কত বছর পিছিয়ে আছে আমাদের মানসিকতা?
কতো_বছর_পিছিয়ে_আছে_আমাদের_মা নসিকতা? 
১৯৯০ সালে সাউথ কোরিয়া সিদ্ধান্ত নিলো তারা নিজেদের প্রযুক্তিতে ব্যাটেল ট্যাঙ্ক বানাবে । আমেরিকা কিংবা রাশিয়ার উপর নির্ভর করবে না । অনেক চেষ্টা আর গবেষণার পর তারা যে জিনিস বানালো সেটার নাম K2 ব্ল্যাকপ্যান্থার মেইন ব্যাটেল ট্যাঙ্ক ( MBT) । ২০১২/ ১৩ সালে এই ট্যাঙ্ক যখন সবার নজরে আসে তখন দেখা গেলো এটা জার্মানীর লিওপার্ড ট্যাঙ্কের সাথেও টেক্কা মারতে পারে । ইসরাইলের মারাকভ ট্যাঙ্ক থেকেও বেশি গতি সম্পন্ন । আমেরিকার আব্রাম ট্যাংক থেকেও অধিক শক্তিশালী । রাশিয়ার T-72 থেকেও বেশি কার্যকর ।
চীন চিন্তা করলো শুধু অধিক জনসংখ্যা নিয়ে ইকোনোমিক টেক্কা দিলেই হবে না । টেক্কা মারতে হবে প্রযুক্তির দিক দিয়েও । এগিয়ে যেতে হবে যুদ্ধাস্ত্রেও । আজকে চীনের পন্য দিয়ে এশিয়া মহাদেশ সয়লাব হয়ে গেছে । আমেরিকা আর রাশিয়ার সাথে টেক্কা মারার জন্য তারা তৈরি করলো ডংফেং ক্ষেপণাস্ত্র ,যেটা আমেরিকার মাটিতে আঘাত করতে সক্ষম । চেংডু J-10 নামে এমন জঙ্গি বিমান বানালো যেটা সব ধরনের আবহাওয়ায় আক্রমন পরিচালনা করতে পারে । আমেরিকানরা চাইনিজ পন্য গুনে না দেখলেও চাইনিজ ট্যাঙ্ক গোনায় ধরে । সিঙ্গেল থ্রাস্টার j-10 বিমান দেখলে তারা ঠাণ্ডা হয়ে যায় ।
জার্মানী চিন্তা করলো , আমার ট্যাঙ্ক গুলো অতি পুরাতন মডেলের । তারা ইসরাইলের সাথে চুক্তিতে আসলো । জার্মান ট্যাঙ্কে যে মিসাইল ইন্সটল করা হয় সেটা হইলো ইসরাইলের তৈরি ""LAHAT '' মিসাইল । এভাবে তারা নিজেদের আপগ্রেড করে নিলো ।
জাপানের চিন্তা ভাবনা ডিফেন্সিভ । তারা চিন্তা করলো আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি । আমাদের জেনারেশন হবে জ্ঞানের কান্ডারী । এই কারনে আমেরিকার নামকরা ভার্সিটি গুলোতে দেখবেন ,প্রচুর জাপানী শিক্ষার্থী আছে । জাপানী প্রফেসরও পাবেন অনেক ।
পাকিস্তান ঘাস খেয়ে এটম বোমা বানানোর স্বপ্ন দেখেছিল । ১৯৭২ সালে দেখা সেই স্বপ্নটা তারা এসে পূরণ করেছে ১৯৯৮ সালে । এটম বোম বানিয়েই ছেড়েছে । তারা শিক্ষার্থীদের নিউক্লিয়ার সাইন্সে উন্নত করছে । উন্নত করছে গবেষণায় । চীনের সাথে মিলে তৈরি করছে ফাইটার জেট ।
ভারতীয় সিরিয়াল নিয়ে হাজার হাজার ট্রল করলেও এটা মেনে নেন তাঁদের ইয়াং জেনারেশন আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে । ভারতীয় মুভি গুলো দেখলে খেয়াল করবেন এরা সব সময় নিজেদের ব্রান্ডের গাড়ি ( মাহেন্দ্র , টাটা , মারুতি ) গুলোকে প্রমোট করে ।
