Header Ads

Header ADS

আল্লাহ আসলে কি - পদার্থ নাকি অপদার্থ ? সাকার নাকি নিরাকার?

আল্লাহ আসলে কি - পদার্থ নাকি অপদার্থ ?

 সাকার নাকি নিরাকার?

নাকি  মুসলমানদের এই আল্লাহ আসলে  কল্পিত ?

 কল্পিত নাহলে কিংবা আল্লাহ আল্লাকে না চিনলে সে একেক   যায়গায় একেকরকম বর্ননা করেন কিভাবে নিজের সম্পর্কে ?

Image result for picture of GOD
ছোটবেলা থেকেই আমরা মোটামুটি জেনে আসছি আল্লা হচ্ছে নিরাকার।
আল্লার কোন আকার নেই।
তিনি সর্বত্রই বিরাজমান।
আবার একটু বড় হয়ে যখন কুরান পড়লাম তখন জানতে পারলাম সেখানে আল্লার আকার আকৃতি আছে ।
এখানে এসে পড়ে গেলাম বিশাল একটা কনফিউশানে ।
আল্লা কি ?
আল্লা কি কোন পদার্থ নাকি কোন অপদার্থ?
আল্লা কি আসলেই নিরাকার নাকি সাকার?
কেননা আল্লার আকার এবং সাকারের পক্ষে দুদিকেই ভারী এবং শক্ত লেভেলের তথ্য প্রমান রয়েছে কুরান হাদীস এবং ইসলামের নানাবিধ স্কলারের মতে  ।
তাহলে আমাদের মত সাধারন মানুষে যাবে কোনদিকে ?
কোনটা মানবে আর কোনটা ছেড়ে দিবে ?
একটাকে রেখে আরেকটাকে ছেড়ে দিলে বা অবিশ্বাস করলে তো ঈমান থাকবেনা।কেননা ঈমানের মূল যে পাচটি স্তম্ভ রয়েছে তার মধ্যে কুরান হাদীস হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয় ।
তাছাড়া ইসলামে এরকম কোন সুযোগ নেই যেখানে একটিকে মানা যাবে আর অপছন্দনীয় কোন বিষয় হলে সেটাকে ছেড়ে দেওয়া যাবে।
এখানে পুরোটাকেই মানতে হবে যেভাবে কুরান হাদীসে উল্লেখ আছে ।তার কোনটাকেই ছেড়ে দিলেই সমস্ত ঈমান জানালা ভেঙ্গে পালাবে।  
আর কুরান হাদীসের কথা মানে হচ্ছে সবই ঐ একই আল্লার  ও তার নবীর কথা ।
তয় সেই একই আল্লার কথা যদি হয় আমাদের মানুষের মধ্যে থাকা  মুনাফেক টাউট বাটপার মিথ্যাবাদী লোকেদের মত একেকসময় একেকটা ,তাহলে তার উপরে ঈমান ধরে  রাখে কিভাবে ?
যাহোক, এই আল্লা বেচারেকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনার কোন শেষ নেই ।অনেক ঘাটাঘাটি করেছি আসলে এই আল্লা বেচারাকে নিয়ে জানার জন্য  যে সে আসলে কি?
তো তাকে নিয়ে জানতে গিয়ে দুটি পক্ষেই যে সকল তথ্য প্রমান বা দলিলাদি পেয়েছি তা আজকে এই লেখায় তুলে ধরছিঃ
                            আল্লা কি ? আল্লার পরিচয় কি?
আল্লার পরিচয়  জানতে গেলে সুরা ইখলাসের ঐ চার লাইনের দেওয়া বক্তব্যটাকেই সামনে ঝুলিয়ে দেয় মোল্লা বা ইসলামের এজেন্টগুলি।
তাদের দাবী আল্লার পরিচয় জানার জন্য সুরা ইখলাসের এই চার লাইনের বা আয়াতের বক্তব্যই যথেষ্ট।যদিও আমার মত জ্ঞান পিপাসু কিংবা শয়তানের খালাতো ভাইদের জন্য মোটেও যথেষ্ট নয় ঐ চার লাইনের কথাবার্তা ।
তো যাহোক, আগেই আমরা একটু আল্লার পরিচয় সম্পর্কে জেনে নিই সুরা ইখলাস থেকেঃ
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ
বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, [ সুরা ইখলাস ১১২:১ ]
اللَّهُ الصَّمَدُ
আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, [ সুরা ইখলাস ১১২:২ ]
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি [ সুরা ইখলাস ১১২:৩ ]
وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
এবং তার সমতুল্য কেউ নেই। [ সুরা ইখলাস ১১২:৪ ]

এখানে প্রথম আয়াতে বলা হচ্ছে তিনি এক বা অদ্বিতীয় ।
ভালো কথা ।এক নাকি দুই সেটা আমরা পরে দেখে নিব।

দ্বিতীয় আয়াতে বলা হচ্ছে তিনি অমুখাপেক্ষী বা কারো মুখাপেক্ষী নন , অথবা কারো সাহায্যকামী বা কারো উপরে ডিপেন্ডেড নন বা তিনি কারো উপরে নির্ভরশীল নন ।
আসলেই কি তাই তাই ?
না , ভুল ।
মানে আল্লার এই কথাটা মিথ্যা ।
প্রমান দেখুনঃ
                     (  
https://imranshakh.blogspot.com/2020/02/blog-post_82.html  )
যাহোক দেখি পরের আয়াতে কি বলছে?

সুরা ইখলাসের তিন নাম্বার আয়াতে বলছেঃ তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি ।
ভালো কথা ,সে বিয়ে সাধীও করে নাই , আর কোন ছেলে মেয়েও জন্ম দেয়নাই ।
কিন্তু প্রশ্ন তো এসেই যায়  যে ,সে না হয় বিয়ে সাধী করেনাই,আর তাই কাউরে  জন্মও দেয়নাই ।
কেননা সে হয়তো এটাতেই বিশ্বাসি যে, ভোগে সুখ নয় ,ত্যাগেই প্রকৃত সুখ ।
তাই সে নিজে বিয়ে সাধী করে ছেলে মেয়ে জন্ম দিয়ে ঝই ঝামেলা বাড়াতে চায়নাই ।তাই সে হয়তো আমাদের  সেক্সের দৃশ্যগুলি লাইভ উপভোগ করে মজা নেয় ।
তাছাড়া ঐ একটা কথা আছে না যে, থাকিতে হস্ত ,কেন হবো অন্যের দ্বারস্থ?
সে ঠিক হয়তো আমাদের সেক্সের দৃশ্য দেখে হস্ত দ্বারাই কাজ সেরে নেয়।
যাক গে , আমি ওসব বিষয়ে মাথা ঘামাতে চাইনা ।
আমি শুধু জানতে চাই যে, সে নাহয় কাউরে জন্ম দেয়নি, কিন্তু তারে কেউ জন্ম না দিলে সে কেমতে আইলো ?
এইডা তো মাইনা নেওয়া যায়না ।এইডা তো এত সহজেই মেনে নেওয়া যায়না যে, তারে কেউ জন্ম না দিলে সে এমনি এমনি হয়ে গেছে ।

