কিন্তু আপনারা সেটার ( পর্দার)( নামে নারীকে যেভাবে গৃহবন্দী এবং বস্তাবন্দি করে রেখেছেন সেটার কোন গ্রহনযোগ্যতা নেই।
কোন সন্তানকে জন্মের পরে মানবিকভাবে শিক্ষা দিয়ে গড়ে তুললে সেই সন্তানে কখোনই কোন নারীকে অসম্মান করবেনা ।অথচ ইসলামে কেবলমাত্র নিজের মা ব্যতীত সমস্ত নারীকেই পুরুষের চাষযোগ্য সম্পত্তি বা গনিমতের মাল মনে করে ।
১০. ইসলামে যাবতীয় মাদক দ্রব্যকে নিষিদ্ধ করেনি, নেশাবস্তুকে নিষিদ্ধ করেছে ।সব মাদকে নেশা তোইরি করেনা ।
তাছাড়া পৃথিবীতে যেটাকে ইসলামে হারাম করা হয়েছে মরার পরে সেটা দিয়েই এপ্রোচ করার অফার দেওয়া হয়েছে ।
১১.ইসলামে বলছে মানুষের মাঝে সাদাকালো ধনী গরীবের কোন ভেদাভেদ নাই।
তবে এখানেও একটা শর্ত লুকিয়ে আছে ।
আর সেটা হচ্ছে এটা কেবলমাত্র মুসলমানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে ।এর বাইরে নয় ।
তাহলে এবার আপনিই সিদ্ধান্ত নেন যে, এই আধুনিক সময়ে এসে , সু শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে কেন ঐ মধ্যযুগীয় অপরিবর্তনীয় প্যাকেটের মধ্যে ঢুকতে হবে ?
No comments