Header Ads

Header ADS

মিরাজ একটি ঐতিহাসিক মিথ্যা

মিরাজ কি অদৌ কোন সত্য এবং বাস্তব বিষয় নাকি একটি ঐতিহাসিক মিথ্যা?


#মিরাজ', একটি ঐতিহাসিক মিথ্যা
=======================

প্রথমেই  মেরাজ নিয়ে লেখা আমার একটি কবিতা দিয়ে শুরু করা যাক ঃ



                            মেরাজ
================================
যতই বুঝাও মুমিন আমায় মুহাম্মদের ঐ মেরাজ ,
বিশ্বাস করবো কেমনে আমি, হয়েছি যে নারাজ।
গাধার পিঠে চড়ে নাকি দিছে পাড়ি, সাত সাতটি আসমান ,
এই যুগে এসে এসব বলে করোনা বিজ্ঞানের অসম্মান ।
গাধার পিঠে চড়ে যদি যেত আকাশ ঘোরা ,
বিশ্বকে আজ নেতৃত্ব দিতিস ,ওরে মুমিন তোরা ।
মেরাজে গিয়ে পাইলেন নবী পঞ্চাশ ওয়াক্তের নামাজ ,
এটা থেকেই বুঝি আমরা মুহাম্মদে কতবড় চাপাবাজ।
মুসার কথায় হলো নামাজ পঞ্চাশ থেকে পাচ,
এটা শুনেই বুঝ মুমিন তোমার আল্লার কত ধাচ?
মুহাম্মদ ছিল বড্ড লোভী ,ছিল মিথ্যাবাদী,
পার পেয়ে যেত সবটাই সে ,মেরাজের ঘটনা না বলিত যদি ।
কুরান নাকি আগেই লেখা ছিল লওহে মাহফুজে ,
তবে কেন নামাজের কথা সংযোজন করলো মেরাজে ?
মেরাজ ছিল স্বপ্নের মাঝে ,নয়তো এটা হাচা ,
মেরাজের কথা বলেই নবীর পিঠটি পেল বাচা ।
বিশ্বাস করে যারাই এসব তারাই হলো গাধা ,
সত্য কথা বলায় আমায় দিতে আসবে বাধা ।

প্রচলিত ইসলামী শরিয়াতে ‘‘মিরাজ’  বিশেষ গুরুত্ত্ব বহন করে ।
আল-মিরাজ ইসলামের ইতিহাসে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ মিরাজ এর সাথে ইসলামের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্তম্ভ 'সালাত' যুক্ত।
অথচ মজার বিষয় হচ্ছে এই অতীব গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি যাকে নবী মুহাম্মদের বিরাট মুজিজা মনে করা হয় তাঁর কোন উল্লেখই কোরআনে নেই । ইসরা আরবি শব্দটা কোরআনে পাওয়া যায় কিন্তু মিরাজ নয় । মজার বিষয় এই যে কোরআন অনুসারে ইসরা নবী মুসার জীবনে ঘটেছিল নবী মুহাম্মদের জীবনে নয় ।কেননা মুহাম্মদের মেরাজের ঘটনার কোন বর্ননা ই কুরানে নেই ।
অথচ মুহাম্মদের ব্যক্তিগত নানা বিষয় দিয়ে কুরান  ভরপূর ।
এই যেমনঃ মুহাম্মদ কাকে কাকে বিয়ে করতে পারবে, কার সাথে কখন সেক্স করবে , কখন কি করবে না করবে, কখন কাকে কিভাবে হত্যা করতে হবে সেসব বিষয়ে আয়াতের কমতি না হলেও এই মেরাজের মত অতীব গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়ে আয়াত পাঠাতে আল্লায় বেমালুম ভুলেই গেছিল ।


 যাহোক,   মিরাজ সম্পর্কে কমবেশ সকল মুসলিম ভাই-বোনেরাই অবগত আছেন। 
 ইসরা মানে ভূ -পথে যাত্রা আর মিরাজ মানে আকাশ পথে উর্ধ্ব যাত্রা ।
 সুন্নি ও শিয়া মতে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ইসরার মাধ্যমে মক্কা থেকে জেরুজালেম গিয়েছিলেন আর মিরাজের মাধ্যমে জেরুজালেম থেকে ঘোড়া সাদৃশ্য জন্তুতে চড়ে স্বর্গে আরোহণ করেছিলেন।
যেহেতু  ইসলামের দৃষ্টিতে মিরাজ খুবই অতীব গুরুত্বপূর্ন বিষয়,সেহেতু আমি আর দ্বিতীবার সেই ঘটনা এখানে উল্লেখ করে লেখা বড় করতে চাইনা। মিরাজ এর ঘটনা যদি 'বাই চ্যান্স' কল্পিত প্রমাণিত হয় তাহলে সারা বিশ্বের সকল মুসলিমদের আল্লাহ ও তাঁর নবী মোহাম্মদ(সাঃ) প্রতি অগাধ বিশ্বাস দ্বিতীয় বারের মতো মূল্যায়ন করতে হবে। মিরাজ কি আসলেই বিশুদ্ধ কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা নাকি সারা বিশ্বের সকল মুসলিম দের সাথে যুগ যুগ ধরে হয়ে আসা এক বিশাল প্রতারণার নাম?

কোরআন ১৭ঃ১ "পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যান্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।"

অর্থাৎ কোরআনে সরাসরি মিরাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে। আমরা সকলেই জানি যে মক্কা থেকে মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ মেরাজের রাঁতেই ঘটেছিলো। এছাড়া অনেক হাদীস এ সরাসরি মেরাজের ঘটনার উল্লেখ আছে (যেমনঃ Sahih Bukhari, Volume 5, Book 58, Number 227, Sahih Muslim, Book 001, Number 0309, Sahih Bukhari, Volume 5, Book 58, Number 228 and so on)