এবং চতুর্থ আয়াতে বলছে তার সমতুল্য কেউ নাই ।
ভালো কথা ।
তয় এক পা সামনে আগাইয়া গেলেই দেখা যায় যে সে নিজেই নিজের সমকক্ষ বা সমতূল্য তৈরি করছিল।
কি মানে বুঝলেননা?
ঠিকাছে খুলেই বলছি।
আল্লা মানুষ এবং জ্বীন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য।
অথচ সেই জ্বীনেরই একটা বাচ্চা যে ছিল ফেরেস্তাদের সর্দার মানে বর্তমানের ইবলিশ যে আমার ঘাড়ে চেপে বসে আছে এবং এসব লেখাচ্ছে আমাকে দিয়ে তাকে কি আল্লায় আদমকে সৃষ্টি করে সেজদা করে আল্লার সমতুল্য বা সমকক্ষ বানায়ছিলনা?
যাহোক,আমার মত শয়তানের দোসরের এত সস্তা কথায় চিড়ে ভিজবেনা মানে এই সুরা ইখলাসের মাধ্যমে আল্লার সম্পর্কে কিউরিসিটি শেষ হবেনা ।
তাই আরেকটু সামনে গিয়ে দেখা যাক যে, আল্লা আসলে কি কোন পদার্থ নাকি কোন অপদার্থ ?
কোন জীবিত অস্তিত্বশীল প্রানী নাকি মরে পচে যাওয়া কোন ভিত্তিহীন মিথ বা গল্পই কেবল?
কোন আকারবিহীন বা নিরাকার কোন কোন সত্তা নাকি কোন আকার আকৃতিওয়ালা আমাদের মতই রক্তে মাংসে গড়া  প্রানী ,যার রাগ ক্ষোভ, হাসি কান্না, চোখ কান নাক মুখ পাছা ইত্যাদি সব আছে ,এরকম কিছু ?
আগে দেখা যাক,আল্লার আকার আকৃতি সম্পর্কে সে কুরান হাদীসে কি বলেঃ
                                          সাকার বা আকার আকৃতিঃ-

                                 আল্লাহর চেহারা/মুখ এর দলিল:
 
আল্লার যে মুখ আছে এবং আল্লায় যে কথা বলেন তার প্রমান আমরা পাই কুরানের-

وَلِلّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ فَأَيْنَمَا تُوَلُّواْ فَثَمَّ وَجْهُ اللّهِ إِنَّ اللّهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
পূর্ব ও পশ্চিম আল্লারই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহর চেহারা । নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ। [ সুরা বাকারা ২:১১৫ ]
وَلَا تَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آَخَرَ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهُ لَهُ الْحُكْمُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ (88)

এবং তুমি আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্যকে ডেকো না। তিনি ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নেই। আল্লাহর চেহারা ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংসশীল। বিধান তাঁরই। তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।” (২৮:৮৮)

আপনার গাম্ভীর্যপূর্ণ ও সম্মানিত প্রতিপালকের চেহারা চিরকাল স্থায়ী থাকবে।
(সূরা আর-রহমান- ২৭ আয়াত)

- এছাড়াও  অনেক আয়াতে আছে আল্লাহ কথা বলেন, ফেরেস্তারাদের, নবী রাসুলদের, এমনকি ইবলিশ শয়তানের সাথেও বলেছেন

কুরানের পাশাপাশি অনেক হাদীসেই পাবেন যেখানে আল্লায় তার চেহারা এবং মুখের বর্ননা পাওয়া যায়ঃ

حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا الأَحْوَصُ، - يَعْنِي ابْنَ جَوَّابٍ - حَدَّثَنَا عَمَّارُ بْنُ
 رُزَيْقٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، وَأَبِي، مَيْسَرَةَ عَنْ عَلِيٍّ، رَحِمَهُ اللَّهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ عِنْدَ مَضْجَعِهِ  " اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِوَجْهِكَ الْكَرِيمِ وَكَلِمَاتِكَ التَّامَّةِ مِنْ شَرِّ مَا أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ اللَّهُمَّ أَنْتَ تَكْشِفُ الْمَغْرَمَ وَالْمَأْثَمَ اللَّهُمَّ لاَ يُهْزَمُ جُنْدُكَ وَلاَ يُخْلَفُ وَعْدُكَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ " .
৪৯৬৮. আব্বাস ইবন আজীম (রহঃ) .... আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শোবার সময় বলতেনঃ হে আল্লাহ। আমি আপনার সম্মানিত চেহারার অসিলায় সব কিছু থেকে পানাহ চাচ্ছি, আর আপনার পরিপূর্ণ কালিমার অসিলায় অনিষ্টকর সব কিছু থেকে নাজাত চাচ্ছি, যা আপনার নিয়ন্ত্রণে আছে। হে আল্লাহ্‌! আপনিই করয আদায় করে থাকেন এবং গুনাহ মাফ করে দেন। হে আল্লাহ্‌! আপনার বাহিনী পরাজিত হবার নয় এবং ওয়াদা ভংগ হয় না। আর কোন বিত্তবানের বিত্ত আপনার সামনে কাজে আসবে না। আপনি পবিত্র মহান, আর সব প্রশংসা আপনারই।

আরো যেসকল হাদীসে আল্লার মুখের এবং চেহারার বর্ননা পাবেনঃ
বুখারী ইঃফাঃ ৬৯৩৬; বুখারী তাওঃ ৭৪০৬, ৭৪৪৪;
আবু দাউদ ইঃফাঃ ৪৯৬৮;
নাসাঈ ৪৯১;
তিরমিজী ইঃফাঃ ৩৪৫, ২৫৩০, ২৯৫৭-৫৮, ৩৫৭০;
মাজাহ ১৯৫-৯৬, ৩৮০১)

                                 আল্লাহর গলা বা কণ্ঠস্বরঃ
যখন সে তার কাছে পৌছল, তখন পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত উপত্যকার ডান প্রান্তের বৃক্ষ থেকে তাকে আওয়াজ দেয়া হল, হে মূসা! আমি আল্লাহ, বিশ্ব পালনকর্তা।
(কুরআন ২৮ঃ৩০)
অতঃপর যখন তিনি আগুনের কাছে আসলেন তখন আওয়াজ হল ধন্য তিনি, যিনি আগুনের স্থানে আছেন এবং যারা আগুনের আশেপাশে আছেন। বিশ্ব জাহানের পালনকর্তা আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত।
(কুরআন ২৭ঃ৮)
                                       আল্লাহর চোখ এর দলিলঃ

 আল্লার যে চোখ আছে এবং তিনি সারাক্ষনই সবকিছুই দেখতে পান , কোনকিছুই তার নজরগোচর হয়না সেটা আমরা কুরানের যেসকল সুরার মধ্যে পাই তা হচ্ছেঃ



۞ إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَن تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَىٰ أَهْلِهَا وَإِذَا حَكَمْتُم بَيْنَ النَّاسِ أَن تَحْكُمُوا بِالْعَدْلِ ۚ إِنَّ اللَّهَ نِعِمَّا يَعِظُكُم بِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا
নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত  তার হকদারকে ফিরিয়ে দিতে তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য পরিচালনা করবে তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে । আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন তা কত উৎকৃষ্ট!  নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা ।

