Header Ads

Header ADS

সহী ইসলামী সৃষ্টিতত্ত্ব। জাকির নায়েক ও আরিফ আজাদের কুযুক্তির দাত ভাঙ্গা জবাব ।

সহী ইসলামী সৃষ্টিতত্ত্ব,
প্যারাসিট্যামল সাজিদের আরিফ আজাদ এবং জাকির নায়েকের কুযুক্তির দাতভাঙ্গা জবাবঃ

Image result for সৃষ্টিতত্ব

অনেককেই দেখি ইদানীং তাদের কুরানকে বৈজ্ঞানিক কুরান বানাতে গিয়ে কাফেরদের তৈরি বা কাফেরদের আবিস্কার বিগ ব্যাঙ্গের সাথে কুরানকে মেলানোর জন্য লাইন ক্ষ্যাপা ধরে গেছে ।
অথচ তারা জানেনা যে বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল, আর কুরান অপরিবর্তনীয়।
আজ যারা বিজ্ঞানের বিগ ব্যাঙ্গের সাথে কুরানের সাদৃশ্য করতে গিয়ে ,কুরানের মহত্ব,অলৌকিকতা দেখাতে গিয়ে বা প্রচার করে মুসলমান কিংবা অমুসলিমদেরকে কুরানের প্রতি আকৃষ্ট করতে গিয়ে বিজ্ঞানের সাথে মেলানোর চেষ্টা করছে তথা মহাবিশ্বের সৃষ্টির সাথে বিজ্ঞানের বিগ ব্যাঙ্গের সাথে তাল মেলানোর চেষ্টা করছেন তারা দুদিন বাদেই আবার নতুন করে কি সুর তুলে বসবেন যখন বিজ্ঞান বলবে মহাবিশ্ব বিগ ব্যাঙ্গের মাধ্যমে নয় ছোট ব্যাঙ্গের মাধ্যমেই হয়েছে বা অমুক তমুকের মাধ্যমেই হয়েছে ?
তখন কি আপনাদের বা আমাদের মুসলমানদের আরো বেশি লজ্জা এবং অপমান অপদঃস্থ হতে হবেনা ?
তখন কি তারা আমাদের নিয়ে আরো বেশী ব্যাঙ্গ তামাশা করবেনা?
তখন আপনারা কি বলবেন ?
তাই আপনারা অতি রঞ্জিত হয়ে বিজ্ঞানের আবিস্কারের সাথে কুরানের সাদৃশয় দেখিয়ে কুরানের মহত্ব প্রকাশের চেষ্টা না করে বরং বিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের যায়গায় এবং কুরানকে কুরানের যায়গায় থাকতে দিন ।


মুসলিম উম্মাহ আজ সৃষ্টির সূচনাকে কিভাবে বিশ্বাস করে? তারা কাফির মুশরিকদের শেখানো কাল্পনিক শয়তানি তত্ত্ব-বিগব্যাংকে গ্রহন করে নিয়েছে। অবস্থাটা এরূপ দাঁড়িয়েছে যে, বিগব্যাং এর বিকল্প হিসেবে তারা আজ অন্য কিছুকে চিন্তা করতে পারে না। অথচ বিগব্যাং তত্ত্বটির আনুষ্ঠানিক প্রবক্তা একজন ক্যাথলিক পাদ্রী (লেমাইত্রে)। আপনাদেরকে পূর্বে দেখিয়েছি ক্যাথলিকরা কিরূপ রোমান পৌত্তলিকতা দ্বারা আচ্ছন্ন। যাহোক, বিগব্যাং এর গোড়া খুঁজলে বের করলে  দেখা যায় এর মূল উৎস হচ্ছে কাব্বালিস্টিক স্যাটানিক টেক্সট। বিভিন্ন অকাল্ট কমিউনিটিতে এই তত্ত্বটিকে (বিগব্যাং) তাদের প্রাচীন (শয়তানি) জ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রকাশ করা হয়। বৈদিক দর্শন এবং পিথাগোরিয়ান কুফরি দর্শন গুলোকে যৌক্তিক ভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে বিগব্যাং অত্যন্ত শক্তিশালী ভিত্তি। ওদের কুফরি দর্শনের পূর্নতা দানের জন্য বিগব্যাং এর পাশাপাশি বিগক্রাঞ্চও আছে। অর্থাৎ একসময় সম্প্রসারনশীল মহাবিশ্ব সংকুচিত হয়ে আসা শুরু করবে। এবং একপর্যায়ে আবারো সেই এক বিন্দুতে চলে আসবে। শেষ যুগের অভিশপ্ত কাফিরদের শয়তানি আকিদাকে বৈজ্ঞানিকভাবে সাইক্লিক্যাল অসোটেলিং ইউনিভার্স থিওরিসহ বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। আমি কুফরি দর্শনগুলো বিস্তারিত এখানে আলোচনা করা থেকে বিরত থাকছি।