বাংলাদেশি জেনারেশনের একটা বড় অংশ সালমান মুক্তাদির , তাহসিনেশন , তিশা আর এয়ারটেলের নাটক নিয়ে ব্যাস্ত । এরা আবাহনী ,মোহামেডান নিয়ে মারামারি করে । ক্যাম্পাস নিয়ে মারামারি করে । কনসার্টের টিকেট নিয়ে ফাইট করে । যতো সহজে এরা বিভিন্ন চ্যাটিং এপসের নাম বলতে পারে ,ততো সহজে এরা কোন বৈজ্ঞানিক কার্যকরন ব্যাখ্যা করতে পারে না ।
এদের জীবনের একটা বড় অংশ কাটে ইউটিউবের কিছু থার্ড ক্লাস ভিডিওতে চোখ রেখে । জীবনের আরেকটা অংশ কাটে রিলেশনে কি করেছি আর কি করি নাই এসব ভেবে ।
কেন আমাদের নিজস্ব কোন ব্রান্ড এখনো সেভাবে উঠে আসে নাই , কেন আমরা নিজেদের টেকনোলজি পাই না , কেন আমাদের সেনসেশন শুধু ইউটিউবাররাই হয় , কেন শুধু রোস্টিং ভিডিওতেই আমাদের রুচি তার একটা সংক্ষিপ্ত উত্তর ছিল আজকের লেখাটা ।
স্বাধীনতার এতোবছর কেটে গেলো ,এখনো আমদেরকে ১৯৭৩ সালে মিশরের উপহার দেয়া T-54 মডেলের ট্যাঙ্ক সংস্কার করে চলতে হয় । এখনো সেকেন্ড হ্যান্ড সাবমেরিন কিনতে হয় । ভার্সিটির র্যাঙ্কিং নিয়ে মারামারি হলেও পদ্মা সেতু বানাতে ইঞ্জিনিয়ার আনতে হয় বাইরে থেকে । পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র মেইন্টেইন করতে রাশিয়ার পায়ে ধরতে হয় । ভারতের হাতে পায়ে ধরেও তিস্তার পানি পাই না । বেশি কথা বললে তারা আবার সীমান্তে গুলি করে মানুষ মারে । পতাকা নিয়ে বেকুব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি আমরা ।
#আমাদের নিজেদের #ব্র্যান্ড দরকার ।
➤ কম্পিউটার সাইন্সের মেধাবী ছেলেটাকে ডেকে আনুন । তাকে সুযোগ দিন । দেখুন সে কি করে দেখায় ।
➤ যে ছেলেটা #ড্রোন বানাচ্ছে তাকে একটু #পরিচর্যা করুন । বলা যায় না এই ছেলের হাত দিয়েই নতুন ফাইটার প্লেনের #নকশা আসবে ।
➤ বিসিএস করে যে মানুষটা পাগল হয়ে যাচ্ছে তার মেধাকে অবহেলা করবেন না । হতে পারে এই মানুষটা ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ড ক্লাস ডিপ্লোমেট হবে ।
➤ মাদ্রাসার ছেলেটাকে ""ইংরেজি পারে না "" দোহাই দিয়ে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করবেন না । তাকে সুযোগ দেন । দেখুন সে কি করে দেখায় ।
➤ পলিটেকনিকের যে ছেলেটা মোটর নিয়ে কাজ করে তাকে পরিচর্যা করুন । ইন ফিউচার ভালো কিছুই করে দেখাবে ।
আফসোস ...আমাদের দেশে লুল ভিডিও মেকাররা যে ধরনের এটেনশন পায় , তার এক অংশও এই মেধাবীরা পায় না । যদি পেতো তবে স্বাধীনতার ৪৭ বছরে এসে আমাদের গল্পটা হয়তো একটু অন্যরকম হলেও হতে পারতো ।
No comments