يَسْتَخْفُونَ مِنَ النَّاسِ وَلاَ يَسْتَخْفُونَ مِنَ اللّهِ وَهُوَ مَعَهُمْ إِذْ يُبَيِّتُونَ مَا لاَ يَرْضَى مِنَ الْقَوْلِ وَكَانَ اللّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطًا
তারা মানুষের কাছে লজ্জিত হয় এবং আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয় না। তিনি তাদের সাথে রয়েছেন, যখন তারা রাত্রে এমন বিষয়ে পরামর্শ করে, যাতে আল্লাহ সম্মত নন। তারা যাকিছু করে, সবই আল্লাহর আয়ত্তাধীণ। [ সুরা নিসা ৪:১০৮ ]

مَّن كَانَ يُرِيدُ ثَوَابَ الدُّنْيَا فَعِندَ اللّهِ ثَوَابُ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَكَانَ اللّهُ سَمِيعًا بَصِيرًا
যে কেউ দুনিয়ার কল্যাণ কামনা করবে, তার জেনে রাখা প্রয়োজন যে, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ আল্লাহরই নিকট রয়েছে। আর আল্লাহ সব কিছু শোনেন ও দেখেন। [ সুরা নিসা ৪:১৩৪ ]

وَحَسِبُواْ أَلاَّ تَكُونَ فِتْنَةٌ فَعَمُواْ وَصَمُّواْ ثُمَّ تَابَ اللّهُ عَلَيْهِمْ ثُمَّ عَمُواْ وَصَمُّواْ كَثِيرٌ مِّنْهُمْ وَاللّهُ بَصِيرٌ بِمَا يَعْمَلُونَ
তারা ধারণা করেছে যে, কোন অনিষ্ট হবে না। ফলে তারা আরও অন্ধ ও বধির হয়ে গেল। অতঃপর আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করলেন। এরপরও তাদের অধিকাংশই অন্ধ ও বধির হয়ে রইল। আল্লাহ দেখেন তারা যা কিছু করে। [ সুরা মায়েদা ৫:৭১ ]

এছাড়াও আল্লার যে চোখ আছে এবং তিনি সারাক্ষনই সবকিছু দেখতেছেন ,যাকে কখনোই নিদ্রা স্পর্শ করতে পারেনাই এসব বিষয়ে কুরানের আরো যেসকল সুরা থেকে জানতে পারবেনঃ

হুদ ৩৭; আনআম ১০৩; ইসরাইল ১; ২৯, ৯৬; কাহাফ ২৬; হজ্জ্ব ৬১, ৭৫; মুমিনুন ২৭; ফুরকান ২০; লুকমান ২৮; আহজাব ৯, ৫৫; মুমিন ২০, ৫৫; শুরা ১১; ফাতাহ ২৪, হুজরাত ১৮; কমার ১৪; হাদিদ ৪, ২৫; মুজদালা ১; মুমতাহানা ৩)

কুরান ছাড়াও যেসকল হাদীস থেকে আল্লার চোখ সম্পর্কে জানতে পারবেন তা হলঃ

  হাদিস বুখারী ইঃফাঃ ২৮৪০, ৩১০১, ৪০৬০, ৫৭৪২, ৬৬৪২, ৬৬৪৬, ৬৯০৩-; বুখারী তাওঃ ৪৪০২, ৬১৭৫, ৭১২৭, ৭১৩১, ৭৪০৭-; মুসলিম ইঃফাঃ ২৩৬, ৭০৯৫, ৭০৯৭; আবু দাউদ ইঃফাঃ ৪২৬৫, ৪২৬৯, ৪৬৮২; মাজাহ ৪০৭৭, তিরমিজী ইঃফাঃ ২২৩৮, ২২৪৪, ২২৪৮; রিয়াযুস স্ব-লেহিন ২১০, ১৮২৮

                             আল্লাহর শ্রবন সত্ত্বা/কান 
অঙ্গঃ   
আল্লার যে কান এবং শ্রবনশক্তি আছে সেটা আমরা কুরান থেকে জানতে পাইঃ

 فَإِنْ آمَنُواْ بِمِثْلِ مَا آمَنتُم بِهِ فَقَدِ اهْتَدَواْ وَّإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنَّمَا هُمْ فِي شِقَاقٍ فَسَيَكْفِيكَهُمُ اللّهُ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
অতএব তারা যদি ঈমান আনে, তোমাদের ঈমান আনার মত, তবে তারা সুপথ পাবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তারাই হঠকারিতায় রয়েছে। সুতরাং এখন তাদের জন্যে আপনার পক্ষ থেকে আল্লাহই যথেষ্ট। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। [ সুরা বাকারা ২:১৩৭ ]

এছাড়াও আমরা আল্লার কান এবং শ্রবনশক্তির বিষয়ে স্পস্ট জানতে পারবো কুরানের যেসকল সুরা থেকে তা হইলোঃ
(
সূরা বাকারা ১২৪, ১৩৭, ১৮০, ২২৭, ২২৪, ২৫৬; ইমরান ৩৪, ১২১; নিসা ৫৮, ১০৮, ১৩৪, ১৪৮, মায়েদা ৭৬; আনআম ১৩, ১১৫; আরাফ ২০০; আনফাল ১৭, ৪২, ৫৩, ৬১; তওবা ৯৮, ১০৩; ইউনুস ৩৪, ৬৫ ইব্রাহিম ৩৯; ইসরাইল ১; কাহাফ ২৬; আম্বিয়া ৪; হজ্জ্ব ৬১, ৭৫; নূর ২১, ৫৯; শুআরা ২২০; আনকাবুত ৫, ৬০; লুকমান ২৮; সাবা ৫০; মুমিন ২০, ৫৫; হা মিম সেজদা ৩৬; শুরা ১১; দুখান ৬; হুজুরাত ১; মুজাদালা ১)

কুরানের পাশাপাশি আমরা আল্লার কানে শোনার বিষয়ে জানতে পারবো যেসকল হাদিস থেকে তা হলোঃ
হাদিস বুখারী ইঃফাঃ ২৭৮৪, ৩৮৯০, ৫৯৪২, ৫৯৬৭, ৬১৫৭, ৬৬৮৩; বুখারী তাওঃ ২৯৯২, ৪২০২, ৬৩৮৪, ৬৪০৯, ৬৬১০, ৭৩৮৬; মুসলিম ইঃফাঃ ৬৬১৬, ৬৬১৮; আবু দাউদ ইঃফাঃ ১৫২৭; তিরমিজী ইঃফাঃ ৩৩৭৪, ৩৪৬১; রিয়াযুস স্ব-লেহিন ৯৮৬)

                                         আল্লার হাত এর দলিলঃ

 আল্লার যে হাত আছে এবং হাতের মাধ্যমে বা হাতের আঙ্গুলের মাধ্যমে তার ফেরেস্তাদেরকে কাজের নির্দেশ করে থাকেন, মুমিন মুসলমানদেরকে সাহায্য করে থাকেন  সেসব বিষয়ে আমরা কুরানের যেসকল সুরা থেকে জানতে পারি তাহলোঃ