তাই কোনো ভাবেই কোনো মুসলিমের মিরাজ এর ঘটনা অস্বীকার করা উপায় নেই। কারণ ইসলামের সবচেয়ে অথেন্টিক সোর্স কোরান ও হাদীস এ মিরাজ সম্পর্কিত আলোচনা রয়েছে।
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আবূ যার (রাঃ) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমি মক্কায় থাকা অবস্থায় আমার গৃহের ছাদ উন্মুক্ত করা হঅতঃপর জিব্রীল (‘আঃ) অবতীর্ণ হয়ে আমার বক্ষ বিদীর্ণ করলেনআর তা যমযমের পানি দ্বারা ধৌত করলেনঅতঃপর হিকমাত ও ঈমানে ভর্তি একটি সোনার পাত্র নিয়ে আসলেন এবং তা আমার বুকের মধ্যে ঢেলে দিয়ে বন্ধ করে দিলেনঅতঃপর হাত ধরে আমাকে দুনিয়ার আকাশের দিকে নিয়ে চললেনপরে যখন দুনিয়ার আকাশে আসলাম জিব্রীল (‘আঃ) আসমানের রক্ষককে বললেনঃ দরজা খোলআসমানের রক্ষক বললেনঃ কে আপনি? জিব্রীল (‘আঃ) বললেনঃ আমি জিব্রীল (‘আঃ)(আকাশের রক্ষক) বললেনঃ আপনার সঙ্গে কেউ রয়েছেন কি? জিব্রীল বললেনঃ হাঁ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রয়েছেনঅতঃপর রক্ষক বললেনঃ তাকে কি ডাকা হয়েছে? জিব্রীল বললেনঃ হাঁঅতঃপর যখন আমাদের জন্য দুনিয়ার আসমানকে খুলে দেয়া হল আর আমরা দুনিয়ার আসমানে প্রবেশ করলাম তখন দেখি সেখানে এমন এক ব্যক্তি উপবিষ্ট রয়েছেন যার ডান পাশে অনেকগুলো মানুষের আকৃতি রয়েছে আর বাম পাশে রয়েছে অনেকগুলো মানুষের আকৃতিযখন তিনি ডান দিকে তাকাচ্ছেন হেসে উঠছেন আর যখন বাম দিকে তাকাচ্ছেন কাঁদছেনঅতঃপর তিনি বললেনঃ স্বাগতম ওহে সৎ নবী ও সৎ সন্তানআমি (রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) জিব্রীল (‘আঃ)-কে বললামঃ কে এই ব্যক্তি? তিনি জবাব দিলেনঃ ইনি হচ্ছেন আদম (‘আঃ)আর তাঁর ডানে বামে রয়েছে তাঁর সন্তানদের রূহতার মধ্যে ডান দিকের লোকেরা জান্নাতী আর বাম দিকের লোকেরা জাহান্নামীফলে তিনি যখন ডান দিকে তাকান তখন হাসেন আর যখন বাম দিকে তাকান তখন কাঁদেনঅতঃপর জিব্রীল (‘আঃ) আমাকে নিয়ে দ্বিতীয় আসমানে উঠলেনঅতঃপর তার রক্ষককে বললেনঃ দরজা খোলতখন এর রক্ষক প্রথম রক্ষকের মতই প্রশ্ন করলেনপরে দরজা খুলে দেয়া হলআনাস (রাঃ) বলেনঃ আবূ যার (রাঃ) উল্লেখ করেন যে, তিনি [রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] আসমানসমূহে আদম, ইদরীস, মূসা, ‘ঈসা এবং ইব্রাহীম (‘আলাইহিমুস সালাম)-কে পানকিন্তু আবূ যার (রাঃ) তাদের স্থানসমূহ নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননিতবে এতটুকু উল্লেখ করেছেন যে, তিনি আদম (‘আঃ)-কে দুনিয়ার আকাশে এবং ইব্রাহীম (‘আঃ)-কে ষষ্ঠ আসমানে পান

আনাস (রাঃ) বলেনঃ জিব্রীল (‘আঃ) যখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নিয়ে ইদরীস (‘আঃ) নিকট দিয়ে অতিক্রম করেন তখন ইদরীস (‘আঃ) বলেনঃ মারহাবা ওহে সৎ ভাই ও পুণ্যবান নবীআমি (রসূলুল্লাহ্‌) বললামঃ ইনি কে? জিব্রীল বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ইদরীস (‘আঃ)অতঃপর আমি মূসা (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করাকালে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে সৎ নবী ও পুণ্যবান ভাইআমি বললামঃ ইনি কে? জিব্রীল বললেনঃ ইনি মূসা (‘আঃ)অতঃপর আমি ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করাকালে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে সৎ নবী ও পুণ্যবান ভাইআমি বললামঃ ইনি কে? জিব্রীল বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ঈসা (‘আঃ)অতঃপর আমি ইব্রাহীম (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করলে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে পুণ্যবান নবী ও নেক সন্তানআমি বললামঃ ইনি কে? জিব্রীল (‘আঃ) বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ইব্রাহীম (‘আঃ)ইব্নু শিহাব বলেনঃ ইব্নু হায্(রহঃ) আমাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, ইব্নু আব্বাস ও আবূ হাব্বা আল-আনসারী উভয়ে বলতেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অতঃপর আমাকে আরো উপরে উঠানো হল অতঃপর এমন এক সমতল স্থানে এসে আমি উপনীত হই যেখানে আমি লেখার শব্দ শুনতে পাইইব্নু হায্ম ও আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) বলেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অতঃপর আল্লাহ আমার উম্মাতের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করে দেনঅতঃপর তা নিয়ে আমি ফিরে আসিঅবশেষে যখন মূসা (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করি তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা আপনার উম্মাতের উপর কি ফরয করেছেন? আমি বললামঃ পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেনতিনি বললেনঃ আপনি আপনার পালনকর্তার নিকট ফিরে যান, কেননা আপনার উম্মাত তা পালন করতে পারবে নাআমি ফিরে গেলামআল্লাহ তাআলা কিছু অংশ কমিয়ে দিলেনআমি মূসা (‘আঃ)-এর নিকট পুনরায় গেলাম আর বললামঃ কিছু অংশ কমিয়ে দিয়েছেনতিনি বললেনঃ আপনি পুনরায় আপনার রবের নিকট ফিরে যানকারণ আপনার উম্মাত এটিও আদায় করতে পারবে নাআমি ফিরে গেলামতখন আরো কিছু অংশ কমিয়ে দেয়া হলআবারো মূসা (‘আঃ)-এর নিকট গেলাম, এবারো তিনি বললেনঃ আপনি পুনরায় আপনার প্রতিপালকের নিকট যানকারণ আপনার উম্মত এটিও আদায় করতে সক্ষম হবে নাতখন আমি পুনরায় গেলাম, তখন আল্লাহ বললেনঃ এই পাঁচই (নেকির দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (বলে গণ্য হবে)আমার কথার কোন রদবদল হয় নাআমি পুনরায় মূসা (‘আঃ)-এর নিকট আসলে তিনি আমাকে আবারও বললেনঃ আপনার প্রতিপালকের নিকট পুনরায় যানআমি বললামঃ পুনরায় আমার প্রতিপালকের নিকট যেতে আমি লজ্জাবোধ করছিঅতঃপর জিব্রীল (‘আঃ) আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা [] পর্যন্ত নিয়ে গেলেনআর তখন তা বিভিন্ন রঙে আবৃত ছিল, যার তাৎপর্য আমি অবগত ছিলাম নাঅতঃপর আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হলে আমি দেখতে পেলাম যে, তাতে রয়েছে মুক্তোমালা আর তার মাটি হচ্ছে কস্তুরী