আজকে এই বিগব্যাং থিওরিকে অধিকাংশ মুসলিমরা গ্রহন করেছে। অগনিত আলিম এতে বিশ্বাস রাখে। তারা এই শয়তানি তত্ত্বটিকে যথাসম্ভব ইসলামাইজ করে নিয়েছে। আলিম, দাঈরা গর্বের সাথে এই কথাও বলছে ১৪০০ বছর আগে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বিগব্যাং এর কথা কুরআনেই বলে দিয়েছেন! দলিল দিচ্ছে সূরা আয যারিয়াতের ৪৭ নং আয়াত এবং ২১ঃ৩০। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কি এই বিগব্যাং এর দ্বারাই আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন? বিগব্যাং কস্মিক প্লুরালিজম, স্পেস বা মহাশূন্য,কোটি কোটি গোলাকৃতির গ্রহ, অভিকর্ষ, মহাকর্ষ, ছায়াপথ, নীহারিকার কাল্পনিক অস্তিত্বকে যৌক্তিকভাবে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আল্লাহর বলা সৃষ্টিতত্ত্বটি কি এইরূপ যেটা কাব্বালিস্টিক মেইনস্ট্রিম মহাকাশ বিজ্ঞান থেকে বলা হচ্ছে? নাকি দুটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ধারনা!?

বস্তুত, উভয় বর্ননা সম্পূর্ন ভিন্ন এবং এইরূপ ভিন্নতা যে, যেন তা পরস্পর দুমেরুর। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ছয়দিনে সাত আসমান ও সাত জমিনকে স্তরে স্তরে নির্মান করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা একদমই তা বলেন নি যা আজকের সায়েন্স নামের অপবিজ্ঞান বলছে। আল্লাহর সৃষ্ট আসমান বিগব্যাং এর ফলে হওয়া ইনফিনিট শূন্য (কথিত স্পেস) নয় বরং একটির উপর আরেকটি সাতটি গম্বুজাকৃতির সলিড স্তর, আদৌ অদৃশ্য বা অস্পৃশ্য নয়। আর জমিন বা পৃথিবী আদৌ মহাশূন্যে ছুটন্ত গোলক নয় বরং জমিন তথা পৃথিবী হচ্ছে একটির উপর আরেকটি (মোট ৭টি) সমতল দ্বীপ সদৃশ জমিন। আমাদের অবস্থান প্রথম জমিনে যার উপর সাতটি মজবুত আসমানের স্তর রয়েছে। আর আমাদের পায়ের নিচের দিকে আরো ছয়টি সমতল (পৃথিবী)জমিন সদৃশ স্তর বিদ্যমান। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা সর্বপ্রথম পৃথিবীকে সৃষ্টি করেন এরপর সাত আসমান (বিগব্যাং থিওরির বিপরীত)। এটাই কুরআন সুন্নাহ, সাহাবীদের শিক্ষা। এবং সুনিশ্চিতভাবে এটা আজকের দাজ্জালের অনুসারী বিজ্ঞানী তথা ন্যাচারাল ফিলসফারদের বিপরীত তত্ত্ব। অথচ আজ এই সম্পূর্ন বিপরীত মেরুর অপবিদ্যাকে ইসলামাইজ করে সবার সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত আকিদায় প্রবেশ করানো হয়েছে। কাফিররা চায়, দুনিয়ার সমস্ত লোকেরা ওদের ন্যায় কুফরি আকিদা গ্রহন করুক,সেটা যেভাবেই হোক। এই বিষয়গুলো প্রকাশ করার জন্য আজ অধিকাংশ মুসলিমই আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করছে। সুবহানআল্লাহ!