  ইমরান ৭৩;
وَلاَ تُؤْمِنُواْ إِلاَّ لِمَن تَبِعَ دِينَكُمْ قُلْ إِنَّ الْهُدَى هُدَى اللّهِ أَن يُؤْتَى أَحَدٌ مِّثْلَ مَا أُوتِيتُمْ أَوْ يُحَآجُّوكُمْ عِندَ رَبِّكُمْ قُلْ إِنَّ الْفَضْلَ بِيَدِ اللّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاء وَاللّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
‘এবং তোমাদের দ্বীনের অনুসারী ছাড়া আর কাউকেও বিশ্বাস করো না। তাদেরকে বলে দাও, আল্লাহর (নির্দেশিত) পথই একমাত্র পথ; (এবং এটা আল্লাহর নীতি যে) একদিন তোমাদেরকে যা দেয়া হয়েছিল তা-ই অন্য কাউকে দেয়া হবে অথবা অন্য লোকেরা তোমাদের প্রতিপালকের সামনে তোমাদের বিরুদ্ধে পেশ করার জন্য মযবুত প্রমাণ পেয়ে যাবে। বল, ‘কল্যাণ আল্লাহরই হাতে, তিনি যাকে ইচ্ছে তা দান করেন এবং আল্লাহ প্রাচুর্যশালী ও সর্বজ্ঞ’।

এছাড়াও কুরানের যেসকল সুরা থেকে জানতা পারবেন যে আল্লার হাত আছে তা হলোঃ
(সূরা বাকারা ১২০; ; নায়েদা ৬৪; আনআম ৫৯; আরাফ ১৫৮; মুমিনুন ৮৮; নমল ৪৭; লুকমান ২২; সাদ ৭৫; জুমার ৬৭; জুখরুফ ৪০; ফাতাহ ১০; মুলক ১)

কুরান ছাড়াও একই বিষয়ে মানে আল্লার যে হাত আছে তা সম্পর্কে জানতে পারবেন যে সকল হাদীস থেকে তা হচ্ছেঃ

হাদিস বুখারী ইঃফাঃ ১৩, ৪৩২৭, ৪৪৪৮-৪৯, ৬০৭৫, ৬৮৪৬, ৬৮৭৮, ৬৯০৭-০৯, ৬৯৫৭, ৭০০৫; বুখারী তাওঃ ১৪, ২১৭০, ৪৮১১-১২, ৬৫১৯, ৭২১৬, ৭৩৪৭, ৭৪১১ ৭৪১৯, ৭৪৬৫; মুসলিম ইঃফাঃ ১৫, ২১৮১, ২২১৪, ৬৭৮৯, ৬৭৯৩-৯৬; আবু দাউদ ইঃফাঃ ৪৬৫৭; মাজাহ ৫, ১৯২, ১৯৭-৯৮, ১৮৪২, ২৯৫৭; তিরমিজী ইঃফাঃ ৩০৪৫, ৩২৪১; আল লুলু ওয়াল মারজান ৮; হাদিসে কুদসি ৭৩-৭৫)

                                         আল্লার হাতের আঙুলঃ

 আমরা আল্লার হাতের আঙ্গুলের কথা অনেকই শুনেছি ,যেটা দ্বারা সে তার ফেরস্তাদেরকে নির্দেশ করে থাকে;তো চলুন দেখি এ ব্যাপারে হাদীসে কি বলেঃ

গ্রন্থের নামঃ সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত]
হাদিস নম্বরঃ [2140]
অধ্যায়ঃ ৩০/ তাকদীর (كتاب القدر عن رسول الله ﷺ)
পাবলিশারঃ হুসাইন আল-মাদানী
পরিচ্ছদঃ ৭. আল্লাহ তা’আলার দুই আঙ্গুলের মধ্যে সমস্ত অন্তর অবস্থিত।
২১৪০। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ অধিক পাঠ করতেনঃ হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত (দৃঢ়) রাখো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আমরা ঈমান এনেছি আপনার উপর এবং আপনি যা নিয়ে এসেছেন তার উপর। আপনি আমাদের ব্যাপারে কি কোনরকম আশংকা করেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, কেননা, আল্লাহ তা’আলার আঙ্গুলসমূহের মধ্যকার দুটি আঙ্গুলের মাঝে সমস্ত অন্তরই অবস্থিত। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তা পরিবর্তন করেন।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৮৩৪)।

আবূ ঈসা বলেন, নাওয়াস ইবনু সাম্আন, উন্মু সালামা, আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ও আইশা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান। আমাশ-আবৃ সুফিয়ান হতে, তিনি আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী একইরকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ আমাশ-আবৃ সুফিয়ান হতে, তিনি জাবির (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে আবূ সুফিয়ানের বর্ণিত হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

                                                  আল্লাহ
র পাঃ

- সূরা ক্বলাম এর আয়াত ৪২ নং এর ব্যাখ্যায় হাদিসে এসেছে, ক্বিয়ামতে আল্লাহ পায়ের গোছা বের করে দিবেন  মুমিনরা সেজদা করবে, গুনাহগাররা সেজদা করতে পারবে না

আবু হুরাইরার বর্ণনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জাহান্নাম ততক্ষণ ভরবেনা যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর পা জাহান্নামে রেখে দেবেন তখন জাহান্নাম বলতে থাকবে ব্যাস! ব্যাস !!
(বুখারীও মুসলিম, মিশকাত ৫০৫ পৃষ্ঠা)

ইবনু আব্বাসের বর্ণনায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আলকুর্সী মাওাইল কুদামাইন- কুরসী হচ্ছে আল্লাহর দুটি পায়ের পাতা রাখার জায়গা।
(মুসতাদরকে হা-কিম ২য় খণ্ড, ২৮২ পৃষ্ঠা)

গ্রন্থের নামঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ [6941]
অধ্যায়ঃ ৮৬/ জাহ্‌মিয়াদের মতের খণ্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ৩১২৭.
৬৯৪১। উবায়দুল্লাহ ইবনু সা’দ ইবনু ইবরাহিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়টি স্বীয় প্রতিপালকের কাছে অভিযোগ করল। জান্নাত বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমার ব্যাপারটি কি হলো যে তাতে শুধু নিঃস্ব ও নিম্ন শ্রেনীর লোকেরাই প্রবেশ করবে। এদিকে জাহান্নামও অভিযোগ করল অর্থাৎ আপনি শুধুমাত্র অহংকারীদেরকেই আমাতে প্রাধান্য দিলেন। আল্লাহ জান্নাতকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি আমার রহমত। জাহান্নামকে বললেনঃ তুমি আমার আযাব। আমি যাকে চাইব, তোমাকে দিয়ে শাস্তি পৌছাব। তোমাদের উভয়কেই পূর্ণ করা হবে। তবে আল্লাহ তা’আলা তার সৃষ্টির কারো উপর যুলম করবেন না। তিনি জাহান্নামের জন্য নিজ ইচ্ছানুযায়ী নতুন সৃষ্টি পয়দা করবেন। তাদেরকে যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন জাহান্নাম বলবে, আরো অভিরিক্ত আছে কি? জাহান্নামে আরো নিক্ষেপ করা হবে, তখনো বলবে, আরো অতিরিক্ত আছে কি? এভাবে তিনবার বলবে। পরিশেষে আল্লাহ তাআলা তাঁর কদম (পা) জাহান্নামে প্রবেশ করিয়ে দিলে তা পরিপূর্ন হয়ে যাবে। তখন জাহান্নামের একটি অংশ আরেকটি অংশকে এই উত্তর করবে যথেষ্ট হয়েছে যথেষ্ট হয়েছে ষথেষ্ট হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