(১৬৩৬, ৩৩৪২; মুসলিম ১/৭৪, হাঃ ১৬৩, আহমাদ ২১১৯৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৩৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪২
)

[] সিদরাতুল মুনতাহাঃ উর্দ্ধাকাশে মালাকগণের চলাচলের শেষ সীমানায় একটি কুল বৃক্ষ আছে সেই কুল বৃক্ষটিকে সিদরাতুল মুনতাহা বলা হয়
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছদঃ ২৪২। মি’রাজে কিভাবে সালাত ফরজ হল?

৩৪২। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত,….. তারপর হাত ধরে আমাকে দুনিয়ার আসমানের দিকে নিয়ে চললেন। যখন দুনিয়ার আসমানে পৌঁছালাম, তখন জিবরীল (‘আ) আসমানের রক্ষক কে বললেনঃ দরযা খোল। তিনি বললেনঃ কে? উত্তর দিলেনঃ আমি জিবরীল, আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনার সঙ্গে আর কেউ আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আমার সঙ্গে মুহাম্মদ। তিনি আবার বললেনঃ তাঁকে কি আহবান করা হয়েছে? তিনি উত্তরে বললেনঃ হাঁ। তারপর আল্লাহ তা’আলা আমার উম্মতের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করে দিলেন। আমি এ নিয়ে প্রত্যাবর্তনকালে যখন মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আপনার উম্মতের উপর আল্লাহ কি ফরয করেছেন? আমি বললামঃ পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করেছেন।{১} তিনি বললেনঃ আপনি আপনার রবের কাছে ফিরে যান। কারণ আপনার উম্মত তা আদায় করতে সক্ষম হবে না। আমি ফিরে গেলাম। আল্লাহ পাক অর্ধেক কমিয়ে দিলেন।{২} আমি মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আবার গেলাম আর বললামঃ কিছু অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ আপনি আবার আপনার রবের কাছে যান। কারণ আপনার উম্মত এও আদায় করতে সক্ষম হবে না। আমি ফিরে গেলাম। তখন আরো অর্ধেক কমিয়ে দেওয়া হল।{৩} আবার মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে গেলাম, এবারো তিনি বললেনঃ আপনি আবার আপনার রবের কাছে যান। কারণ আপনার উম্মত এও আদায় করতে সক্ষম হবে না। তখন আমি আবার গেলাম, তখন আল্লাহ বললেনঃ এই পাঁচই (সওয়াবের দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (গণ্য হবে)

                 লক্ষ্যনীয়ঃ

{১} আল্লাহর সাথে ১ম সাক্ষাতে নবীকে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ দেওয়া হল ।

{২} আল্লাহর সাথে ২য় সাক্ষাতে নবীকে ৫০/২ =২৫ ওয়াক্ত নামাজ দেওয়া হল ।

{৩} আল্লাহর সাথে ৩য় সাক্ষাতে নবীকে ২৫/২ =১২.৫ ওয়াক্ত নামাজ দেওয়া হল । <<<<<<<<

{৪}আল্লাহর সাথে শেষ সাক্ষাতে নবীকে ০৫ ওয়াক্ত নামাজ দেওয়া হল ।

বুখারির  মিরাজের এই গল্পে সে যে ভাগের ভুল করে বসে আছে তা সে বুঝতেই পারেনি । ১২.৫ ওয়াক্ত নামাজ কি কখনো সম্ভব ?

মিরাজের রাতে আল্লাহ মানব জাতির জন্যে সব চেয়ে বড় উপহার 'সালাত' মোহাম্মদ কে উপহার দেন এবং সেই নামাজ প্রথমে ৫০ ওয়াক্ত করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে মোসেস বা মুসার বিচক্ষণতায় মোহাম্মদ বারবার আল্লাহ কাছে ফিরে গিয়ে কমাতে কমাতে শেষে ৫ ওয়াক্তে এসে আমাদের কাছে উপস্থিত হয়। ওযু+মসজিদে যাওয়া আসা ও নামাজ আদায় করা নিয়ে এক ওয়াক্ত নামাজের সময় হিসাব করা হয় তাহলে কমছে কম সময় প্রয়োজন ৩০ মিনিট। কোনো ওয়াক্তে বেশি কোনো ওয়াক্তে তার চেয়ে কম সময় লাগে। ধরে নিলাম আধা ঘন্টা। তাহলে ৫০ ওয়াকত নামাজ আদায় করতে সময় প্রয়োজন ৫০*৩০=১৫০০ মিনিট বা ২৫ ঘন্টা! অর্থাৎ আল্লাহর হিসেবে দিনের ২৪ ঘন্টার মাঝে মানুষ ২৫ ঘন্টাই নামাজ পড়ে কাঁটাবে। 