৬ দিনে সৃষ্টিঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ৬ দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেন। আল্লাহ বলেনঃ
নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক (আরাফঃ৫৪)
আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে বিরাজমান হয়েছেন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না? (সিজদাহ ৪)

ছয়দিনে সৃষ্টির বিষয়টি শুধু কুরআনেই নয় তাওরাতেও ছিল। এখনো আছে, কিন্তু ওরা সামান্য পরিবর্তন করেছে। ওরা বলে আল্লাহ ছয়দিনের সৃষ্টির শেষে বিশ্রাম গ্রহন করেন! নাউজুবিল্লাহ!! এই কথা আল্লাহর রাসূল (সাঃ) সামনেও বলেছিল, যা শুনে তিনি প্রচন্ডভাবে রাগান্বিত হন। ওদের বানোয়াট মিথ্যাচারীতা খন্ডন করে নিচের আয়াতটিঃ

আমি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃষ্টি করেছি এবং আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি (ক্কাফ ৩৮)
তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। [হাদীদঃ০৪]

ছয়দিনে সৃষ্টির ব্যপারে আরো দলিলঃ
নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরী করেছেন আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি কার্য পরিচালনা করেন। কেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না ? [ইউনুস ৩]
তিনিই আসমান ও যমীন ছয় দিনে তৈরী করেছেন, তাঁর আরশ ছিল পানির উপরে, তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান যে, তোমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। আর যদি আপনি তাদেরকে বলেন যে নিশ্চয় তোমাদেরকে মৃত্যুর পরে জীবিত ওঠানো হবে, তখন কাফেরেরা অবশ্য বলে এটা তো স্পষ্ট যাদু! (হুদঃ৭)
তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃস্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি পরম দয়াময়। তাঁর সম্পর্কে যিনি অবগত, তাকে জিজ্ঞেস কর (ফুরকানঃ৫৯)
এই ছয়দিনের সৃষ্টির বর্ননা আদৌ বিগব্যাং থিওরি নয় যেটা আজকের মডারেট মুসলিম থেকে শুরু করে প্রায় সবাই সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করে। বরং এই সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পূর্ন ভিন্ন এবং বিগব্যাং তত্ত্বের বিপরীত। এই কথা আমরা বারবার বলছি। বিগব্যাং তত্ত্বানুযায়ী মহাবিস্ফোরণের দ্বারা ভ্যাকুয়াম মহাশূন্য (যেটাকে আকাশ বলা হয়) সৃষ্টি হয়, এই মহাকাশ সৃষ্টির বিলিয়ন ট্রিলিয়ন বছর পর বিলিয়ন মিলিয়ন পৃথিবীর মত গোলাকৃতি পাথুরে বা গ্যাসের দলা ঠান্ডা হয়ে গ্রহ নামের কিছু জিনিসের সৃষ্টি হয়, এরকম কোটিকোটি গ্রহের একটি হচ্ছে পৃথিবী। এই অপোজিট অল্টারনেটিভ সৃষ্টিতত্ত্বে আসমান মানে অনন্ত শূন্যস্থান। সলিড কিছু নয়। অপবৈজ্ঞানিক তত্ত্বানুযায়ী মহাকাশ সর্বপ্রথম একাএকা সৃষ্টি হয় মহাবিস্ফোরণের দ্বারা এরপর বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পর কোটি কোটি সূর্যের মত তারকা এবং এর চারপাশে অস্থিরভাবে ঘুর্নায়মান গ্রহ,উপগ্রহ। সেই সোলার সিস্টেমও দৌড়াচ্ছে,ছায়াপথ হচ্ছে গ্রহনক্ষত্রকে ধারনকারী। সেটাও ছুটে চলছে।