এছাড়াও যেসকল হাদীস থেকে জানতে পারবেন যে আল্লার পা আছে সেগুলি হলোঃ
হাদিস বুখারী ইঃফাঃ ৪৫৫৪, ৬২০৬, ৬৯৩২; বুখারী তাওঃ ৪৯১৯, ৬৬৬১, ৭৪৩৯; রিয়াযুস স্ব-লেহিন ১৮১৯, আত তিরমিজী ৩২৭২; আল লুলু ওয়াল মারজান ১১৫, হাদিসে কুদসি ৭৯, ৬৮)

*জান্নাতীরা আল্লাহকে দেখতে পাবে  জাহান্নামীরা আল্লাহকে কোন আকারেই দেখতে পাবে না
হাশরের ময়দানে আল্লাহু তায়ালা স্ব-আকৃতে জান্নাতীদের দেখা দিবে  জান্নাতীরা তাকিয়ে থাকবে প্রতিপালকের দিকে ।    
(সূরা কিয়ামা ২৩ )

(যারা নিরাকার বলে তারা বরং) প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের (দেখার) কথা অবিশ্বাস করে (রুম 8)

                                               আল্লার আকৃতিঃ

এতক্ষনে আমরা কুরান হাদীসের বিভিন্ন সোর্স থেকে জানলাম আল্লার আমাদের মত অঙ্গ প্রতঙ্গগুলি সম্পর্কে, এবার আমরা জানবো আল্লার আকার আকৃতিটা কার মত বা কেমন?
গ্রন্থের নামঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ [6900]
অধ্যায়ঃ ৫৪/ জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামত ও জান্নাতবাসীগনের বিবরণ (كتاب الجنة وصفة نعيمها وأهلها)
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ১১. জান্নাতে এমন অনেক দল জান্নাতে যাবে যাদের হৃদয় পাখির হৃদয়ের ন্যায়
৬৯০০।
 মুহাম্মদ ইলূন রাফি’ (রহঃ) … হাম্মাম ইবন মুনাব্বি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এ হচ্ছে (সে সব হাদীস) যা আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের শুনিয়েছেন। (এভাবে) তিনি কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেন। এর মধ্যে একটি হল এ ই যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা আদম (আলাইহিস সালাম) কে তার নিজ আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। তার দৈর্ঘ্য হল ষাট হাত। তাকে সৃষ্টি করার পর তিনি তাকে বললেন, যাও, এ দলটিকে সালাম কর। তারা হচ্ছে ফিরিশতাদের উপবিষ্ট একটি দল। সালামের জবাবে তারা কি বলে তা খুব মনোযোগ সহকারে শ্রবণ কর। কেননা তোমার এবং তোমার বংশধরদের অভিবাদন এ-ই। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি গেলেন ও বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’। উত্তরে তারা বললেন, ‘আসসালামু আলাইকা ওয়ারাহমাতুল্লাহ’। তাঁরা ওয়া রামাতুল্লাহ বাড়িয়ে বলেছেন। এরপর তিনি বললেন, যে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে সে আদম (আলাইহিস সালাম) এর আকৃতিতে যাবে। তার দৈর্ঘ্য হবে ষাট হাত। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ এরপর হতে সৃষ্টি (-র দেহের) দেহের পরিমাণ দিন দিন কমতে থাকে আজ পর্যন্ত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

                                             আল্লাহর রূপ রঙঃ

আমরা আল্লাহর রং গ্রহণ করেছি। আল্লাহর রং এর চাইতে উত্তম রং আর কার হতে পারে?আমরা তাঁরই এবাদত করি কুরআন ২ঃ১৩৮

অর্থাৎ আমরা যদি আদমের মাধ্যমেই এসে থাকি এবং আদম আমাদের আদিপিতা বা পূর্ব পুরুষ হয়ে থাকে তাহলে আদমের চেহারা নিশ্চয় আমাদের মতই হবার কথা।
কেননা আমরা দেখি আমাদের সন্তান সন্ততি সাধারনত আমাদের চেহারার মতই আকৃতি নিয়ে জন্মায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ,কিছুটা অমিল বা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় ।
যদিও আমাদের এই বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের চেহারার মাঝে লক্ষ লক্ষ পার্থক্য দেখা যায় ,যেটা মোটেও হবার কথা ছিলনা ।
তো এখানে মোদ্দাকথা বলা যায় যে, আল্লার চেহারা আমাদের মানুষের বা আদম সন্তানদের মতই ।যেহেতু আল্লায় আদমকে নিজ আকৃতিতে তৈরি করেছিলেন ।

                               আল্লাহ প্রতিশোধ পরায়নঃ

আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশীল, প্রতিশোধ গ্রহণকারীকুরআন ৩ঃ৪

                                    আল্লাহ বড় হিংসুটেঃ

আল্লাহ ছাড়া বা আল্লাহর সাথে অন্য কারো উপাসনা করলে আল্লাহর হিংসে লাগে। সে কারণে একে সবচাইতে বড় অপরাধ শিরক বলে গণ্য করা হয়েছে।
যদিও সে নিজেই আদমকে বানানোর পরে ফেরেস্তাদের সর্দারকে সেজদা করতে বলেছিলেন।

নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল(সুরা নিসা- ৪৮)

আল্লাহ অবশ্যি শিরককে মাফ করেন না৷  এ ছাড়া অন্যান্য যত গোনাহর হোক না কেন তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন৷ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে আর কাউকে শরীক করেছে সেতো এক বিরাট মিথ্যা রচনা করেছে এবং কঠিন গোনাহের কাজ করেছে৷ (সুরা নিসা- ৪৮)