যাহোক, উক্ত প্যাসেজ থেকে কিছু প্রশ্নঃ
                                                            পয়েন্ট- (ক)
১। আল্লাহ কি জানতেন না ২৪ ঘন্টায় একদিন হয়?
২। আল্লাহ কি জানেন তার বান্দাদের খেতে হয়, ঘুমাতে হয়, কাজ করতে হয়, পরিবারের দেখভাল করতে হয়?
৩। আল্লাহ কি জানতেন না তার বান্দারা তার এই অদ্ভুত ও হাস্যকর রকমের বিশাল চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হবে?
৪। আল্লাহ কি এই পয়েন্টাই প্রুভ করেলেন না যে, মুসা আল্লার চাইতে বেশি বাস্তবিক জ্ঞানের অধিকারী?
৫। মুসা কি আল্লাহর চাতে বেশি বিজ্ঞ নয়?
৬। আল্লাহর দেয়া আদেশ মাথা পেতে নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে না এসে মোহাম্মদ কেনো মুসার উপদেশে আল্লাহর আদেশ কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলো?
৭। আল্লাহর সকল আদেশ যদি প্রথম থেকেই সর্বকালীন হয়, মুসা কিভাবে সেই আদেশ পরিবর্তন করলেন?

                                                          পয়েন্ট - (খ)

মোহাম্মদের ভাষ্য মতে তিনি মক্কা থেকে বোরাকে করে ২০০০ মাইল দূরে জেরুজালেম শহরের মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ করেন, সেখানে তিনি দুই রাকাত সালাত আদায় করেন যাতে তার সাথে সকল পয়গম্বরেরা (১২৪০০০) শরীক হয়েছিলো।(Sahih Muslim, Book 001, Number 0309)।
মেরাজ গমন করেছিলেন ৬২০ খ্রিষ্টাব - ৬২১ খ্রিষ্টাব্দ এই দুই বছরের কোনো এক বছরে। কিন্তু মসজিদুল আকসার একটা ঐতিহাসিক সত্য হলো  ব্যবিলনের সম্রাট দ্বিতীয় নেবুচ্যাডনেজার; সুলায়মান (আঃ) এর তৈরি স্থাপত্যগুলি ধ্বংস করেন (খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮৬) ,
 এরপরে এই স্থান রাজা হেরোড দ্য গ্রেটের সময় (২০৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে) সম্প্রসারিত হয়মসজিদটি একটি প্লাটফর্মের উপর অবস্থিত যা হেরোডের প্রকৌশলীরা বিভিন্ন স্থানগত অবস্থা কাটিয়ে উঠার জন্য নির্মাণ করেছিলেন সেকেন্ড টেম্পলের সময় বর্তমান মসজিদের স্থানটিতে রয়েল স্টোয়া ( প্রশাসনিক ভবন) ছিল
পরবর্তীতে  রোমানরা খিষ্টাব্দ ৭০ শতাব্দীতে জেরুজালেমের এই মসজিদ ধ্বংস করে দেয় এবং দেবতা জুপিটারের উপাসনার স্থানে পরিণত করেছিল৩১৫ খ্রিষ্টাব্দে  খ্রিষ্টানে রূপান্তরিত রোমান সম্রাজ্জ এটিকে ময়লা ফেলার স্থানে পরিণত করে এবং এসময় ইহুদীরাও এটিকে তাদের পবিত্র স্থান বলে মনে করত না  তারপর থেকে প্রায় ৫০০ বছর তা বন্ধ ছিলো এবং খেলাফায়ে রাশেদিনের যুগে ইসলামের দ্বিতীয় খালিফা ওমর জেরুজালেম দখলের পর মসজিদুল আকসা দ্বিতীয়বার পুনর্নিমাণ করেন ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে। অর্থাৎ নবীজি বোরাকের ফ্লাইট ধরার ৫২২ বছর আগে থেকেই মসজিদুল আকসা রোমান রা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছিলো। এগুলো সব ঐতিহাসিক তথ্য। গুগোল করে জেনে নিতে ৩-৪ মিনিট লাগবে (https://bit.ly/30RFxCA)

                                                   উক্ত পয়েন্ট থেকে প্রশ্নঃ

৮। যদি মসজিদুল আকসা ধ্বংসই হয়েছিলো তাহলে মোহাম্মদ স্বশরীরে সেখানে নামাজ আদায় করলেন কিভাবে?
৯। তখনকার সময়ে নির্মিত ছোট্ট একটা মসজিদে ১২৪০০০ পয়গম্বর একসাথে নামাজ আদায় করলো  কিভাবে ?
যেখানে এই আধুনিক যুগে এসে বৃহদাকারে পূনঃনির্মান এবং সংস্কারের পরেও একসাথে ৫০০০০ লোক আটানো বা জমায়েত করা সম্ভব হয়না ।
১০। জেরুজালেমে যেহেতু আগে থেকে কোনো মুসলিম ছিলো না সেখানে মুসলিম দের প্রার্থনার জন্যে মসজিদ কিভাবে এলো? আর যদি সেটা ইহুদীদের টেম্পেল হয় তাহলে কোরানে সেটা মসজিদ বলার কারণ কি? টেম্পেলে নিশ্চই নামাজ আদায় করা সম্ভব নয়?
উইকিতে চেক করে নিতে পারেন যেখানে টেম্পেল হিসাবেই বলা হয়েছে ।
টেম্পেল মানে হচ্ছে মন্দির বা গীর্জা টাইপের যেটা হয়ে থাকে (https://bit.ly/30RFxCA)
            পয়েন্ট - (গ)

নবী মোহাম্মদ নামাজ নিয়ে ফেরার পথে জিব্রাইল তাকে জান্নাত-জাহান্নাম ঘুরিয়ে দেখান। তিনি জাহান্নামে বিভিন্ন নারী পুরুষ ও তাদের প্রতি হওয়া শাস্তি ও শাস্তির বিভিন্ন কারণ বর্ণনা করেন অসংখ্য হাদিসে। এক হাদীসে বর্ণিত আছে নবী মোহাম্মদ জাহান্নামে অপরাধীদের মাঝে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক দেখেছিলেন নারী।
                                          এই পয়েন্ট থেকে প্রশ্নঃ

১১। কেয়ামতের পর মানুষের হিসাব নিকাশ হবে তারপরেই সকল মানুষ জান্নাত/জাহান্নে যাবে। কেয়ামতের আগেই কিভাবে কিছুলোক জাহান্নামে প্রবেশ করেছে?