অথচ কুরআনিক কস্মোজেনেসিস একদম ভিন্ন কিছু। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সর্বপ্রথম পৃথিবী সৃষ্টি করেন।এরপর পৃথিবীর পর আসমানকে ছাদ হিসেবে সৃষ্টি করা হয়। যেমনটা অট্টালিকার ভিত্তি প্রস্তুতের পরে ছাদ নির্মান করা হয়। আল্লাহ বলেনঃ
তিনিই সে সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত। তারপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবহিত। (বাকারাঃ২৯)
আসমানের আগে পৃথিবী সৃষ্টির বিষয়টি বিগব্যাং থিওরির মিথ্যাচারীতা এবং আধুনিক মুসলিমদের অপব্যাখ্যাকে প্রকাশ করে দেয়। মাছের পিঠে যমীন ও আসমানকে রাখার বিষয়টিও অপবিজ্ঞান পরিপন্থী বিষয়। নাসার প্রকাশ করা পৃথিবীর (ভুয়া) ছবি গুলোতে এরকম কিছুই দেখা যায় না,কিন্তু হলিউডের Color of magic ফিল্মের শুরুতে ঠিকই ডিস্ক ওয়ার্ল্ড কচ্ছপের পিঠে দেখানো হয়। সত্যের ব্যঙ্গাত্মক প্রকাশও হতে পারে, আল্লাহু আলাম। যারা কাফিরদের বিগব্যাং তত্ত্বকে ইসলামাইজ করেছে,তাদের নিকট প্রশ্ন, বিগব্যাং থিওরিতে কিভাবে পৃথিবীকে মহাশূন্য বা মহাকাশ ছাড়াই সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয়েছে, এটা তো বিগব্যাং এর সাথে বৈপরীত্যপূর্ন সাংঘর্ষিক বর্ননা!? তারা এখন কিরূপ অপব্যাখ্যার দ্বারা ইসলাম ও কুফরকে সমন্বয় করবে?
ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ তার আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে বলেনঃ
প্রথমাবস্থায় আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী কোনরূপ ফাঁকা স্থান ছিল না। পরস্পর ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। এমনকি আসমান-জমিনকে সাত স্তরেও বিভক্ত করা হয়নি। পরবর্তীতে আসমান ও জমিনকে পৃথক করে, আসমানকে সাত স্তরে বিভক্ত করা হয়।
আল্লাহ বলেনঃ কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে, অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না? আমি পৃথিবীতে ভারী বোঝা রেখে দিয়েছি যাতে তাদেরকে নিয়ে পৃথিবী ঝুঁকে না পড়ে এবং তাতে প্রশস্ত পথ রেখেছি, যাতে তারা পথ প্রাপ্ত হয়। আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে। তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে (আম্বিয়াঃ৩০-৩৩)
অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এর বর্ননা খুবই স্পষ্ট। আসমান এবং জমিন উভয়ই সলিড অবজেক্ট। যা সর্বপ্রথম একত্রে মিশে ছিল, পরবর্তীতে আল্লাহ উভয়কে পৃথক করে উভয়ের মাঝে ফাঁকাস্থান সৃষ্টি করেন। এবং আসমানকে ফেড়ে সাতটি স্তরে বিভক্ত করে পৃথিবীর ছাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। অতঃপর চাঁদ সূর্য নক্ষত্রমালা এবং দিন রাত্রিকে সৃষ্টি করেন যারা প্রত্যেকের নির্ধারিত ফালাকে আবর্তন করে।যারা বিবর্তনবাদী শয়তানি বিজ্ঞানকে ইসলামের সাথে মিশ্রিত করছে, তারা কি করে এটা সমন্বয় করছে যে, (প্রচলিত তত্ত্বানুযায়ী) নন সলিড শূন্য আকাশ (ভ্যাকুয়াম) জমিনের সাথে মিশে ছিল। সেই ফাঁকা স্থান বা এম্পটি স্পেস আবার আলাদাও করা হল! যারা কুরআন আর অপবিজ্ঞানের মধ্যে সমন্বয় সাধন করছে দাওয়ার নামে এরা শুধু অপব্যাখ্যাই করেনি, বরং কুরআনের আয়াত গুলোকে অর্থহীন করে তুলছে। কারন দুইটা ভিন্ন জিনিসকে এক করার চেষ্টা করে খিচুড়ি বানিয়ে ফেলেছে। আমরা যেরূপে সমস্ত দলিল গুলো একের পর এক প্রকাশ করছি, এরূপ করে যদি কুফর-ঈমানের মাঝে অবস্থানকারী মুসলিমরা অপব্যাখ্যা আর গোঁজামিল দিয়ে আধুনিক অপবিজ্ঞানকে সমন্বয় করতে চেষ্টা করত, তাহলে ওদের ভাঁওতাবাজি সহজেই প্রকাশ পেত। কিন্তু ওরা এটা কখনোই করবে না, বরং বিচ্ছিন্নভাবে আয়াত গুলোকে নিজের মত অনুবাদ করে অপব্যাখ্যা করবে।
আফসোসের বিষয় হচ্ছে, যে আয়াত (২১:৩০) বিগব্যাং এর ভুয়া তত্ত্ব থেকে আল্লাহর সৃষ্টির পবিত্রতা ঘোষনা করে, সেই আয়াতকেই ওরা বিগব্যাং কে সত্যায়নের দলিল হিসেবে ব্যবহার করে। ইন্না লিল্লাহ। এজন্য যারা কুরআন হাদিসে বর্নিত কস্মোলজির সম্পর্কে জ্ঞানহীন তারা অপব্যাখ্যাকেই সত্য বলে ভাবতে শুরু করে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আসমান জমিনকে ঘোরাঘুরি বা আবর্তন উপযোগী করে সৃষ্টি করেন নি। বরং আসমান জমিন স্থির। আল্লাহ আসমানকে আমাদের উপরে গম্বুজাকৃতির ছাদ এবং জমিনকে বিছানার ন্যায় বিছিয়েছেন। পাহাড়কে স্থাপন করেছেন কীলকরূপে সমতল জমিন স্থির রাখার জন্য যাতে তা এদিক ওদিক কাত হয়। বড় আফসোসের বিষয় হচ্ছে কুরআন সুন্নাহর বিকৃত ব্যাখ্যাকারীরা সূরা আম্বিয়ার ৩৩ নং আয়াতকে ব্যবহার করে স্থির জমিনকে ঘূর্নয়মান চলমান প্রমানের জন্য। কারন তাদের নীতি অনুযায়ী, কাফিরদের প্রচলিত এ বিজ্ঞান অনুযায়ী দ্বীনকে খাপ খাওয়াতে হবে। তারা সবাই শব্দের ভেতর জমিনকেও অন্তর্ভুক্ত করে, অথচ স্পষ্টভাবে দেখছেন আল্লাহ এই সবাই বলতে দিন-রাত্রি, চন্দ্র-সূর্য এ চারটি জিনিসের কথা বলেছেন।
এবার আসুন, সূরা আম্বিয়ার এ আয়াতসমূহের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির (রঃ), প্রাচীন আলিম, মুফাসসীরিন এবং সাহাবীরা সবাই আসমান জমিনের ব্যপারে সেই অভিন্ন সত্য কথা বলছেন, যার বর্ননা আমরা করছি। মহাবিস্ফোরণের ন্যায় কিছুই ঘটে নি, যা কাফিররা বিশ্বাস করতে বলে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সবই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। সর্বপ্রথম আসমান ও জমিন একত্রিত ছিল। সাহাবীদের বর্ননানুযায়ী উভয়ই বস্তু একে অপরের সাথে সংযুক্ত ছিল। অতঃপর আল্লাহ তা পৃথক করে আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী ফাঁকাস্থান তৈরি করলেন।আসমানকে ফেড়ে সাত স্তরে বিভক্ত করলেন। প্রথম আসমান থেকে জমিনের ফাঁকা স্থানটি ৫০০ বছরের পথের সমান দীর্ঘ। আল্লাহ আসমান ফেড়েঁ বর্ষন করলেন।