                                     আল্লাহ বড় লজ্জাশীল ও পর্দাশীলঃ

গ্রন্থের নামঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
হাদিস নম্বরঃ [4012] অধ্যায়ঃ ২৬/ গণ-গোসলখানা
পাবলিশারঃ আল্লামা আলবানী একাডেমী
পরিচ্ছদঃ ২. উলঙ্গ হওয়া নিষেধ
৪০১২। ইয়া‘লা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে উলঙ্গ হয়ে খোলা জায়গায় গোসল করতে দেখলেন। অতঃপর মিম্বারে উঠে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর বললেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ লজ্জাশীল, গোপণীয়তা অবলম্বনকারী। তিনি লজ্জা ও গোপনীয়তা পছন্দ করেন। তোমাদের কেউ গোসল করতে চাইলে সে যেন গোপনীয়তা অবলম্বন করে।
সহীহ নাসায়ী, আহমাদ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গ্রন্থের নামঃ মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
হাদিস নম্বরঃ [447] অধ্যায়ঃ পর্ব-৩ঃ পাক-পবিত্রতা
পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি
পরিচ্ছদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – গোসলের বিবরণ
৪৪৭-[১৮] ইয়া‘লা [ইবনু মুররাহ্] (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে উলঙ্গ উন্মুক্ত জায়গায় গোসল করতে দেখলেন এবং (রাগভরে) তিনি মিম্বারে দাঁড়ালেন। প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করলেন, এরপর বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা বড় লজ্জাশীল ও পর্দাশীল। তিনি লজ্জাশীলতা ও পর্দা করাকে বেশী পছন্দ করেন। তাই তোমাদের কেউ গোসল করতে গেলে যেন পর্দা অবলম্বন করে। (আবূ দাঊদ)[1] নাসায়ীর এক বর্ণনায় আছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা বড় পর্দাশীল। অতএব তোমাদের কেউ গোসল করতে ইচ্ছা করলে সে যেন কোন কিছু দিয়ে পর্দা করে
[1] সহীহ: আবূ দাঊদ ৪০১২, নাসায়ী ১/৭০, আহমাদ ৪/২২৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

                          লজ্জাশীল আল্লাহ নিজের প্রশংসায় পঞ্চমুখঃ  

হে মূসা, আমি আল্লাহ, প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় - কোরআন ২৭:৯

হে মূসা! আমি আল্লাহ, বিশ্ব পালনকর্তা - কোরআন ২৮ঃ৩০

আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও অধিক জ্ঞানবান - কোরআন ১২ঃ৫৫

আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক - কোরআন ৩ঃ২

হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর গলগ্রহ। আর আল্লাহ; তিনি অভাবমুক্ত, প্রশংসিত - কোরআন ৩৫ঃ১৫

করুনাময় আল্লাহ - কোরআন ৫৫ঃ১

আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান কোরআন ২ঃ২৫৫

সকল প্রশংসা এবং ধন্যবাদ আল্লাহর, তিনি বেহেশত ও পৃথিবীর সবকিছুর স্রষ্টা। তাকে বন্দনা করি, তিনি ফেরেশতাদেরকে তৈরি করেছেন। তিনি যা ইচ্ছা করেন, তাই সৃষ্টি করেন। আসলে আল্লাহ সবকিছুই করতে পারেন- কোরআন ৩৫ঃ১

এবং সকল প্রশংসা ও ধন্যবাদের মালিক আল্লাহ কারণ তিনি আলামিন (মানুষ, জিন এবং যা কিছু আছে সবকিছুর) - কোরআন ৩৭ঃ১৮২

অতএব সকল প্রশংসা ও ধন্যবাদ আল্লাহর উপরে বর্ষিত হোক, কারণ তিনিই জগতের প্রভু।
কোরআন - ৪৫ঃ৩৬

নভোমন্ডল, ভূমন্ডল এবং এতদুভয়ে অবস্থিত সবকিছুর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান - কোরআন ৫ঃ১২০


                               আল্লাহ মাঝে মাঝে হাসেনঃ

পাবলিশারঃ তাওহীদ পাবলিকেশন
গ্রন্থঃ রিয়াযুস স্বা-লিহীন
অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ (كتاب المقدمات)
হাদিস নাম্বার: 25
১২/২৫। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহ সুবহানাহু অতা‘আলা ঐ দু’টি লোককে দেখে হাসেন, যাদের মধ্যে একজন অপরজনকে হত্যা করে এবং দু’জনই জান্নাতে প্রবেশ করবে। নিহত ব্যক্তিকে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা অবস্থায় (কোন কাফের কর্তৃক) হত্যা করে দেওয়া হল। পরে আল্লাহ তা‘আলা হত্যাকারী কাফেরকে তওবা করার তাওফীক প্রদান করেন। ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে যায়।’
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
[1] সহীহুল বুখারী-২৮২৬, মুসলিম ১৮৯০, নাসায়ী ৩১৬৫, ৩১৬৬, ইবনুূু মাজাহ ১৯১, আহমাদ ৭২৮২, ২৭৪৪৬, ৯৬৫৭, ১০২৫৮, মুওয়াত্তা মালিক ১০০০

                      আল্লাহর বান্দাদের হুমকি ধামকি দেনঃ

কখনই নয়, যদি সে বিরত না হয়, তবে আমি মস্তকের সামনের কেশগুচ্ছ ধরে হেঁচড়াবই-কোরআন ৯৬/১৫-১৬

আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদেরকে মৃত্যুর আদেশও দেয়া হবে না যে, তারা মরে যাবে এবং তাদের থেকে তার শাস্তিও লাঘব করা হবে না। আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি- কোরআন ৩৫ঃ৩৬

সে দিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে (সেদিন বলা হবে), এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্যে জমা রেখেছিলে, সুতরাং এক্ষণে আস্বাদ গ্রহণ কর জমা করে রাখার - কোরআন ৯ঃ৩৫

আমি তার নাসিকা দাগিয়ে দিবকোরআন ৬৮ঃ১৬

তাদের জন্যে উত্তপ্ত পানি এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে-কুফরের কারণেকোরআন ৬ঃ৭০


                              আল্লাহর রাগ ক্ষোভঃ

আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট - কুরআন ৯৮ঃ৮

তোমাদের নিজেদের প্রতি তোমাদের আজকের এ ক্ষোভ অপেক্ষা আল্লার ক্ষোভ অধিক ছিল, যখন তোমাদেরকে ঈমান আনতে বলা হয়েছিল, অতঃপর তোমরা কুফরী করছিল - কুরআন ৪০ঃ১০

নিশ্চয় তিনি কাফেরদের ভালবাসেন নাকুরআন ৩০ঃ৪৫

গ্রন্থের নামঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ [3531]
অধ্যায়ঃ ৫০/ আম্বিয়া কিরাম (আঃ)
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ২১২২. স্বাদ ইবন মু’আয (রাঃ) এর মর্যাদা
৩৫৩১। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … জাবির (রাঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ) এর মৃত্যুতে আল্লাহ্ ত’আলার আরশ কেঁপে উঠে ছিল। আমাশ (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যাক্তি জাবির (রাঃ) কে বলল, বারা ইবনু আযিব (রাঃ) তো বলেন, জানাযার খাট নড়েছিল। তদুত্তরে জাবির (রাঃ) বললেন, সা’দ ও বারা (রাঃ) এর গোত্রদ্বয়ের মধ্যে কিছুটা বিরোধ ছিল, (কিন্তু এটা ঠিক নয়) কেননা, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে عَرْشُ الرَّحْمَنِ অর্থাৎ আল্লাহর আরশ সা’দ ইবনু মু’আযের (মৃত্যুতে) কেঁপে উঠল বলতে শুনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)