                                                        পয়েন্ট -(ঘ)

কোনো একটা ঘটনা ঘটে থাকলে তার সত্যতা প্রমাণে কিছু দলিল বা চাক্ষুস প্রমাণ চাই। না হয় ঘটনাটি নিতান্তই বানোয়াট ও অবিশ্বাসযোগ্য হলে মানুষ সেটা বিশ্বাস করবে না। তাহলে মোহাম্মদের মেরাজ গমনের কি কোনো চাক্ষুস প্রমাণ আছে?
 আছে।
                   চলুন দেখি কি বলে সেঃ

আবু তালিবের কন্যা উম্মে হানি মেরাজ সম্পর্কে বলেনঃ
"...আল্লাহর নবী কোনো ভ্রমণে যান নি বরং তিনি আমার ঘরেই ছিলেন। তিনি শেষ রাতের নামাজের পর আমার ঘরেই ঘুমিয়ে পড়েন এবং কিছু সময় পর তিনি জেগে উঠে বলেন, "ও উম্মেহানি‌, আমি জেরুজালেম গিয়েছিলাম" তারপর তিনি বাহিরে যাওয়ার জন্যে পা বাড়াতে আমি তার পোষাক ধরে টান দেই এবং তাকে বলি, "ও মোহাম্মদ, মানুষ কে এ সম্পর্কে বলোনা কারণ মানুষ জেনে যাবে তুমি মিথ্যা বলছ এবং তারা তোমাকে নিয়ে উপহাস করবে।" তখন মোহাম্মদ বলেন, "আল্লাহর কছম আমি মানুষ কে তা বলবো"...
                              (Ibn Ishaq, Sirat Rasulullah, p.184)

এ হলো ইসলামের সবচেয়ে অথেন্টিক সীরা 'ইবনে ইসাক' এ উল্লেখিত উম্মে হানির সাক্ষ। উম্মেহানী কি ইসলাম গ্রহণ করেছিল? চাক্ষুস সাক্ষি যখন বলছে মোহাম্মদ ঘরেই ছিলো, তখন মানুষ কি মোহাম্মদের কথা বিশ্বাস করবে? করবে না। এবং সেটাই ঘটেছে। পড়ুন,

                               Ibn Ishaq, Sirat Rasulullah, p. 183:

"...অনেক মুসলিম ইসলাম ত্যাগ করে(উক্ত ঘটনা শোনার পর)। তাদের মাঝে কিছু লোক আবু বকরের নিকট যায় এবং তাকে প্রশ্ন করে, "এখন তুমি তোমার বন্ধু সম্পর্কে কি ভাবছো? সে দাবী করছে সে গতরাতে জেরুজালেম গিয়ে সেখানে প্রার্থনা করে আবার রাতেই মক্কায় ফিরে এসেছে..."

সকল যুগেই বিচক্ষণ মানুষ ছিলো যারা অন্যের গাঁজাখুরি গল্প বিশ্বাস করেনি। তাই তারা ইসলাম ত্যাগ করেছিলো এবং এযুগেও হাজার হাজার বিচক্ষণ ও উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা ইসলাম ত্যাগ করছে। আমি মনে করি ইসলাম ত্যাগ করার জন্যে শুধু মাত্র উক্ত "মেরাজ" শব্দটাই যথেষ্ঠ।

  ইবনে ইসহাকের সীরাতে রাসুলুল্লাহ ছাড়াও এবার আমরা দেখবো মুহাম্মদের মেরাজের ব্যাপারে কুরান হাদীস কি বলেঃ

                 সুরা বনি ইসরাইলের ১ম আয়াত দিয়ে শুরু করা যাকঃ

“পবিত্র ও মহীয়ান তিনি যিনি তাঁর বান্দাহকে রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছেন মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে আমি কল্যাণময় করেছি। তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (১৭:১)

উপরের আয়াতে কোন নাম না নিয়ে এনে বলা হয়েছে ‘ আমার বান্দা’ । এর ঠিক পরের আয়াতেই সেই বান্দার নাম দেওয়া হয়েছে ।

“এবং আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তা বনী ইসরাঈলের জন্য পথনির্দেশ বানিয়েছি। যেন তোমরা আমাকে ছাড়া কোন কর্মবিধায়ক না বানাও। ” (১৭:২)

আয়াত ১৭:২ এ মুসা নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে । লক্ষ্যনিয় যে সুরার নাম করন করা হয়েছে সুরা বনি ইসরাইল – যা কিনা নবী মুসার কওম বা যাদেরকে ইয়াহুদি বলা হয়ে থাকে। তাই ১৭:১ এ ইসরা সম্পাদনকারী বান্দা বনি ইসরাইলের নবী হওয়াই যুক্তিযুক্ত ।

এবার দেখা যাক রাত্রিকালে ভ্রমণ বা আরবি শব্দ ইসরা কোরআনে কার সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে ।

ক্রিয়া পদ  ইসরা কোরআনে ৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে ।
 ১৭:১ তে ১ বার যা আমরা উপরে দেখেছি , ২ বার তা নবী লুতের ক্ষেত্রে (১১:১৮ , ১৫:৬৫ )
 এবং ৩ বার নবী মুসার ক্ষেত্রে (২০:৭৭, ২৬:৫২ , ৪৪:২৩ ) নবী মুহাম্মদের ক্ষেত্রে ইসরার কোন রেফারেন্স কোরআনের কোথাও নেই ।

নবীর মুসার ভ্রমণের কথা কোরআনের বহু জায়গাতে বিষদ ভাবে বর্ননা করা হয়েছে (২৮:২৯-৩২, ২০:৯-২৩ , ২৭:৭-১২)

তাই নবী মুসার রাত্রি কালে ভ্রমনের স্পষ্ট বর্ননা এর সাথে ১৭:১ ও ১৭:২ এর সরল সম্পর্ক খুজে পেতে কোন সমস্যা হয়না ।

উপরন্তু নীচের দুইটি আয়াতে  আল্লাহ্‌ বলেছেন যে যদি নবী মুহাম্মদ চান যে তিনি আসমানে আরোহণ করবেন তবে তা চাওয়া তাঁর জন্য অনুচিত । Technically এই দুইটি আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মিরাজে গমন করেননি ।