আজকের বিজ্ঞান বলে আসমান বলতে অন্তহীন শূন্য অথচ আল্লাহ আসমান জমিনের মধ্যকার শূন্যস্থান সৃষ্টি করেছেন। আসমান যদি সত্যিই শূন্যস্থান হত তাহলে সাহাবীরা (রাঃ), প্রাচীন মুফাসসিরীন কখনোই আসমান জমিন পৃথক করে মাঝে শূন্যস্থান নির্মানের কথা বলতেন না। আসমানকে পৃথক করার প্রশ্নও আসতো না, কারন যেহেতু আসমান মানেই শূন্য। শূন্যতা বা ফাকাস্থানকে জমিন থেকে পৃথক করে আবারও ফাকাস্থান তৈরির চিন্তা একদমই অর্থহীন। তাফসিরেও একই কথা যে, পর্বতের দ্বারা যমীনকে স্থির করা হয়েছে। আসমানকে তাবু বা বেনার ন্যায় স্তম্ভ ছাড়াই স্থির রাখা হয়েছে। আসমান হচ্ছে তরঙ্গায়িত সুউচ্চ ছাদ যা আমাদের জন্য বন্ধ (যদিও থিয়েটারে/কম্পিউটারে বানানো চাঁদে মঙ্গলে যাওয়ার ভিডিও মানুষ সত্য বলে বিশ্বাস করে)। আর আম্বিয়ার ৩৩ নং আয়াতে উল্লিখিত ৪ টি জিনিস ছাড়া অন্যকিছুকে আবর্তনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
পৃথিবীকে সর্বপ্রথম সৃষ্টি এবং এর পরবর্তীতে আসমানকে সপ্তস্তরে বিভক্তকরনের দলিল হিসেবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেনঃবলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থীর কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা। তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন-পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম। অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা [হা মীম সেজদাহঃ৯-১২]
এ আয়াতসমূহের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসিরের (রহঃ) তাফসীরে এসেছেঃ সুতরাং, এটা স্পষ্ট যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সর্বপ্রথম ২ দিনে জমিনকে (পৃথিবীকে) সৃষ্টি করেন। পরের দুইদিন আসমানকে সপ্তস্তরে সজ্জিত করেন। এরপর আরো দুইদিনে জমিনকে বিছানার ন্যায় সমতলে বিস্তৃত করেন, বসবাস উপযোগী করেন, পানি,গাছপালা, পর্বত স্থাপন করেন। নিকটতম (১ম) আসমানকে তারকারাজি দ্বারা সুসজ্জিত করেন। এরমানে তারকারাজি প্রথম নিকটতম আসমানেই রয়েছে। কিন্তু বিবর্তনবাদী অপবিজ্ঞান আমাদের শোনায়, এই তারকারা সর্বত্র আর এরা সূর্যের মত আলো দান কারী। তারকা-চন্দ্র-সূর্য নিয়ে সামনে বিস্তারিত আসছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর কাছে আগত ব্যক্তির প্রশ্ন (আসমান আগে নাকি জমিন আগে) টি অবশ্যই ভাল করে পাঠ করেছেন। তার সাথে শতভাগ ঐক্যমত পোষন করি। আর তিনি যা বর্ননা করেছেন, তা সুস্পষ্টভাবে মেইনস্ট্রিম কস্মোলজিকে ভ্রান্ত প্রমান করে। উমার (রাঃ) সত্য বলেছেন, ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর কুরআনের জ্ঞানই সর্বাধিক। বর্তমানে সাহাবিদের(রাঃ) ব্যাখ্যার বিপরীতে যে যাই বলুক সবই ভ্রান্ত এবং বর্জনীয়।