তো উপরোক্ত লম্বা আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম আল্লার অঙ্গপ্রতঙ্গ এবং আকার আকৃতি বা চেহারা সম্পর্কে ,যেটা থেকে আমরা  একমত হতে পারি যে, আল্লা নিরাকার নন, বরং তার আকার আছে ।
শুধুই তার আকার আকৃতিতেই শেষ নয় , বরং তার মানে আল্লার আমাদের মত মনুষ্য স্বভাব চরিত্রের বিষয়েও জানতে পারলাম আমরা কুরান হাদীস থেকে ।
তো এই আলোচনার মাধ্যমে আমাদের কারো কোন সংশয় নেই যে আল্লা কোন নিরাকার কিংবা কোন অপদার্থ ।
বরং আমরা তাকে আমাদের মতই কোন দোপেয় মনুষ্য প্রানী হিসাবে ধরে নিতে পারি।
যদিও কিছু বিষয়ে আবার সংশয় থেকেই যায় যে, এরকম একটা পদার্থ বা কোন যৌগিগ পদার্থ আবার একই সঙ্গে অপদার্থ হতে পারে কিভাবে ?
কেননা তার নাকি কোন খাদ্য খাবার গ্রহনের প্রয়োজন হয়না,
কোন নারী বা কোন সঙ্গিনীর প্রয়োজন হয়না,
কোণ ক্লান্তি বা নিদ্রা স্পর্শ করেনা।
ভাবতে আসলে একটু অবাকই লাগে তাইনা ?
যে আমাদের মতই  হুবুহু একটা মানুষে কিভাবে আবার আমাদের থেকে এতটা ব্যতিক্রম হতে পারে ?
তো এতক্ষন তো শুধুমাত্র আলোচনা করলাম বা আমার কাছে থাকা সমস্ত তথ্য প্রমানের মাধ্যমে প্রমান করে দেখালাম যে আল্লা কোন নিরাকার কিছুই নয় , বরং সে আমাদের মতই একটা মনুষ্য প্রানী ।
এবার আলোচনা করবো আল্লা যে একটা নিরাকার সেই বিষয়ে নানান ইসলামিক স্কলার, হাদীসবেত্তা এবং আল্লা নিজেই কুরানে কি বলে সে বিষয়েঃ

                                        আল্লাহ নিরাকারঃ

আল্লাহর পরিচয়ে সংক্ষেপে রাসূলুল্লাহ স্বাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অর্থাৎ “আপনিই প্রথম, আপনার পূর্বে কিছু নেই। আপনিই শেষ, আপনার পরে কিছু নেই। আপনিই প্রকাশ্য, আপনার উপরে কিছু নেই। আপনিই গোপন, আপনার নিচে কিছু নেই”।
(সূত্রঃ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং২৭১৩)

অর্থাৎ এখানে এই হাদীসের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারছি যে, আল্লার আগে পরে বা উপরে নিচে কিছুই নাই সে ছাড়া ।আবার সেই প্রকাশ্য এবং সে আছে গোপনে । তো কোন আকার আকৃতির প্রানী তো আর গোপনে থাকতে পারেনা ,তাইনা ?

আবারঃ
              ইমাম আবু হানিফা রহ. তার আল-ফিকহুল আবসাতে বলেছেন-“: ﻗﻠﺖُ : ﺃﺭﺃﻳﺖَ ﻟﻮ ﻗﻴﻞ ﺃﻳﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ؟ ﻓﻘﺎﻝ ـ ﺃﻱ ﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ـ : ﻳﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﻻﻣﻜﺎﻥ ﻗﺒﻞ ﺃﻥ ﻳﺨﻠﻖ ﺍﻟﺨﻠﻖ، ﻭﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﺃﻳﻦﻭﻻ ﺧَﻠْﻖ ﻭﻻ ﺷﻰﺀ، ﻭﻫﻮ ﺧﺎﻟﻖ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ ”

অর্থ- “যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় আল্লাহ তায়ালা কোথায়? এর উত্তরে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, সৃষ্টির অস্তিত্বের পূর্বে, যখন কোন স্থানই ছিলো না, তখনও আল্লাহ তায়া’লা ছিলেন। আল্লাহ তায়া’লা তখনও ছিলেন যখন কোন সৃষ্টি ছিলো না, এমনকি ‘কোথায়’ বলার মতো স্থানও ছিলো না। সৃষ্টির একটি পরমাণুও যখন ছিলো না তখনও আল্লাহ তায়ালা ছিলেন। তিনিই সব কিছুর স্রষ্টা”

[সূত্রঃ আল-ফিকহুল আবসাত, পৃ.২০]।


অর্থাৎ এই হাদীসের মাধ্যমে এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে যে, আল্লা আসলে কোন একটা বায়বীয় পদার্থ টাইপের কিছু একটা ।কেননা কোন শক্ত  যৌগিগ মৌল বা কঠিন পদার্থ হলে তাকে অবস্থানের জন্য নিশ্চয় কোন নিদৃষ্ট স্থান এবং কালের প্রায়োজন ।অথচ এখানে সেটার বিপরীতে বলা হচ্ছে ।
যদিও কোন বায়বীয় পদার্থকে অবস্থানের জন্যও নিদৃষ্ট একটা অবস্থান বা পাত্রের প্রয়োজন ।
কেননা এখানে স্পস্টত এটাই বলা হচ্ছে যে, যেখানে সৃষ্টির একটা পরমানুও ছিলনা তখনও আল্লা ছিল  কিন্তু কোথায় ছিল সেটা কেউ জানতোনা ।

তো উপরোক্ত ( আকার সম্পর্কিত আলোচনার প্রেক্ষিতে) এখানে বলা যায় যে, যদি স্থান ও সময় দু’টোই আল্লাহ পাকের সৃষ্টি হবে তাহলে  তিনি সৃষ্টি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নন, বরং সকল সৃষ্টি তার নিয়ন্ত্রণে। অনেকে একথা মনে করে থাকে, আল্লাহ তায়ালাকে স্থান ও দিক থেকে পবিত্র বিশ্বাস করলে তো আল্লাহ কোথাও নেই এটা বলা হয়। এর দ্বারা আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বই না কি অস্বীকার করা হয়। যখন কোন স্থান বা দিকই ছিলো না, তখন আল্লাহ কোথায় ছিলেন? সে যদি এটা বিশ্বাস না করে যে, আল্লাহ তায়ালা স্থান ও দিক সৃষ্টির পূর্বে ছিলেন, তাহলে সে নিশ্চিত কাফের হয়ে যাবে। কোন সৃষ্টির অস্তিত্বের পূর্বে আল্লাহর অবস্থানের জন্য যখন কোন স্থানের প্রয়োজন হয়নি, তাহলে এখন কেন আল্লাহ তায়ালাকে স্থানের অনুগামী হতে  হবে?