১-“ আর যদি তাদের উপেক্ষা তোমার উপর কঠিন মনে হয়, তাহলে যদি তুমি পার যমীনে কোন সুড়ঙ্গ অথবা আসমানে কোন সিঁড়ি অনুসন্ধান করতে, অতঃপর তাদের কাছে কোন নিদর্শন নিয়ে আসতে (তবে কর)। যদি আল্লাহ চাইতেন তিনি অবশ্যই তাদেরকে হিদায়াতের উপর একত্র করতেন। সুতরাং তুমি কখনো মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। ” ( ৬:৩৫)

২- “অথবা তোমার একটি স্বর্ণ নির্মিত গৃহ হবে, অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে, কিন্তু তোমার আকাশে আরোহণ আমরা তখনও বিশ্বাস করবনা যতক্ষণ না তুমি আমাদের প্রতি এক কিতাব অবতীর্ণ করবে যা আমরা পাঠ করব। বলঃ পবিত্র আমার মহান রাব্ব! আমিতো শুধু একজন মানুষ, একজন রাসূল।” (১৭:৯৩)

দ্বিতীয়তঃ মিরাজের কল্প কাহিনী অনুসারে নবী মুহাম্মদ জান্নাত আর জাহান্নাম সব দেখে এসেছেন । কিন্তু কোরআনে মহান আল্লাহ্‌ জান্নাতকে গায়েব  বা অদেখা বস্তু বলেছেন (১৯:৬১)
 আর নবী মুহাম্মদের গায়েবের জ্ঞান নেই বলে নিশ্চিত করেছেন (৬:৫০) । তাই যুক্তিগত ভাবে কোরআন মতে নবী কোন ভাবেই জান্নাত দেখেননি ।

বাকী থাকল ১৭:১ এ বর্নিত ‘আল মাসজিদ আল হারাম ‘ ও ‘আল মাসজিদ আল আকসা’ এর ব্যপারটা । নবী মুসার সাথে এই দুই মাসজিদের সম্পর্ক কি ?

কোরআনে নবী মুসার ইসরা কোথায় থেকে শুরু হয়েছে ও কোথায় শেষ হয়েছে তা খুব পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে ।

নবী মুসা মিশর থেকে পলায়ন করার পরে মিদিওয়ানে আসেন । (২৮:২২)

আমরা জানি যে মিদিয়ান আরব হেজাযের তাবুকে অবস্থিত । তাই নবী মুসা তাঁর জীবদ্দশাতে যে আরব ভূমিতে এসেছিলেন তাঁর স্বাক্ষ কোরআন বহন করে ।

আরো মজার বিষয় এই যে , নবী মুসা আরব ভূমিতে ৮/১০ হজ্জের সমকাল সময় অবস্থান করেছিলেন বলে কোরআন সাক্ষ দেয় (২৮:২৭ ) । আয়াতে বছর বা সাল নয় বরং ( থামানিয়া হিজাজিন) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে । তাই নবী মুসা আরব ভূমিতে এসে ৮ থেকে ১০ বার হজ্জ করেছেন বলে প্রমাণিত হয় । সংগত কারনেই উনাকে হজ্জ করতে আল মাসজিদুল হারামেই যেতে হবে ।

২৮:২৯ এ জানা যায় যে নবী মুসা ৮/১০ হজ্জের মেয়াদ শেষ করে তাঁর পরিবার সহ ইসরা শুরু করে , তাই তাঁর ভ্রমণ যে আল মাসজিদুল আল হারাম থেকে শুরু হতে পারে তা যুক্তিযুক্ত ও কোরআনে পাওয়া উপাত্তের সাথে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ন ।

ইসরা শুরু করার পর নবী মুসা যে যে জায়গাতে গিয়েছিলেন তাঁর নাম কোরআনে পাওয়া যায় । সেগুলো হল তুর পর্বত ( ২৮:২৯ ) , তোয়া উপত্যকা (২০:১২ , ৭৯:১৬ ) , মিশর (১০:৮৭) ।

মিশরে অবস্থিত তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকাকে পবিত্র ও বরকত ময়  বলা হয়েছে ( ২৮:৩০ , ২০:১২ , ৭৯:১৬) ।

তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকাতে নবী মুসাকে আল্লাহর তরফ থেকে নিদর্শন দেখানো হয়েছে (২৮:৩১ , ২৮:৩২ ) ।

১৭:১ এ উল্লেখিত আল মাসজিদ আল আকসা এর আশেপাশের স্থানকে কে বরকতময় করা হয়েছে তা তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকার সাথে মিলে যায় ।

১৭:১ ইসরাকারিকে নিদর্শন দেখানো হবে তা নবী মুসার সাথে মিলে যায় ।

ধাঁধার শেষ যে অংশটা বাকী থাকল তা হল , ১৭:১ এর মাসজিদুল আকসা কোথা থেকে আসল ?

মাসজিদ হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে সালাত ( নামাজ) আদায় করা হয় । কোরআনের ১০:৮৭ তে  আল্লাহ্‌ নবী মুসা , হারুন ও তাঁর অনুসারীদেরকে মিশরে তাদের ঘর সমূহকে ক্বেবলা তে রূপান্তরিত করে সালাত আদায়ের জন্য হুকুম দেন ।
৭:১৪৪ থেকে আমরা দেখতে পাই যে নবী মুসা ও তাঁর অনুসারীরা তুর পর্বতেই অবস্থান করছিল এবং সেখানেই সালাতের জন্য মাসজিদ বানিয়েছিল যা ১০:৮৭ তে বলা হয়েছে । এই মসজিদের নাম আল আকসা ।

তাই কোরআন কে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে , নবী মুহাম্মদের নামে যে ইসরা বা মিরাজের কাহিনী মুসলিম সমাজে প্রচলিত আছে তার কোন ভিত্তি নাই । বরঞ্চ ১৭:১ এর ইসরা কোরআন মতে নবী মুসার ইসরাকেই শক্তভাবে সমর্থন করে ।