ইবনু আব্বাস (রাঃ) যে ব্যাখ্যাটি দিয়েছেন, তার নির্ভুলতার দলিল মেলে নিন্মোক্ত আয়াতেঃ তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন? তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন। তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন। পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন। তিনি এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন, পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। [আন নাযিয়াতঃ ২৭-৩২]

অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যমীনকে বিস্তৃতকরন বা সমতলায়নের কাজটি আসমানকে সপ্তস্তরে বিন্যাস্ত করবার পর করেন। আফসোসের বিষয় যে আয়াত দ্বারা রহমান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা জমিনকে বিস্তৃত ও সমতলভাবে বিছানোর কথা বলেন, কাফিরদের মতাদর্শের সাথে মিল রাখার জন্য এই আয়াতকেই আজকের মুসলিমরা ব্যবহার করে। তারা কাল্পনিক গোলাকার  পৃথিবীর দলিলরূপে আন নাযিয়াতের ৩০ নং আয়াতকে ব্যবহার করে। তারা دَحَاهَا শব্দটিকে অপব্যাখ্যা করে বলে পৃথিবী উটপাখির ডিমের ন্যায়। তারা এই ডিম্বতত্ত্বটি গ্রহন করে রাশাদ খলিফা নামের নবী দাবিকারী মুর্তাদের থেকে। এর চেয়ে নিকৃষ্ট কাজ আর কি হতে পারে! দাহাহা শব্দটির অর্থ বিস্তৃত করা। দাহাহা শব্দটির দূরবর্তী শব্দের অর্থটিকেও যদি গ্রহন করা হয় তবে এর দ্বারা বোঝায় উটপাখি ডিমপাড়ার জন্য অসমতল ভূমি পা দিয়ে আঁচড়ে যেভাবে বিস্তৃত করে ঐরূপ। এর সাথে ডিমের কোন সম্পর্ক নেই। উটপাখির এই কাজটিকেও যদি আয়াতের অর্থের সাথে সংযোগ করা হয়, তবে অর্থ দাঁড়ায় পৃথিবী বিস্তৃত সমতল!
ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহর তার তাফসিরে বলেনঃ
অর্থাৎ তিনি জমিনকে বিস্তৃত করেন এবং পর্বত স্থাপনের দ্বারা স্থির ও নিশ্চল করেন। আল্লাহ আসমানকে সপ্তস্তরে বিন্যাস্ত করেন এবং নিকটতম আসমানের গায়ে নক্ষত্রদের বসিয়ে দেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা জমিনের ন্যায় আসমানকেও স্থির রাখেন এবং সেটা ভূপৃষ্ঠে পতিত হওয়া থেকে রক্ষা করেন। 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেনঃ তুমি কি দেখ না যে, ভূপৃষ্টে যা আছে এবং সমুদ্রে চলমান নৌকা তৎসমুদয়কে আল্লাহ নিজ আদেশে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন এবং তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যাতে তাঁর আদেশ ব্যতীত ভূপৃষ্টে পতিত না হয়। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল, দয়াবান।(হাজ্জ্ব ৬৫)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা গম্বুজাকৃতির সমুন্নত ছাদকে স্বীয় অনুগ্রহে স্থির রাখেন, এবং যমীনের উপর পতন রোধ করেন। আশা করি, পাঠকদের আর কোন সন্দেহ নাই, আসমানের ব্যপারে। এই আয়াতটি আবারো বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত মিথ্যা কস্মোলজিকে মিথ্যা প্রমান করে। এই আসমান মানে মহাশূন্য নয়। মহাশূন্য বলে বস্তুত কিছুই নেই। সবই