ইমাম বায়হাক্বী রহঃ বলেন, নিশ্চয়ই আমাদের ও সকল মুসলমানদের জানা অত্যাবশ্যক যে, আমাদের প্রভু আকৃতি ও অবয়ববিশিষ্ট নহেন| কেননা, আকৃতি 'কেমন' এর চাহিদা রাখে| অথচ কেমন প্রশ্নটি আল্লাহ ও তাঁর গুণাবলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়| কোনো ক্ষেত্রে যদি আকৃত্রি প্রকাশের কথা আসে তা হবে তাঁর সিফাত বা গুণাবলি|
সূত্রঃ  ইমাম বায়হাকী, কিতাবুল
আসমা ওয়াল সিফাত, ২/৬৬ পৃঃ, হাদীস নং
৬৪১, সৌদিয়া, জেদ্দা

ইমাম আবুল মানসুর মাতুরীদি (রহঃ) বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা দেহ, কোন সৃষ্টির সাদৃশ্য, দেহ বা শরীর, আকার, আকৃতি, মাংসবহুশ, রং, বড় দেহবিশিষ্ট, বস্তু বা পদার্থ
এগুলো থেকে পবিত্র|

 ইমাম বুখারী রহঃ এর উস্তাদ বলেন,
 যে মহান আল্লাহকে সৃষ্টির সাথে তুলনা করবে সে কাফির|

তাফসীরে ইবনে কাসির বলা আছে, যারা আল্লাহকে আরশে সমাসীন বলেন তারা পথাভ্রষ্ট| বর্তমানে লা মাযহাবীরা বলেন,
আল্লাহ আরশে বসে আছেন| এটা ভ্রান্ত এবং কুফরী | তাদের কথামত আল্লাহ যদি আরশে বসে থাকেন, এখানে একটা প্রশ্ন থেকে যায়, যখন আরশ ছিল না, তখন আল্লাহ কোথায় ছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া আহলে হাদিসদের শায়খ ইবনে তাইমিয়ারও পক্ষে সম্ভব নয়|
কারণ আরশ হলো আল্লাহর সবচেয়ে বড় সৃষ্টি| আরশ যখন ছিলনা তখনও আল্লাহ ছিলেন, এখনও আছেন এবং থাকবেন|

ইমাম তাহাভী (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'য়ালাকে মানবীয় গুনাবলি হতে কনো গুণের দ্বারা গুণান্বিত করবে সে কাফির|

সূত্রঃ আকিদাতুত তাহাভী,
৪১ পৃঃ, মাকতাবাতুল ইসলামী, লেবানন|

ইমাম আবু হানিফা রহঃ বলেন, আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির কোনো বস্তুর মতো নন|

সূত্রঃ আল ফিকহুল আকবার, পৃঃ ১৪

তো এখানে যেসকল লেখক বা ইসলামী স্কলারদের লেখা উদ্ধৃতি করা হয়েছে তাদের কেউই যেনতেন বা হেনতেন ব্যক্তি নন।উনাদের করা তাফসীর এবং জ্ঞান দিয়েই বলা যায় মুসলিম জাহান ইসলামকে জানে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এদের তাফসীর এবং আলোচনাকে কোট হিসাবে ব্যবহার এবং মান্য করা হয় ।তাহলে কোনদিকে যাবেন বলেন?
উপরে আকার সম্পর্কিত যেসকল তথ্য প্রমান কুরান হাদীস থেকে সরাসরি দেখিয়েছি সেগুলিকে অস্বীকার করে এসমস্ত লেখকদের কথাকে মেনে নিলে সরাসরি আল্লাকে তথা আল্লার কুরান এবং মুহাম্মদের হাদিসকে ডিরেকটলি অস্বীকার করবেন ।
আবার এখানে আলোচ্য ব্যক্তিদের কথাকে অস্বীকার করলে ইসলামে ব্যবহৃত এসব স্কলারদের সমস্ত লেখা এবং ্তাফসীরই ব্যান করতে হবে ।আর উনাদের তাফসীর তথা ইসলামের অবদান গুলি বাদ দিলে ইসলামে পড়ে থাকবে মস্তবড় একটি শূন্য।
যাহোক, আরেক কদম সামনে এগিয়ে দেখা যাকঃ
আল্লাহ বলেন, তার কোন দৃষ্টান্ত তথা উপমা কিছুই নেই|
সূরাঃ  শু'রা আয়াতঃ ১১
فَاطِرُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَمِنَ الْأَنْعَامِ أَزْوَاجًا يَذْرَؤُكُمْ فِيهِ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ ﴿١١﴾
(১১) তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, তিনি তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন[1] এবং পশুদের মধ্য হতে সৃষ্টি করেছেন পশুদের জোড়া;[2] এভাবে তিনি ওতে তোমাদের বংশ বিস্তার করেন।[3] কোন কিছুই তাঁর  সদৃশ  নয়।[4] তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা ।৷ 

বিঃদ্রঃ  সদৃশ বলতে সিমিলিয়ার বা  সমজাতীয়,বা  ডুপ্লিকেট বা সগোত্র  বুঝায়।
ডিকশনারি দেখে নিতে পারেন। 


অর্থাৎ উপরে দেখানো স্কলারদের কথা যদি আমরা ছেড়ে দিয়ে কেবলমাত্র কুরান হাদীসের দিকেও ফিরে যাই বা কুরান হাদীসের কথাকেই আমরা মেনে নিই তাতেও খোদ কুরান থেকেই আবার সেই বিশ্বাসের প্রতি আমাদের বাধা দিচ্ছে ।
কেননা আমরা উপরে দীর্ঘ আলোচনায়  কুরান হাদীস থেকে নানান তথ্য প্রমানের মাধ্যমে দেখেছি বা জেনেছি যে, আল্লা নিজেই তার নানারকম দৃষ্টান্ত বা উপমা দিয়ে প্রমান করেছেন যে, তিনি আমাদের মতই একটা জীব বা দোপেয় মনুষ্য প্রানী যার চেহারা এবং আকৃতি ঠিক আমাদের মতই ।
অথচ সেই কুরানেরই সুরা শুরার ১১ নাম্বার আয়াতে তিনি বলছেন তার কোন দৃষ্টান্ত তথা উপমা কিছুই নেই ।
এটা কেমন কথা হয়ে গেলনা ?
এখানে এসে কি তাহলে সে নিজেই আকার প্রসঙ্গে দেখানো শতশত কুরানের আয়াত এবং শতশত হাদীসের বিপক্ষে আবার কথা বলছেনা?
তাহলে এখানে মানুষে কোনটাকে গ্রহন করবে আর কোনটাকে ত্যাগ করবে >
উপরেরটা গ্রহন করলে নিচেরটা ভুল বা মিথ্যা হিসাবে মেনে নিলে তো পুরো কুরানকে তথা সেই আল্লাকেই অস্বীকার করা হয়ে গেল ।তাহলে তো আর ঈমান বলে কিছু থাকবেনা ।
তাহলে যাবেন কোনদিকে ?
কোন স্রস্টায় কি এরকম মোনাফেকের মত একেকসময় একেকরকম কথা বলতে পারে ?
আর যে এরকম একেকসময় একেকরকম কথা বলতে পারে তার প্রতি কিভাবে ঈমান আনে ?
কিভাবে তাকে কোন স্রস্টা হিসাবে মান্য করে ?
কিভাবে তাকে সম্মান করে ??
তো পাঠক এতবড় একটি লেখা এত সময় ধরে ধৈর্য্যের সহিত পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।
তো পরিশেষে শুধুই এটুকই বলবো যে, লেখা আমার , ভাবনা আপনার।
কোনদিকে যাবেন , কোনটাতে ( ধর্মে) বিশ্বাস রাখবেন কি রাখবেননা সেটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত চিন্তার বিষয়।
 - ইমরান ।




No comments

Powered by Blogger.