এছাড়াও  মিরাজের হাদিসে গণ্ডগোল-- মিরাজ সংক্রান্ত ৫ টি সহিহ হাদিসে ৫ টি স্ববিরোধী বর্ননা যা কোন সুস্থ মস্তিস্কে বিশ্বাস করা যায়নাঃ
-----------------------------------------------------------------------------
উৎসঃ
১ম হাদিসঃ সহিহ বুখারি ৮/৩৪৯ (https://bit.ly/2utMEoG)
২য় হাদিসঃ সহিহ বুখারি ১৯৮৮/২৯৮০(
৩য় হাদিসঃ সহিহ বুখারি ২১৫১/৩৬০৮
৪র্থ হাদিসঃ সহিহ মুসলিম ৭৩/৩০৮
৫ম হাদিসঃ সহিহ মুসলিম ৭৩/৩১২

                                        পয়েন্ট (ঙ)

                                          মেরাজ_ঘটনায়_বিজ্ঞান_খোজা।

এতসব গোজামিল পাওয়ার পরেও অনেকে দেখি আবার মেরাজের মাঝে বিজ্ঞান খুজে পায় এবং তারা মেরাজকে বিজ্ঞানের আলোকে আইন স্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের সাথে  প্রমান করার চেষ্টা করে থাকে ।
তাই এই বিষয়েঅ তাদের মিথ্যচারটাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাইঃ
মুহাম্মদ কাউকে কিছু না জানিয়ে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে আল্লাহর সকাশে যান।বোরাক নামক এক ডানাওয়ালা গাধা সদৃশ জন্তুর পিঠে চড়ে  .

যাহোক, মক্কা  থেকে প্রথমে জেরুজালেম যান , সেখানে বায়তুল মোকাদ্দসে ১,২৪,০০০ পয়গম্বরের  সাথে  ২ রাকাত নামাজ পড়েন ,যার ইমামতি করেন তিনি নিজে ( যদিও এখানে প্রশ্ন থেকে যায় যে, তিনি আল্লার কাছে পৌছানোর পরেই নামাজের অনুমতি পেয়েছিলেন,তাহলে সেখানে যাওয়ার আগেই তিনি কিভাবে ,কিসের নামাজ আদায় করলেন)
 এরপর সেখান থেকে সরাসরি বিভিন্ন আসমান পর্যবেক্ষন শেষে আল্লাহর সাথে দেখা করেন ,জান্নাত,জাহান্নাম দেখে,  নানা কথা বার্তা বলে তারপর ফিরে আসেন। ফিরে এসে তিনি দেখেন আল্লাহর আরশে যাওয়ার আগে ওজু করার জন্যে যে পানি তিনি ব্যবহার করেছিলেন , তা তখনও গড়িয়ে পড়ছে।
উক্ত বিষয়টাকে বিভিন্ন ইসলামী বিজ্ঞানী( যারা কোরান হাদিসে বিজ্ঞান খোজে) আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের একটা প্রমান হিসাবে দাখিল করে , মিরাজের এই ঘটনাকে একটা অলৌকিক ঘটনা হিসাবে প্রচার করে আসছে দীর্ঘকাল।

আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব বলে কোন বস্তু যদি আলোর গতির সমান গতিতে ভ্রমন করে তাহলে তার কাছে সময় থেমে যাবে। অর্থাৎ কোন নভোচারী যদি আলোর গতিতে আমাদের পার্শ্ববর্তী নক্ষত্র প্রক্সিমা সেঞ্চুরিতে যান ও আবার দুনিয়াতে ফিরে আসেন , তাহলে তিনি দেখবেন দুনিয়াতে ৮ বছর সময় পার হয়ে গেছে ,অথচ তার নিজের কাছে মনে হবে , তিনি তো এইমাত্র ভ্রমনে বের হয়েছিলেন আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড বা মিনিট তিনি পার করেছেন। কারন পৃথিবী থেকে প্রক্সিমা সেঞ্চুরি হলো ৪ আলোকবর্ষ দুরে। অর্থাৎ তার কাছে সময় থেমে ছিল , কিন্তু দুনিয়াতে সময় থেমে থাকে নি। সেহেতু দুনিয়াতে ৪+৪=৮ বছর পার হয়ে গেলেও , তার কাছে সময় থেমে ছিল বলেই তার কাছে এই ভ্রমনটার সময়কাল মনে হবে মাত্র কয়টা মুহুর্ত।
এখন ধরা যাক , আল্লাহর আরশ হলো ১০০০ আলোক বর্ষ দুরে। যদিও বাস্তবে সে কত আলোক বর্ষ দুরে থাকে , তা কেউ জানে না। সাত আসমানের পর তার আরশ , তার দুরত্বের কোন সীমা পরিসীমা আছে ? সুতরাং যদি মুহাম্মদ আলোর গতিতে আরশের দিকে রওনা হন ও শুধুমাত্র আল্লাহর সাথে দেখা করে ফিরে আসেন , তাহলে তিনি দুনিয়াতে ফিরে এসে দেখবেন দুনিয়াতে ১০০০+১০০০= ২০০০ বছর পার হয়ে গেছে , কিন্তু তার কাছে মনে হবে মাত্র কয়টা মুহুর্ত পার হয়েছে। আইনস্টাইনের তত্ত্ব আরো বলে, কোন বাস্তব বস্তু বা কনিকা আলোর গতি বা তার চাইতে বেশী গতিতে চলতে পারে না। যদি তা চলতে চায় , তাহলে সেই বস্তু বা কনিকার ভর অসীম হয়ে যাবে , যার ফলে তার পক্ষে চলাটাই সম্ভব হবে না। মুহাম্মদ যেহেতু একজন পার্থিব মানুষ , তাই তার পক্ষে কোন মতেই আলোর গতি বা তার চাইতে বেশী গতিতে চলা সম্ভব না। সুতরাং তাকে অবশ্যই আলোর গতির চাইতে কিছু কম গতিতে চলতে হবে আর তাহলেই তার মত পার্থিব কোন ব্যাক্তির পক্ষে মহাকাশ ভ্রমন সম্ভব হবে। তার পরেও যুক্তির খাতিরে ধরে নেয়া যাক , তিনি আলোর গতিতেই চলেছিলেন আর ফিরেও আসেন আলোর গতিতে। এটা হলেও তিনি দুনিয়াতে এসে দেখবেন যে দুনিয়াতে ২০০০ বছর পার হয়ে গেছে, যদি আইন স্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের সূত্র সত্য ধরা হয়। কিন্তু তিনি আল্লাহর কাছ থেকে ফিরে এসে দাবী করলেন , তিনি যাত্রার আগে যে ওজূ করেছিলেন , তা তখনও গড়িয়ে পড়ছে। তার মানে দুনিয়াতেই মাত্র কয়েক মুহুর্ত পার হয়েছে। যা আপেক্ষিক তত্ত্বের বিপরীত ও অবাস্তব ধারনা। তার দাবী সত্য হবে , যদি দুনিয়াটাই সহ তিনি আল্লাহর আরশে যান। তাহলে দুনিয়াটাও আলোর গতিতে চলবে ও ফলে তাতে সময় স্থির থাকবে।
বলাবাহুল্য, মুহাম্মদ একাই আল্লাহর সাথে দেখা করতে গেছিলেন, দুনিয়াটা তার সাথে যায় নি।
সুতরাং এমতাবস্থায় , মুহাম্মদের আল্লাহর সাথে মোলাকাতের এ ঘটনা কিভাবে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সত্য হতে পারে ? কিন্তু কথিত ইসলামী বিজ্ঞানীরা এসবের ধার ধারে না। তারা মনে হয় শুধু শুনেছে আপেক্ষিতাবাদ বলে একটা তত্ত্ব আছে , আর শুনেছে এ তত্ত্ব বলে সময় নাকি থেমে যায়। কিন্তু কোনদিন এই তত্ত্বটা ভালমত পড়ে বোঝার চেষ্টা করে নি ,আসলে বিষয়টা কি। বিষয়টা আদৌ না জেনে ,না বুঝে ( সেটা বোঝা সম্ভবও না যদি তারা কোরান থেকে বিজ্ঞান শেখে)
তারা দিব্যি ওয়াজে ,ইসলামী টিভি তে , লম্বা চওড়া বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছে ,আর মুসলমানরাও তাদেরকে বাহবা দিয়ে নিজেদের ইমান শক্ত করছে আর নিজেরা গমন করছে অজ্ঞতার অতল গর্ভে।
এভাবেই দুনিয়ার গোটা মুসলমান জাতি দিনে দিনে অজ্ঞতা ও অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে , সেটা কিন্তু তারা বুঝতেও পারছে না। তার পরেও তারা দৃঢ় পণ করেছে ,  তারা বিজ্ঞান কিতাব থেকে নয় , বরং কোরান হাদিস থেকে শিখবে।