কল্পনা। আসমান বলতে এটাই যেটা আমরা আমরা উর্ধ্বলোকে দেখতে পাই । যমীন বলতে এই আমাদের সমতলে বিছানো যমীনই, এর বাহিরে কিছু নেই। গ্রহ বলতে কল্পনা ব্যতিত কিছুই নেই। আসমানি ছাদ যদি আল্লাহর ইচ্ছায় পতিত হয় তবে তা এই ভূপৃষ্ঠেই পড়বে। সৃষ্টির শুরুতে এটা মাটির সাথে লেগে ছিল, পরবর্তীকালে আসমানকে উর্ধ্বে স্তম্ভব্যতিত দ্বার করানোর দ্বারা মধ্যবর্তী ফাঁকাস্থান তৈরি করা হয়, যার ভেতর আমরা আছি।
আজকের লেখার মাধ্যমে সত্যিকারের সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যপারে সম্পূর্নভাবে প্রকাশ হয়েছে। সেই সাথে স্পষ্ট হয়েছে যাবতীয় অপব্যাখ্যা এবং অপবিজ্ঞানের বিষয়গুলো। প্রকৃত সত্য এটাই যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে জানিয়েছেন তার পবিত্র কালামের দ্বারা এবং যার বিস্তারিত ব্যাখ্যা সাহাবীদের থেকে পাওয়া গেছে। প্রাচীন যুগের প্রকৃত জ্ঞানী আলিমগন সাহাবিদের থেকে ভিন্ন মনগড়া তাফসিরে যান নি,যেমনটা এ যুগের আলিমদের পাওয়া যায়। গ্রীক দর্শন আরবে প্রবেশের পরবর্তী সময় থেকে সব বদলে যেতে শুরু করে। যারা কুফরি দর্শনের ব্যপারে লেখালিখি করেছেন, তাদেরও অনেকে সৃষ্টিতত্ত্বে এসে গ্রীকচিন্তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। আলিমদের মধ্যে যে বা যারা অনিচ্ছাকৃতভাবে সেসব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন তাদের প্রতি আমরা বিদ্বেষ পোষন করিনা। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রেসীয়ান-পিথাগোরিয়ান কস্মোলজিকে গ্রহন করেছেন তাদের ব্যপারেও সুধারনা রাখার চেষ্টা করি, আমরা মনে করি তারা নেহাৎ নিরুপায় হয়ে এমনটা করেছেন, কেননা বিজ্ঞানকেন্দ্রিক ফিতনাহ ওই যুগ থেকেই শুরু। অপবিদ্যার আগমনে, হক্ক জ্ঞানকে পিছনে ঠেলে দেওয়া শুরু হয়, ভ্রান্ত-কুসংস্কারাচ্ছন্ন তত্ত্বের নাম দিয়ে। হতে পারে সমকালীন আলিম সম্প্রদায় তখন থেকেই নিরুপায় হয়ে ইল্মুল কালাম অনুযায়ী যুক্তিসিদ্ধতার দিকে লক্ষ্য রেখে জিনিস গুলোকে গ্রহন এবং ইসলামিকীকরনের চেষ্টা করেছেন। গত পর্বেই দেখেছেন, ইবনু কাসির (রহঃ) জ্যোতির্বিদদের কথা ইসলামের দলিল দ্বারা খন্ডন করেছেন, হয়ত আলিমদের একটা দল এভাবে খন্ডন করে টিকতে পারেন নি বরং ইসলামের সাথে সমন্বয়ের দিকে গিয়েছেন। অথবা নেহাৎ অন্তরের ব্যাধির দরন কাফিরদের মিথ্যা ইল্ম তাদের নিকট সুশোভিত মনে হয়েছে এবং গ্রহন করেছেন। এটা আজকের যামানায় খুব সাধারন দৃশ্য। যারা এরূপ করছে, তাদেরকে দেখবেন, এ সমস্ত দলিল সমূহ তাদের সামনে পেশ করা হলে এসব বর্ননা সহীহ কিনা তা যাচাইয়ের দিকে যাবে, কারন তারা অন্তর থেকে এগুলো মানে না। এরা তাদের ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক নিঃসৃত যুক্তি দ্বারা সব কিছু বুঝতে চায় এবং মানতে চায়। অথচ মূল দলিল গুলো কুরআনেই আছে। তারা এসবকে রূপক বর্ননা বলে এড়িয়ে যায়, পাশে যুক্তিনির্ভর দূরবর্তী অপব্যাখ্যার বিদ্যা এদের ভালই জানা আছে।
(লিখেছেনঃ একজন মাদ্রাসা পাশ করা বিজ্ঞানী)



No comments

Powered by Blogger.