যাইহোক, লেখা আর বর্ধিত না করি। উক্ত প্রশ্ন গুলোর একটার উত্তর ও যদি মোহাম্মদের বিপক্ষে যায় তাহলে মেরাজ মিথ্যা প্রমাণিত হবে, আর মেরাজ মিথ্যা মানে মোহাম্মদ+কোরান মিথ্যা। আর এ দুটো মিথ্যা মানে আল্লাহই মিথ্যা। অর্থাৎ ইসলাম একটি ভ্রান্ত ধারনা ও মিথ্যা বানোয়াট গল্পের সমষ্টি বিহীন আর কিছুই নয়।  আর একজন আল্লার পয়গম্বর বা  নবী দাবীকৃত ব্যক্তির  এরকম একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে মিথ্যাচার প্রমানিত হওয়া মানে স্রেফ আল্লা ,কুরান এবং মুহাম্মদ একজন নবী হিসাবে মিথ্যা প্রমানিত হওয়া ।
তো পাঠক লেখা আমার ,ভাবনা আপনার ।
ভেবে দেখুনতো ,এরপরেও কি মেরাজকে সত্যজ্ঞানে বিশ্বাস করবেন?
----------------------------------------------------------------------
মিরাজ', একটি ঐতিহাসিক মিথ্যা- প্রমানিত)
 - ইমরান ।


8 comments:

  1. আলোর গতিতে চললে কেন সময় থেমে যায় ?

    ReplyDelete
  2. গড়িয়ে পড়ার হাদিস সহ মিরাজ সম্পর্কিত অনেক হাদিসই বাজারি বক্তা কর্তৃক ছড়ানো, সমালোচনার আগে ইসলামী ন্যারেশন মূল্যায়নের মূলনীতি সম্পর্কে সজাগ হইতে হবে না হইলে এত কষ্ট কইরা এত লিইক্ষা সময় লস করনের মানে নাই। বাংলাতে এই ব্যাপারে সবচেয়ে জোশ কিতাব - "হাদিসের নামে জালিয়াতি- প্রচলিত মিথ্যা হাদিস ও ভিত্তিহীন কথা"-ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

    ReplyDelete
  3. ইসলাম নিয়ে কটুক্তি 😠😠খানকির বাচ্চরা

    ReplyDelete
    Replies
    1. Vai,doia kore eder glai dea nijer dhormo haraben na. Era munafik kafir. Allah eder hedaet dan korur.Amre prio nobi kokhono karo sathe kharap babohar korenni.Eder sasthi dera jonno allahoi jothesto jini bicher dinier malik.

      Delete
  4. মিরাজের ঘঠনা যারা বিশ্বাস করে না তারে স্পষ্ঠ কাফেরের বাচ্চা কাফের ।
    খানকি মাগির পোলা ইমরান। তর জন্ম দৌলদিয়ার নটি পল্লিতে । খানকির পোলা সামনে পেনা 8 ইঞ্চী ধন তর মুখে ঢুকিয়ে দিতাম। তর মায়ের গলায় বেধে তর বোনকে চুদি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. Vai,doia kore eder glai dea nijer dhormo haraben na. Era munafik kafir. Allah eder hedaet dan korur.Amre prio nobi kokhono karo sathe kharap babohar korenni.Eder sasthi dera jonno allahoi jothesto jini bicher dinier malik.

      Delete
  5. মেরাজ হলো "আরদা ভিরাজ" এর কাহিনী এর নকল

    ReplyDelete
  6. মুসলমানদের ইমান -আকীদা নষ্ট করার ইহুদি চক্রান্ত বলে আমার কাছে প্রতীয়মান

    ReplyDelete

Powered by Blogger.